নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে লাইটার জাহাজ এমভি রূপসি-৯ এর ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এম এল আফছার উদ্দিন ডুবির ঘটনায় আরো ১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তার নাম পরিচয় জানা যায়নি। এর আগে ৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৭ বছরের এক শিশু (বালিকা), ৩৫ বছর বয়সী এক নারী ও আরিফা আক্তার (২৫), তার ১৮ মাসের ছেলে শিশু সাফায়েত ও জয়নাল ভূইয়া (৬০) নামে এক বৃদ্ধ ও অজ্ঞাত এক পুরুষের লাশ রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম।
রোববার (২০ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলার চর সৈয়দপুরের আলামিন নগরের ব্রিজের কাছে কয়লা ঘাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। লঞ্চডুবির ঘটনায় নিখোঁজের সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, অন্তত ২০ জন যাত্রী এখনও নিখোঁজ রয়েছেন৷
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মুন্সীগঞ্জগামী লঞ্চটিকে একটি লাইটার জাহাজ (কার্গো জাহাজ) ঠেলে প্রায় একশত ফুট নিয়ে গিয়ে ডুবিয়ে দেয়। এসময় যাত্রীদের চিৎকারের ঘটনাস্থলের বাতাস ভারী হয়ে উঠে। মুহুর্তেই অনেকে প্রাণ রক্ষায় নদীতে ঝাপিয়ে পড়ে। কিন্তু বাকী যাত্রীদের নিয়ে লঞ্চ মাঝ নদীতে ডুবে যায়।
অনেককেই সাঁতরিয়ে তীরে উঠতে দেখা গেছে। তবে বেশ কিছু যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে। খবর পেয়ে কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনীর ডুবরী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। এ ঘটনায় অন্তত ২০ জন যাত্রী এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে সাঁতরে তীরে উঠে বেঁচে যাওয়া কয়েকজন যাত্রী জানান, দুপুর ২ টা ২০ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ লিঞ্চ টার্মিনাল থেকে প্রায় অর্ধশত যাত্রী নিয়ে মাঝারি আকারের লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। লঞ্চটি সদর উপজেলার সৈয়দপুর কয়লাঘাট এলাকায় পৌঁছলে পেছন থেকে এম ভি রূপসী নামে একটি পণ্যবাহি কার্গো পর পর কয়েকবার ধাক্কা দিলে লঞ্চটি নদীর মাঝখানে ডুবে যায়।
এ সময় ১০/১২জন যাত্রী নদীতে লাফিয়ে পড়ে বেঁচে গেলেও অধিকাংশ যাত্রী নিখোঁজ হন। তাদের সন্ধানে নদীর দুই তীরে স্বজনরা এসে আহাজারি করতে থাকেন। কয়েক হাজার নারী পুরুষ এখন নদীর দুই তীরে অবস্থান করছেন।
নারায়ণগঞ্জ নৌ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তানজীর জানান, বেলা দুইটা কিংবা আড়াইটার দিকে বন্দর থানার আল আমিন নগর ও সৈয়দপুরের মাঝামাঝি কয়লাঘাট এলাকায় নির্মিতব্য নাসিম ওসমান ব্রিজের কাছে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী একটি লঞ্চ ডুবে যায়। এরপর উদ্ধার অভিযানে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, মরদেহ আমাদের হেফাজতে রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ জুলাই শীতলক্ষ্যা নদীর একই স্থানে এক কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটে৷ এতে নারী ও শিশুসহ ৩৪ জনের মৃত্যু হয়৷