নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জে ওসমান সাম্রাজ্যের বলয়ে থাকা ভূমিদস্য হিসেবে সুপরিচিত এস এম রানা এখনও অধরা। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে আলোচিত ৪২ লাখ টাকা উদ্ধার কান্ডে অভিযুক্ত মাস্টার মাইন্ড এস এম রানা আত্মগোপনে থেকে এখনও বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত রয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র- জনতা আন্দোলনে ওসমান পরিবারের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ছাত্র- জনতার উপর গুলিবর্ষণ করে এস এম রানা। ওসমান পরিবারের সাথে সেই মামলার আসামী হলেও এখনও অধরা। বিভিন্ন জায়গায় এস এম রানার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা সাধারণ মানুষের জায়গা জমি দখল বাণিজ্য করে বেড়াচ্ছেন বলে স্থানীয়রা জানান।
গোগনগর ও শহিদনগর এলাকাবাসী জানান, এই এসএম রানা নিরীহ মানুষের জায়গায় ছলেবলে সুকৌশলে বায়না করে কদমতলী এলাকায় মাদার প্রিন্ট নামক প্রতিষ্ঠানে টর্চার সেলে নিয়ে মারধর করে ভয় ভীতি দেখিয়ে নিরিহ মানুষের জায়গা জমি হাতিয়ে নেয়। এমন অজস্র অভিযোগ রয়েছে রানার বিরুদ্ধে। তেমনি ২০১৮ সালে শহিদনগরের বাসিন্দা ফকির চাঁন মোল্লার নিকট হইতে সৈয়দপুর মৌজার ৩০ শতাংশ জায়গা রেজিঃ কৃত বায়না করে। পরে এ বায়না সূত্রে ৩৯ শতাংশ সম্পূর্ণ জায়গা দখল করে নেন এস এম রানা। এমন কি জমিতে বায়না সূত্রে সাইনবোর্ড না লাগিয়ে ক্রয় সূত্রে সাইনবোর্ড ব্যবহার করেন এ ভূমিদস্যু রানা। এ নিয়ে প্রতিবাদ করিলে ফকির চাঁন মোল্লা ও তার ছেলে মামুন কে মাদার প্রিন্টের দ্বিতীয় তলায় টর্চার সেলে চালায় বর্বরোচিত নির্যাতন।
সংবাদ মাধ্যমে কান্না রত অবস্থায় মৃত ফকির চাঁন মোল্লার ছেলে ভুক্তভোগী মামুন জানান, ২০১৮ সালে ৩০ শতাংশ জায়গা বায়না করে। কিন্তু এস এম রানা সাহেব সম্পূর্ণ ৩৯ শতাংশ জায়গায় ক্রয়কৃত জায়গা উল্লেখ্য করে সাইনবোর্ড লাগানো হলে আমরা প্রতিবাদ করি। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাদার প্রিন্টের দ্বিতীয় তলায় টর্চার সেলে নিয়ে আমাকে ও আমার বাবাকে মারধর করে এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়।। বাবা চিন্তায় অসুস্থ্য হয়ে পরে মারা যান।
তিনি আরোও জানান, এস এম রানা এক সময় নুন আনতে পান্তা ফুরাত। মাদার প্রিন্টের নাম ব্যবহার করে গোপনে আপন ছোট ভাই এস এম মাসুদ কে দিয়ে ফেন্সিডিলেরর ব্যবসা করাত। মাদার প্রিন্টের ব্যবহৃত গাড়িসহ বিগত ৪ বছর আগে ৪শ বোতল ফেন্সিডিল নিয়ে প্রশাসনের কাছে আটক হয় রানার ছোট ভাই এস এম মাসুদ। বর্তমানে দুবাই রয়েছেন তিনি। স্বৈরাশাসক আওয়ামীলীগের সময় ওসমান পরিবারের প্রভাবশালী সাবেক এমপি শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহম্মেদ টিটুর সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে হাতিয়ে নেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পথ-পদবী। গড়ে তুলেন সন্ত্রাসী সাম্রাজ্য। অপর দিকে প্রশাসনের ক্রসফায়ারের আসামি মাদকের গডফাদার সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটুকে ব্যবহার করে ফিল্ম স্টাইলে মাদক ও ভূমিদস্যু সাম্রাজ্য বিস্তার লাভ করে রানা। এছাড়া সড়ক ও জনপথ উন্নয়নে ভূমি অধিগ্রহণের রয়েছে এস এম রানার দুর্নীতি।
এছাড়া এ জেলার মাদকের ডিলার থেকে এস এম রানার ও তার ভাইকে প্রশাসনের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য কৌশল অবলম্বন করে আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহম্মেদ টিটুকে দিয়ে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিঃ এর সহ-সভাপতি পদ হাতিয়ে নিয়ে ক্লাবের শত টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে এস এম রানার বিরুদ্ধে। বর্তমানে এস এম রানা পলাতক থেকেও বিভিন্ন মামলা ও সংবাদ মাধ্যমে আমাকে ও স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন রিপনকে জড়িয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এ মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ ও মামলার অপকৌশল ব্যবহার করে হয়রানি ও মানহানীর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। স্থানীয় এক কৃষক জানান, এস এম রানা এতোটাই প্রভাব বিস্তার করেছে আমাদেরকে গরুর জন্য ঘাস কাটতেও দেওয়া হয় না। তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের মারধর পর্যন্ত করা হয়েছে।