নিজস্ব প্রতিবেদক : এবার বিএনপি নেতা মাহাবুব উল্লাহ তপন ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা গংয়ের বিরুদ্ধে চাষাড়া সিটি বন্ধন কাউন্টারে অস্ত্র ঠেকিয়ে ১লাখ ৪১ হাজার টাকা লুট করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার ২রা অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টায় এ ঘটনা ঘটে বলে দাবী করেছেন সিটি বন্ধন পরিবহন কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিবহন বাস মালিক ও পরিচালক সালামত উল্লাহ নাদিম।
অভিযোগে জানা যায়, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহাবুব উল্লাহ তপন ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানার নেতৃত্বে নিত্য সাহা, রুহুল আমিন, সহদেব, হীরা, বাবুল দেওয়ান, হাসানসহ অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জন আগ্নেয়াস্ত্র তথা শর্টগান, পিস্তল, ধারালো ছুরি, লোহার রড, পাইপসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে কাউন্টার বন্ধ করে দেয়। এসময় কাউন্টার পরিচালনায় থাকা ৪ জনকে এলোপাথারী মারধরও করে। ওইসময় ১নং অভিযুক্ত মাহাবুব উল্লাহ তপন সুপার ভাইজার মোঃ আলিফ হোসাইনের মাথায় পিস্তল ঠেকাইয়া টিকেট বিক্রীত ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা এবং ২নং আসামী সাখাওয়াত ইসলাম রানা সুপার ভাইজার নুর হোসেন বিপ্লব এর মাথায় শর্টগান ধরে অর্ধবেলার টিকেট বিক্রীত ৪২ হাজার ৮শত ৪৫ টাকা লুট করে নেয়। এছাড়াও ৩ থেকে ৬নং অভিযুক্তরা কাউন্টারে থাকা আরো ২ জন স্ট্যাফ জানু, দুর্জয় এবং অভিযোগকারী ভুক্তভোগী সালামত উল্লাহ নাদিমকে এলোপাথারী মারধর করেছে।
সিটি বন্ধন পরিবহন মালিকের দাবি, ওইসময় ১নং ও ২নং অভিযুক্ত ব্যক্তি পিস্তল উঠাইয়া চাঁদা দাবী করে হুমকী দেয় যে, চাষাড়ায় সিটি বন্ধন বাস পরিবহনের ব্যবসা পরিচালনা করতে হলে তাদেরকে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হবে। চাঁদা না দিয়া ব্যবসা করলে প্রতিদিন তোদের গাড়ী ভাংচুর করা হবে। যাওয়ার সময় ২নং আসামীসহ অজ্ঞাতনামা আসামীরা ককটেল বিস্ফোরন ও দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি করিয়া চলিয়া যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে বিভিন্ন হাসপাতালে আহতদের নিয়া চিকিৎসা করিয়েছে।
উল্লেখ্য, এরআগে ২২ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে আধিপত্য বিস্তার ও পরিবহন সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। এ সময় সিটি বন্ধনের সাধারণ মালিক ও শ্রমিকদের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে সিটি বন্ধন পরিবহন কোম্পানির কার্যালয় ও সাইনবোর্ড।
সিটি বন্ধনের মালিকরা তখনও অভিযোগ করেছিল, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহাবুব উল্লাহ তপন ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বাবায়ক সাখাওয়াত ইসলাস রানার নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়েছিল।
ওইসময় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারি সিটি বন্ধন পরিবহন কোম্পানির বাস মালিকরা জানান, ২০০৯ সাল থেকে তারা বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহাবুব উল্লাহ তপন ও তার বাহিনীর লোকজন পরিবহন সেক্টর নিজেদের দখলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। রোববার দুপুর ১২টার দিকে তপন বাহিনীর শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সিটি বন্ধন পরিবহনের কার্যালয় দখল করতে আসে। এ সময় বাস মালিকরা বাধা দিলে কার্যালয়টি ভাঙচুর করেন তারা।