সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের দক্ষিন পাশের কয়েকশত ফুটপাতের দোকান থেকে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে চাদাঁবাজ জামালের লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজি। যার কারনে বাইপাস সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় তিন শতাধিক দোকান থেকে দৈনিক ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। চাঁদাবাজি করছে জামাল এবং তাদের সক্রিয় চাদাঁবাজ বাহিনীরা। আর তাদের শেল্টারদাতা হচ্ছে থানা পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তা, স্থানীয় মাস্তান এবং মার্কেট মালিকরা। বিনিময়ে তারা ফটুপাতের চাঁদাবাজির বাটোয়ারা পান। যার কারণে সড়ক দখল করে গড়ে উঠা ফুটপাতের অবৈধ দোকান-পাট স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ হয় না। বরং বছরের পর বছর ধরে ইদুর-বিড়াল খেলা চলে উচ্ছেদের নামে। আর ভোগান্তি ও হয়রানীর শিকার হচ্ছে পথচারীরা। মজার বিষয় হলো চাঁদাবাজরা গ্রেপ্তার বা আটক হলেও মাসোহারা পাওয়া লোকজন তাদের জামিনে অথবা থানা থেকে ছাড়িয়ে আনে। পুলিশ উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে বাইপাস সড়কটিতে যান চলাচলের ব্যবস্থা করলেও তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কারণ চাঁদাবাজদের শেল্টারদাতা প্রভাবশালী হওয়ায় নানাভাবে দেনদরবার করে পুনরায় সড়ক দখলে উৎসাহ পাচেছ অবৈধ দখলদাররা।
জানা গেছে, শিমরাইল মোড় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দক্ষিণ অবৈধভাবে গড়ে উঠা সকল ফুটপাত দোকান উচ্ছেদ করে দেয় হাইওয়ে পুলিশ। এসব দোকান থেকে দৈনিক ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করতো জামাল গংরা। উচ্ছেদের পর দেড় মাস পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশ ফুটপাত বসাতে দেননি। ফুটপাতের চাঁদাবাজি বহাল রাখতে আবারো মাঠে নামে জামাল বাহিনী। তার কারিশমায় ফের দখল হয়ে পড়ে ফুটপাত। নিশ্চুপ হয়ে পড়ে হাইওয়ে পুলিশের অভিযান। নিশ্চুপ হয়ে পড়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তরা।
চাদাঁবাজ জামাল ও তার সহযোগীরা আর্থিক ফাঁয়দা প্রতি দোকান থেকে ৫ হাজার টাকা করে কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা তুলেছে। তারা জোর গলায় বলে বেড়াচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা ও হাইওয়ে পুলিশ ও অসাধু কিছু হলুদ সাংবাদিকদের ওই টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে আবার ফুটপাতে দোকান বসিয়েছে। বন্ধ করে দিয়েছে মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে গাড়ি চলাচলের জন্য নির্মিত বাইপাস সড়ক। প্রতিটি দোকান থেকে দৈনিক ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে জামালের চাঁদাবাজ নাসির, শাকিল ও ফয়েজ মেম্বার। প্রায় আড়াইশতাধিক দোকান থেকে দৈনিক ২শ’ টাকা করে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। যা মাসে দাঁড়ায় ১৫ লাখ টাকার উপরে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর বলেন, চাদাঁবাজ জামালকে আমরা কিছুদিন গ্রেফতার করে আদালতে সোর্পদ করেছি। জামিনে বের হয়ে যদি পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে চাদাঁবাজি করে তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ফুটপাত দোকানদার জানান, সওজ কর্মকর্তা ও পুলিশ ম্যানেজ করার কথা বলে জামাল প্রত্যেক দোকানদার থেকে এককালিন ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা নিয়েছে। আগে দৈনিক ১০০ টাকা করে নিলেও এখন নিচ্ছে ২০০ টাকা করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামাল বলেন, থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেই দোকান বসানো হয়েছে, আমি প্রতি মাসে পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে কাজ করি তাই আমি গ্রেফতার হলেও বার বার ছাড়া পেয়ে যাই।
হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা টিআই (প্রশাসন) মশিউর রহমান বলেন, ফুটপাত উচ্ছেদ করা আমাদের কাজ না । উর্ধ্বতন মহলের নির্দেশ পেলেই আমরা উচ্ছেদ করবো।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, মহাসড়কের পাশে ফুটপাত বসার কোন অনুমতি দেয়া হয়নি। খুব দ্রুত এসব ফুটপাত উচ্ছেদ করা হবে।