নারায়ণগঞ্জ সদর থানা আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের বিরুদ্ধে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই’র বাসভবনে গিয়ে বিশৃঙ্খলা করার অভিযোগ উঠেছে। কোন আলোচনা ছাড়াই ৪০/৫০ জন লোক নিয়ে হাজির হন আব্দুল হাই এর বাসায়।
এ ঘটনার পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পরিবারের সদস্যরা। আব্দুল হাইয়ের ঘনিষ্ঠ নেতাকর্মীদের দাবি মূলত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে ভয় দেখাতে এই কাজ করেছেন তিনি।
অভিযুক্ত আল-মামুন নারায়ণগঞ্জ সদর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সম্প্রতি গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার অভিযোগে তাকে বহিস্কার করা হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাইর বড় ছেলে মো. তানভীর হাই জানান, আল মামুনের নেতৃত্বে সকাল সাড়ে ১০টায় ৩০-৪০ জন লোক বাসায় প্রবেশ করতে চায়। বাবা বাসায় নেই জানিয়ে, দাঁড়োয়ান প্রবেশে বাঁধা দেয়। কিন্তু তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে বাসায় প্রবেশ করে তারা। কলিংবেলের সাথে দরজায় জোরে জোরে ধাক্কা দিচ্ছে।
এ সময় পুরো পরিবারের সদস্যদের মাঝে একটি আতঙ্ক দেখা যায়। দরজা খুলতেই একজন লম্বা লোক জিজ্ঞাসা করলো, সভাপতি মহোদয় কোথায়? পরিচয় জানতে চাইলে বলেন, আমাদের নেতা কথা বলবে। কে নেতা জানতে চাইলে, আল-মামুন চাচাকে দেখিয়ে দেয়। পরে তিনি দেয়ালের পাশ থেকে সামনে এসে কথা বলে। বাবা বাসায় নেই জানাতেই তিনি লোকজন নিয়ে চলে যান।
মো. তানভীর হাই বলেন, আল মামুন চাচা কোন ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে লোকজনের সাথে আমাদের বাসায় আসছে বলে আমার মনে হয় না। তাই আমাদের পুরো পরিবারই শঙ্কার মধ্যে দিনপার করছে। নেতাকর্মীদের কাছে একটাই দাবি, এটার ব্যাপারে প্রশাসনকে অবগত করা হোক এবং আল-মামুন কাকার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে বাড়ির দারোওয়ান মো. কামাল জানান, সকালে ৪০-৫০জন মানুষ একসাথে উপরে যাচ্ছিলো। আমি জিজ্ঞাসা করতেই তারা ভালো মন্দ কিছু না বলেই ধাক্কা দিয়া উপরে উঠে গেছে। এহন আমিও আতঙ্কে আছি।
এদিকে, দরোয়ানকে ধাক্কা দিয়ে প্রবেশ ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন বলেন, আগামী সোমবার ৭ মার্চ। দিনটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি দিবে আওয়ামী লীগ। তারই ধারাবাহিকতায় গোগনগরেও অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে নেতাকর্মীরা। আমি সেই অনুষ্ঠানে থাকতে পারবো কি না?
এ বিষয়টি জানতেই নেতাকর্মীদের নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই’র বাসায় গিয়েছিলাম। তিনি নেই শুনেই এসে পড়েছি। সেখানে আমাকে দোষারপ করার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি।
তবে, ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, তিনি আমাকে ফোন দিয়ে আসেনি, আর আসলেও দু’এক জন নিয়ে আসবে। তিনি ৪০-৫০ জন নিয়ে আমার বাসায় দাঁরোয়ানকে ধাক্কা দিয়ে প্রবেশ করলেন কেন? আমি থানার ওসিকে ব্যাপারটি জানিয়েছি, আগামীকাল অভিযোগও দায়ের হতে পারে।