শিশুর মৃত্যুতে তোপের মুখে পড়েছেন নারায়ণগঞ্জ শহরের মডার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডা. উজ্জ্বল মিত্র। শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, উজ্জ্বল মিত্রের দেওয়া চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) অনুযায়ী ইনজেকশন দেওয়ার পর শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যায় শিশুটির পরিবারের লোকজন উজ্জ্বল মিত্রের চেম্বারে অবস্থান নেন। খবর পেয়ে পুলিশও যায় ঘটনাস্থলে।
আয়মান নামে দেড় মাস বয়সী শিশুটির মা সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী আরবি আমান রিয়া। তিনি জানান, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দেওয়ায় একমাত্র শিশু সন্তানকে নিয়ে সকাল দশটার দিকে মডার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে উজ্জ্বল মিত্রের কাছে যান তারা।
চিকিৎসক উজ্জ্বল মিত্র শিশুটি নিউমোনিয়া আক্রান্ত জানিয়ে একটি চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র দেন। তাতে ওষুধের পাশাপাশি একটি ইনজেকশন দেওয়ার কথাও উল্লেখ রয়েছে।
‘ইনজেকশনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পার্শ্ববর্তী ‘দেশ ফার্মেসি’ থেকে কেনারও কথা বলেন ডা. উজ্জ্বল। ইনজেকশন কিনে পাশের আরেকটি ক্লিনিকে সেটি দেওয়ার পর বাচ্চাকে বাসায় নিয়ে যাই।
কিছুক্ষন পরই আমার বাচ্চার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকলে সাইনবোর্ড এলাকার ‘বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতালে’ নিয়ে গেলে সেখানের চিকিৎসক জানায়, আমার বাচ্চা মারা গেছে।’
শিশুটির পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, উজ্জ্বল মিত্র শিশুটির শারীরিক অবস্থা সঠিকভাবে নিরীক্ষণ না করেই উচ্চমাত্রার কোনো ইনজেকশন দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। যার প্রতিক্রিয়ায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
যদিও, ডা. উজ্জ্বল মিত্র বলছেন, তিনি সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণের পরই চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সকালে ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বাচ্চাকে নিয়ে আসলে তার নিউমোনিয়ার লক্ষণ পাই। সে অনুযায়ী প্রেসক্রাইব করেছি। তারা দুপুর বারোটার দিকে কোনো এক ক্লিনিকে ইনজেকশনটি পুশ করিয়েছেন। পরবর্তীতে এই ঘটনা ঘটেছে।
এখন ইনজেকশনতো আমি পুশ করিনি, কেবল লিখে দিয়েছি। ইনজেকশন পুশ করার সময় কী হয়েছে কিংবা তার পরে কী হয়েছে সে বিষয়ে তো আমি একেবারেই অজ্ঞাত।
ডাক্তার হিসেবে কেবল আমি চিকিৎসা পরামর্শ দিয়েছি। এইখানে দায় থাকলে যে ক্লিনিকে ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে, দায় তাদের।’
ঘটনাস্থলে যাওয়া সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল-আমিন বলেন, ‘মডার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক শিশুর চিকিৎসা নিয়ে বিশৃঙ্খলা হয়েছে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। উভয়পক্ষের সাথে কথা বলেছি। পরিবারের লোকজন লিখিত অভিযোগ দিলে পরবর্তীতে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’