লজ্জায় ডুবলো শ্রীলঙ্কা। ভারতের ছুড়ে দেওয়া ৩৫৮ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ১৯.৪ ওভারে মাত্র ৫৫ রানে অলআউট হয় তারা। ৩০২ রানের বিশাল জয়ে প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় ভারত। ৭ ম্যাচের ৭টিতেই জিতে পূর্ণ ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে।
রান তাড়া করতে নেমে প্রথম বলেই উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। জাসপ্রিত বুমরাহর বলে এলবিডব্লিউ হন পাথুম নিসাঙ্কা। শূন্যরানে ১ উইকেট। পরের ওভারের প্রথম বলে আবারও উইকেট হারায় তারা। এবার মোহাম্মদ সিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হন দিমুথ করুণারত্নে। ২ রানে নেই ২ উইকেট। একই ওভারের পঞ্চম বলে সাদিরা সামারাবিক্রমা ফেরেন শ্রেয়াস আয়ারের হাতে ক্যাচ দিয়ে। ২ রানে ৩ উইকেট নেই শ্রীলঙ্কার। এরপর তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে আবারও উইকটে নেন সিরাজ। এবার বোল্ড করেন অধিনায়ক কুশাল মেন্ডিসকে। ৩ রানে ৪ উইকেট নেই লঙ্কানদের।
এরপর বল হাতে আগুন ঝরান মোহাম্মদ শামি। ১৪ রানে গিয়ে তার তোপে আরও দুই উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। আউট হন চারিথ আসালঙ্কা ও দুশান হেমন্ত। অর্থাৎ ১৪ রানে নেই তাদের ৬ উইকেট।
এরপর ২২ রানে সপ্তম ও ২৯ রানে অষ্টম উইকেট হারায় তারা। এই দুটি উইকেটও নেন শামি। ৪৯ রানের মাথায় রাজিথাকে আউট করে এবারের বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় ফাইফার পূর্ণ করেন শামি। হয়ে যান বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারতের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। তার ঝুলিতে মোট উইকেট হয় ৪৫টি। পেছনে ফেলেন জহির খান ও জাভাগাল শ্রীনাথের মতো কিংবদন্তিদের।
১৯.৪ ওভারের মাথায় রবীন্দ্র জাজেদা দিলশান মদুশঙ্ককে আউট করে অলআউট করেন শ্রীলঙ্কাকে। অর্থাৎ মাত্র ৫৫ রানেই অলআউট হয়ে যায় সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। যা বিশ্বকাপের মঞ্চে চতুর্থ সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। ২০০৩ সালে কানাডা ৩৩ রানে, ১৯৭৯ সালে কানাডা ৪৫ রানে ও ২০০৩ সালে নামিবিয়া ৪৫ রানে অলআউট হয়েছিল। আজ শ্রীলঙ্কা হলো ৫৫ রানে।
ব্যাট হাতে শ্রীলঙ্কার মাত্র তিনজন দুই অঙ্কের কোটায় রান করতে পারেন। তার মধ্যে কাসুন রাজিথা ২ চারে সর্বোচ্চ ১৪ রান করেন। এছাড়া মাহেশ থিকশানা ২ চারে অপরাজিত ১২ ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ১ চারে করেন ১২ রান।
বল হাতে শামি ৫ ওভারে ১ মেডেনসহ ১৮ রান দিয়ে ৫টি উইকেট নেন। সিরাজ ৭ ওভারে ২ মেডেনসহ ১৬ রান দিয়ে নেন ৩টি উইকেট। বুমরাহ ৫ ওভারে ১ মেডেনসহ ৮ রান দিয়ে নেন ১টি। আর জাদেজা ০.৪ ওভার বল করে ৪ রান দিয়ে নেন ১টি উইকেট।
ম্যাচসেরা হন মোহাম্মদ শামি।
তার আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় ভারত। চার মেরে রানের খাতা খোলা রোহিত শর্মা বোল্ড হয়ে যান দিলশান মাদুশঙ্কর বলে।
সেখান থেকে শ্রীলঙ্কার বোলারদের শাসন করতে শুরু করেন বিরাট কোহলি ও শুভমান গিল। দ্বিতীয় উইকেটে তারা দুজন তোলেন ১৮৯ রান। দুজনেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে।
কিন্তু দলীয় ১৯৩ রানের মাথায় ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এই জুটি ভাঙেন মাদুশঙ্ক। সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা গিলকে উইকেটের পেছনে কুশাল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ বানান। গিল ৯২ বলে ১১টি চার ও ২ ছক্কায় ৯২ রান করে ফেরেন।
ক্যারিয়ারের ৪৯তম সেঞ্চুরির পথে ছিলেন কোহলি। আজও তিনি বঞ্চিত হন। দলীয় ১৯৬ রানের মাথায় তাকেও আউট করেন মাদুশঙ্ক। ৯৪ বলে ১১ চারে ৮৮ রান করে যান তিনি।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে ভারত উইকেট হারাতে থাকলেও থিতু হয়ে যান শ্রেয়াস আয়ার। লোকেশ রাহুল ২১, সূর্যকুমার যাদব ১২ রান করে আউট হন। দলীয় ৩৩৩ রানের মাথায় শ্রেয়াস ফেরেন ৮৪ বলে ৩ চার ও ৬ ছক্কায় ৮২ রান করে। এরপর রবীন্দ্র জাদেজা ১ চার ও ১ ছক্কায় ৩৫ রানের ইনিংস খেলে ভারতের সংগ্রহকে ৩৫৭ পর্যন্ত নিয়ে যান।
বল হাতে ফাইফার নেন শ্রীলঙ্কার মাদুশঙ্ক। তিনি ১০ ওভারে ৮০ রান দিয়ে উইকেটগুলো নেন। ১টি উইকেট নেন দুশমান্থে চামিরা। বাকি দুটি উইকেট যায় রান আউটের খাতে।