নিজস্ব প্রতিবেদক : গণঅভ্যূথানের পর পাল্টে গেছে নারায়ণগঞ্জের পরিবহন সেক্টরের চিত্র। দেখা নেই প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমানের আধিপত্য। তবে থেমে নেই শামীম ওসমানের পরিবহন মাফিয়া চক্রটি। এবার সেই পরিবহন সেক্টরে পুরনো মোড়কে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে নতুনরা।
জানা গেছে, ইতমধ্যে পরিবহনে হাত বদলে চলে গেছে অধিকাংশ বিএনপি দলের লোকজনের কাছে। সেসুবাধে বাস, ঘাট, স্ট্যান্ডও ছাড় পায়নি। এবার পরিবহনের সেই পরিচিত মুখ, মিস্ত্রি থেকে কোটিপতি বুনে যাওয়া শামীম ওসমানের পরিবহনের ক্যাশিয়ার খ্যাত দিদার এখন সখ্যতা করে বেড়াচ্ছে বিএনপি নেতাদের সাথে। বন্ধু পরিবহনকে সচল রাখতে এরইমধ্যে শেষ হয়েছে সকল আলোচনা। আবারো যার মাধ্যমে পরিবহন সেক্টরে উপার্জিত অর্থ পাচার হবে সেই ওসমানিয় সাম্রাজ্যে এমনই অভিযোগ জানিয়েছে বেশ কয়েকজন মালিক।
সূত্রে জানা গেছে, র্যাব-এর ক্রস ফায়ারে নিহত বিএনপি নেতা মোমিনুল্লাহ ডেভিড-এর ভাই মাহাবুবুল্লাহ তপন হলো বাস টার্মিনাল তথা নারায়ণগঞ্জের জন্য এক মুর্তিমান আতঙ্ক। বিগত সময় যার অত্যাচারে অতিষ্ট ছিল সাধারণ ব্যবসায়ীরাও। যদিও তিনি একসময় সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নাসিম ওসমানের নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছেন এমন তথ্যপত্র পাওয়া গেছে।
এদিকে এসব অভিযোগের কথা জানতে চাইলে মুঠোফোনে মাহুবুবুল্লাহ তপন জানান, আসলে এগুলি সত্যি না। আমি আমার মালিকানাধীন পরিবহন নিয়ে ব্যস্ত আছি। অন্যগুলি আমার দেখার বিষয় না। অসুস্থ্য থাকায় বাসায় বিশ্রাম।নিচ্ছি।
এছাড়াও অভিযোগ উঠেছে, এই মাহাবুবুল্লাহ তপনের রয়েছে একটি বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। যে সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যতম স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাখাওয়াত ইসলাম রানা। যার নিয়ন্ত্রণে এখন পরবিহনে বিভিন্ন বাস-মিনিবাস। এরমধ্যে গ্রিন ঢাকা, বাঁধন, আসিয়ান, রিজন বাস পরিবহনগুলোতে তার ব্যপক প্রভাব রয়েছে বলে জানা গেছে। এবার বন্ধু পরিবহনকে সচল করার জন্য রানা সক্রিয় ভূমিকার রাখছে বলে জানা গেছে। এমনকি এই পরিবহনটি সচল করতে মালিকদের হুমকী দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবহন মালিকরা।
এ ব্যাপারে সাখাওয়াত ইসলাম রানা বলেন, আমি মালিকদের সাথে সম্পর্কের কারণে কথা বলেছিলাম। আর অনুরোধ করেছিলাম, যেন আমদানীর টাকাগুলো ফেরৎ দেয়। অন্যকিছু না। আর আমি শুধু বাঁধন, গ্রিন ঢাকা পরিবহনেই আছি। আমি শুধু কথা বলেছিলাম, কাউকে হুমকী দেয়নি। আমার কোনো বাহিনি নাই।
আরো জানা যায়, তাদের সাথে যোগ দিয়েছেন শ্রমিক-কমিটি নামধারী জাহাঙ্গীর। বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে শহরে দাবরিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। নারায়ণগঞ্জের পরিবহনও রয়েছে তার বিস্তর বিচরণ। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই জাহাঙ্গির ছিল উৎসব পরিবহনের চালক। যিনি এখন অঢেল সম্পদের মালিক। শুধুমাত্র পরিবহন বানিজ্যে রাতারাতি পাল্টে যায় তার ভবিষ্যৎ। এছাড়াও এ জাহাঙ্গির ছিল একসময়কার শামীম ওসমানের অনতম সহযোগী কাইয়ুমপুর এলাকার যুবলীগ নেতা ফায়জুলের ঘনিষ্টজন।
এ ব্যাপারে জাহাঙ্গির বলেন, আমি কারো নাম ভাঙ্গায়তে যামু কে। পরিবহনে আমি আছি। আমার সাথে কথা বলতে হলে নারায়ণগঞ্জ টার্মিনাল আসেন। শ্রমিক সংগঠনের অফিসে এসে কথা বলেন। এরপর শ্রমিক সংগঠনে আপনি কোনো পদে আছেন কিনা? কিংবা শ্রমিক নেতা কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইসা দেইখা যান। একপর্যায়ে অন্যান্য বিষেয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে কলটি কেটে দেন।