বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আপনাদের আন্দোলনের সম্মান জানিয়ে সেদিন তত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছিল। এই তত্বাবধায়ক সরকারের দাবী সবার আগে ছিল জামাতের।
আজ তাদের নাকি আবার আপোষ হচ্ছে শুনলাম। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া চাইলে আজ পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারতেন। আর আপনারা কী করলেন। শত শত মানুষকে গুম করলেন হত্যা করলেন। এভাবে একটা দল ক্ষমতায় থাকতে পারে এবং একটা দেশ কখনও চলতে পারে না। এ সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।
তিনি বলেন, আমার সাথে এক নেতা এক এগারোর সময় জেলে এক সাথে ছিলাম। বলেছিল ভাই আর রাজনীতি করবো না। আমার সামনে কান ধরে তিনি নিজেই উঠবস করেছিলো। আর রাজনীতি করবো না। আজ সেই নেতা বড় বড় কথা বলেন। তিনি বলেন খেলা হবে, খেলা হবে। কি খেলা খেলতে চান আমরা তা দেখতে চাই। আমরা আপনাদের খেলায় অংশগ্রহণ করবো না।
খেলা তো শুরু হয়ে গেছে। আমরা আপনাদের সাথে কোন ঝামেলায় যেতে চাই না। আমরা খেলা খেলা করে সেই খেলায় জিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে চাই। শুরু হয়ে গেছে ওবায়দুল কাদের সাহেব।
আমরা শুধু নির্বাচনে যাব আপনাদের সাথে খেলায় যাব। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন চাই। সময় আছে দেশের মানুষের মুখের ভাষা ও প্রতিবাদকে বোঝার চেষ্টা করুন তা না হলে কিন্তু পরানোর সুযোগ পাবেন না। ]
তিনি আরও বলেন, আপনারা কীভাবে পালাবেন চিন্তাভাবনা করেছেন। যদি আপোষে যান তাহলে যেতে পারেন। জোর করে যদি নামাই তাহলে কিন্তু পালাতে পারবেন না। আমরা না এদেশের জনগণ আপনাদের বিচারের পাল্লায় তুলবে। জনগণ আপনাদের ছাড়বে না।
যারা সন্তান, স্বামী মারা, আপনারা গুম ও খুন করেছেন তারা কিন্তু আপনাদের ছাড়বে না। যারা গুম হয়েছে তাদের বাবা-মা কিন্তু আপনাদের ছেড়ে কথা বলবে না। নারায়ণগঞ্জের অনেক নেতা কারাগারে আছে। আমরা জেল থেকে তাদের মুক্ত করবো। এ সরকারের কাছে আর মুক্তি চাই না আমরা।
শুক্রবার (১৯ মে) বিকেলে চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা গুলো বলেন।
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, আগামীতে কোনো মিটিং নারায়ণগঞ্জে এই শহীদ মিনারে হবে না। এতো ছোট জায়গায় বিএনপির মিটিং হয় না। বিএনপি একটি দল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দল। দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আর এ দলটি এখন চালাচ্ছে জননেতা তারেক রহমান। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শকে ভালোবেসে আগামীতে নিজেদের বিরুদ্ধে না শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করবো।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল মজুমদার বলেছেন মানুষ বাজারে গেলে এখন কাঁদে। যারা শেয়ার বাজার লুটপাট করেছে তারা অন্তত প্রভাবশালী। ওরা সিন্ডিকেট করে জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছে। শিল্প আমি বলিনি, এটা শিল্প মন্ত্রী বলেছে।
দেশের জনগণ এই সরকারের লুটপাটের কারণে দারিদ্র্য সীমার নিচে চলে গেছে। দেশের জনগণ পেটে খুদা নিয়ে জীবন যাপন করছে। দ্রব্যমূলের উর্ধবগতি আমরা বারবার প্রতিবাদ করেছি। সরকারের কোনো বোধদয় হয়নি।
তিনি বলেন, আজকে এই দেশকে রক্ষা করতে হলে এই লুটেরা সরকারকে বিদায় করতে হবে। এ লুটেরা সরকার বিদায় না করলে এদেশে কোন উন্নয়ন গতি হবে না। মানুষের পেটে ক্ষুধা রেখে দুটো ব্রিজ করলে উন্নয়ন হয় না।
আজকে মানুষের পেটে যদি ভাত না থেকে তাহলে উন্নয়ন দিয়ে কি হবে। আগে পেটে ভাত তারপর উন্নয়ন। যে উন্নয়নের চেয়ে বেশি নিজের পকেটের উন্নয়ন হয় সেই উন্নয়ন আমাদের প্রয়োজন নেই।
একটি ব্রিজ করতে বাইরের দেশে লাগে পাঁচ সাত হাজার ডলার। আমার দেশে লাগে ত্রিশ হাজার ডলার। এটা কী ফাইজলামি নাকি না ফাইজলামি মগের মুল্লুক নাকি। লুটপাট করে খেয়ে ফেলছে সব। সরকারি কর্মকর্তারা একে অপরের বিরুদ্ধে লেগে আছে। এ বলে তুই বেশি খেয়েছিস ও বলে তুই বেশি খেয়েছিস।
যেমন ওয়াসা পানির দাম, গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। ওরা বলে তেলের দাম বাড়াবো না আন্তর্জাতিক বাজারের দামে ছেড়ে দিবো। এতদিনে কেন। আমার নেত্রী কী দেশ চালায়নি ভর্তুকি দেয়নি। তখন কী দাম বেড়েছিল বাড়েনি।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু’র ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকনের যৌথ সঞ্চালনায় জনসমাবেশে বিশেষ অতিথি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ- সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির, মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, জুয়েল আহম্মেদ, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এড. জাকির হোসেন, এড. সরকার হুমায়ূন কবির, মনির হোসেন খান, আনোয়ার হোসেন আনু, ফতেহ রেজা রিপন, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ইউসুফ আলী ভূঁইয়া, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এড. রফিক আহমেদ, ডা. মজিবুর রহমান, এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান, মাসুদ রানা, বরকত উল্লাহ, সাখাওয়াত ইসলাম রানা, কামরুল হাসান চুন্নু সাউদ, শাহিন আহমেদ, মাহমুদুর রহমান, হাবিবুর রহমান দুলাল, মাকিত মোস্তাকিম শিপলু, ফারুক হোসেন, বন্দর থানা বিএনপি’র আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ পনেছ, সদস্য সচিব নাজমুল হক রানা, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মাহফুজুর রহমান হুমায়ূন, সাধারণ সম্পাদক বাছির উদ্দিন বাচ্চু, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম টিটু, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার মনিরুল ইসলাম, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু, সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল,কেন্দ্রীয় যুবদলের প্রথম সদস্য সাদেকুর রহমান সাদেক, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, জেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সহিদুর রহমান স্বপন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সজিব, জেলা বিএনপির সাবেক সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, ফতুল্লা থানা বিএনপির সদস্য সচিব এড. আব্দুল বারী ভূঁইয়া, জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাসেল রানা, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত ইসলাম রানা, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মন্টু মেম্বার, আড়াইহাজার উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব খোরশেদ আলম ভুঁইয়া, মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক এস এম আসলাম, মহানগর মহিলা দলের সভনেত্রী দিলারা মাসুদ ময়না, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রহিমা শরীফ মায়া, সাধারণ সম্পাদক রুমা আক্তারসহ জেলা ও মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।