করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন সংক্রমন ঠেকাতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করাসহ ভবিষ্যত করনীয় নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে মত বিনিময় করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। মত বিনিময় সভায় সবাইকে টিকা গ্রহন ও মাস্ক ব্যবহারে আরো বেশি আগ্রহী করার ব্যাপারে জোরালো ভাবে কাজ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়। সেই লক্ষ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পেশাজীবী ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করে কার্যক্রম পরিচালনা করতে বলা হয়।
রোববার (৩০ জানুয়ারি) বিকালে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ভবনের মিলনায়তনে উক্ত মত বিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মত বিনিময় সভায় এমপি সেলিম ওসমান বর্তমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেই সাথে জনগনের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য জনপ্রতিনিধিদের কাজ করার অনুরোধ রাখেন। যাতে করে সাধারণ মানুষ নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করেন, করোনা ভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন সেভাবে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে কাজ করার অনুরোধ রাখেন। সবাইকে টিকা নেওয়ার জন্য আগ্রহী করতে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলতে হবে। পরবর্তীতে তিনি নারায়ণগঞ্জ শহরের কাউন্সিলরদের নিয়েও বসে আলোচনা সভা করবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরো বলেন, এলাকার রাস্তাঘাট স্কুল কলেজ সকল উন্নয়নই কাজই হবে। কিন্তু বর্তমানে আমাদের এই করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। এর আগে নারায়ণগঞ্জে করোনা মহামারির সময় আমরা জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছি আমাদের অতীতের সেই অভিজ্ঞতা আবারো কাজে লাগাতে হবে।
তিনি বলেন, আমি ৯টি স্কুল ভবন নির্মান করেছি। স্কুল গুলোর কাজ সম্পন্ন হতে না হতেই করোনার কারনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ হয়ে গেছে করোনার কারনে। বন্দরে দুটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমি দুজন বিশেষ ব্যক্তিকে সভাপতি করে কমিটি দিয়েছি কিন্তু পুরনো কমিটির লোকেরা মামলা দিয়ে বাধার সৃষ্টি করছেন। আমরা যদি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর পরিবেশ না দিয়ে যেতে পারি তাহলে এসবের কোন ফায়দা হবেনা এ বিষয় গুলো সবাইকে উপলদ্ধি করতে হবে। প্রতিটি স্কুলের ছাদে ছাদ বাগান করার ব্যবস্থা করতে হবে। কৃষিকাজে সবাইকে আগ্রহী করে তুলতে হবে।
জেলা প্রসাশকের দৃষ্টি আকর্ষন করে তিনি বলেন, আমাদের লাঙ্গলবন্দে হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে, শান্তিরচরে নীটপল্লীর অনুমোদন হয়েছে, শীতলক্ষ্যা-৩ নাসিম ওসমান সেতুর নির্মান কাজ চলছে কিন্তু এসব কাজ অনেক ধীর গতিতে চলছে কাজ গুলোর গতিবৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ করেন। পাশাপাশি বন্দর উপজেলার ইউনিয়ন এলাকা গুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে অনুরোধ রাখেন তিনি।
সদ্য সমাপ্ত হওয়া নির্বাচনে বিজয়ী ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে বলেন, নির্বাচন করতে গেলে একটু আধটু মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। নির্বাচন শেষ তাই আপনাদের মাঝে কোন মনোমালিন্য রাখবেন না। আমি সব থেকে বেশি খুশি হবো যদি আপনারা আপনাদের সাথে নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন তাদের সাথে নিয়ে কাজ করেন। আপনাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে আমরা আজ থেকে করোনা মোকাবেলায় যুদ্ধে নামলাম। আপনারা এই কাজটা করলে দেশকে সহযোগীতা করা হবে।
বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান এম.এ রশিদ বলেন, নারায়ণগঞ্জে রাজনৈতিক মতবিরোধ আছে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের যে উন্নয়ন হয়েছে সেগুলো ওসমান পরিবারের হাত ধরেই হয়েছে। এমনকি আলী আহম্মদ চুনকা, আফজাল হোসনে, খাজা মহিউদ্দিন, খোকা মহিউদ্দিন এমন অনেক ব্যক্তি এই পরিবারের সন্তান একেএম শামসুজ্জোহার সাহেব এর সৃষ্টি।
মত বিনিময় সভা আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জের নবাগত জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ , নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, বন্দর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ছালিমা ইসলাম শান্তা, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না, ২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহেন শাহ, ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান আহম্মেদ, ২৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফজাল হোসেন, ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুজ্জোহা, ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজ মন্ডল, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর শারমিন হাবিব বিন্নি, শিউলি নওশেদ, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ গাজী সালাম, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজর আলী, আলীরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা।