নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মামুন মাহমুদের উপর হামলা ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও তার পরিবারকে ঘিরে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে, নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ। শনিবার (২১ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই অভিযোগ করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ দাবী করেন, মামুন মাহমুদের উপর হামলার ঘটনায় গিয়াস উদ্দিন বা তার পরিবারের কেউ সম্পৃক্ত নয়। নারায়ণগঞ্জের সরকারদলীয় প্রভাবশালী নেতাদের সাথে আঁতাত করে ষড়যন্ত্র তৈরি করার চেষ্টা করছে একটি পক্ষ বলেও অভিযোগ তাদের। সংবাদ সম্মেলন থেকে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মামুন মাহমুদকে ছুরিকাঘাতের ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করে এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান বিএনপির নেতাকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, মামুন মাহমুদই দলের মধ্যে মূল বিভেদ সৃষ্টিকারি। তিনি প্রকাশ্যে বিভিন্ন স্থানে বলেছিলেন, যারা গিয়াসউদ্দিনের সাথে রাজনীতি করে তারা কোনো কমিটিতে স্থান পাবে না। পরবর্তীতে হয়েছেও তাই। এ নিয়ে তার প্রতি আমাদের ক্ষোভ থাকতে পারে। মতানৈক্য থাকতে পারে, প্রতিযোগিতা বা প্রতিদ্বন্দ্বিতাও থাকতে পারে। এর অর্থ এই নয়, তাকে হত্যার চেষ্টা করা হবে। এই ঘটনা নিজেরাও ইচ্ছাকৃত ভাবে হতে পারে বলে দাবী করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন আব্দুল বারী ভূঁইয়া, তিনি বলেন, মামুন মাহমুদের হামলার ঘটনার পরপরই জুয়েল মীর ওরফে পাগলা জুয়েল নামে একজন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়। সে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছে। জবানবন্দির কোথাও গিয়াসউদ্দিন পরিবারের কারো নাম নেই। তারপরও একটি মহল পুলিশকে ভুলতথ্য, বিভ্রান্ত করে ঈদের আগে গিয়াসউদ্দিনের বাড়িতে অভিযান চালাতে বাধ্য করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এই ঘটনায় গিয়াসউদ্দিনের ছেলে গোলাম মুহাম্মদ কাউছারকে সম্পৃক্ত করার হীনচেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এই গোষ্ঠীটি ষড়যন্ত্র করেছিল। তারা প্রচার চালিয়েছিল, মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন নাকি ঢাকায় সরকার দলীয় কোন কোন নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন, নির্বাচন শেষে তিনি তার ছেলে কাউন্সিলর সাদরিলকে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করাবেন। সরকার দলীয় একজন এমপির হয়ে এমন প্রচারণা চালানো হয়েছিল সেসময়। গুটি কয়েক অর্থলোভি, মুখোশধারি এই প্রচার চালিয়েছিলেন। পরবর্তীতে সাদরিল আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন কিনা, সেসব প্রচার আদতে সত্যি ছিল কিনা, তা আপনারাই অবগত হয়েছেন।
অভিযোগ করে বলেন, মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন জিয়া পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হওয়ার কারণে এক এগারোর অবৈধ সরকার তাকে বেশ কয়েকটি মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি করেন। সেসময় তাকে নানাভাবেই চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে। তিনি রাজী না হওয়াতে নানা ধরণের নির্যাতনও চালানো হয়। ফলশ্রুতিতে দীর্ঘ কারাভোগ করতে হয়েছে তাকে। পরবর্তীতে এসব মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হয় এবং তিনি স্বসম্মানে খালাসও পেয়েছেন। তাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার চক্রান্ত দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। এই চক্রান্তকারিরা যেমন নিজ দলের তেমনি তাদের সহযোগিরা অন্য দলের। তাদের সকলের লক্ষ্য, নিজেদের পথ পরিষ্কার করার জন্য গিয়াসউদ্দিনকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা দল কেন্দ্রীয় কমিটির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর হোসেন মোল্লা, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল হালিম জুয়েল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক নাজির আহম্মেদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক এস এম আসলাম, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক খোন্দকার মনিরুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা তাঁতী দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন, কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন খন্দকার শিপন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম রতন, জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী শহিদুল্লাহ, সিদ্ধিরগঞ্জ ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, ফতুল্লা যুবদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেন, ফতুল্লা থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ফরিদ আহম্মেদ প্রমুখ।