নাজমুল হোসেন শান্ত-তৌহিদ হৃদয় যখন ব্যাট করছিলেন ধারাভাষ্যকার বারবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দুজনের পারফরম্যান্সের কথা বলছিলেন। শান্ত ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক আর হৃদয় তৃতীয়। পাওয়ার প্লেতে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেটে দুজনের জুটি-ই মূলত জয়ের ভিত গড়ে দেয়।
এর আগে শান্ত ১৭টি টি-টোয়েন্টির অভিজ্ঞতা থাকলেও হৃদয়ের ছিল অভিষেক। বিপিএলে রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন ইংল্যান্ড সিরিজের দলে। প্রথম ম্যাচে সুযোগ পেয়ে ইঙ্গিত দিলেন ভালো কিছুর। অন্যদিকে শান্ত বিপিএলের ফর্মটাই ধরে রেখেছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
দুজনের জুটি থেকে আসে ৩৯ বলে ৬৭ রান। শান্ত দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫১ রান করেন। ফিফটি আসে মাত্র ২৭ বলে। হাঁকিয়েছেন ৮টি চার। তার মধ্যে এক মার্ক উডকেই মেরেছেন টানা চারটি চার। হৃদয় ইনিংস লম্বা করতে না পারলেও আদিল রশিদকে মিড অনে হাঁটু গেঁড়ে হাঁকানো এক ছক্কায় বুঝিয়ে দিয়েছেন সম্ভাবনা। তার ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিপিএলের কথা টেনেছেন শান্ত, ‘আমরা যারাই খেলেছি আজকে… বিপিএলে যেভাবে ব্যাটিং করেছি বা যেই পরিকল্পনা ও মানসিকতা ছিল, সেটিই আজকে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছি। ওরকম ভিন্ন কিছু কেউই করতে চাইনি।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট মানেই আগ্রাসী খেলা। শান্তর ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ নিয়ে নানা কথা হলেও ধীরে ধীরে যেন তিনি বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। এর আগে বিশ্বকাপেও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন, কিন্তু খেলার ধরণ নিয়ে হয়েছে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা। বিপিএলে কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে আগ্রাসী খেলার চেষ্টা করেছেন সফল হয়েছেন, আজ যেন ছিল সেটিরই প্রতিচ্ছবি।
পাওয়ার প্লের পর প্রথম ওভারে উডকে মিড অনে ফিল্ডারের মাথার উপর দিয়ে উড়িয়ে চার মেরে ঝড়ের শুরু, এরপর একে একে আরও তিনটি। কোনো পরিকল্পনা ছিল?, ‘না ওরকম আগে থেকে কোনো পরিকল্পনা ছিল না। বল দেখেছি, ওই অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছি। ওরকম কিছু ছিল না। গ্যাপটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। তাই হয়তো বাউন্ডারিগুলো মারতে পেরেছি।’
তবে বোলারদের কৃতিত্ব দিতে ভুলছেন না শান্ত। প্রথম ১০ ওভারে বাংলাদেশ বল হাতে কিছুটা এলোমেলো ছিল। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ক্যাচ ফঁসকেছে দুটি। তবে শেষ দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ইংলিশদের দাঁড়াতেই দেয়নি। বিশেষ করে শেষ চার ওভার। মাত্র ২১ রান নিতে পেরেছে সফরকারী দল, হারিয়েছে ৩ উইকেট। ২ ওভারে ২১ রান দেয়া হাসান মাহমুদ শেষ ২ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৫ রান। নিয়েছেন ২ উইকেট। তাসকিন-মোস্তাফিজও ছিলেন দুর্দান্ত।
‘আমার মনে হয় খুব গুরুত্বপূর্ণ স্পেল করেছে। আমার মনে হয় বিপিএলে সে খুব ভালো বল করেছে। ওই জিনিসটাই হয়ত এই ম্যাচেও আত্মবিশ্বাসটা কাজে দিয়েছে। হাসান, মোস্তাফিজ, তাসকিন শেষে তিনজনই খুবই ভালো করেছে। যার কারণে ১৫৬ তে আমরা আটকাতে পেরেছি ওদের’
‘শেষের ১০ ওভার আমরা বোলিংয়ে যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি, তখনই আমাদের ওই আত্মবিশ্বাসটা এসেছে যে এই রান তাড়া করা সম্ভব। পরে ব্যাটিংয়ে যেভাবে শুরুটা পেয়েছি, তখন থেকেই আমর আত্মবিশ্বাসটা পেয়েছি যে আমরা যদি এক-দুইটা জুটি গড়তে পারি। তাহলে খেলাটা আমরা জিততে পারব’ -বলছিলেন শান্ত।