নারায়ণগঞ্জের বন্দরে পবিত্র ঈদ এ মিলাদুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে ৪৭ তম ঐতিহাসিক জশনে জুলুস আনন্দ র্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও রোববার (১৭ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় মদনগঞ্জ বটতলা থেকে জশনে জুলুস শোভাযাত্রা শুরু হয়ে প্রধাণ প্রধাণ সড়ক প্রদক্ষিন শেষে কদমরসূল দরগাহ শরীফে আখেরী মোনাজাতের মধ্যদিয়ে সমাপ্ত হয়।
জশনে জুলুস ঈদ এ মিলাদুন্নবী (সাঃ) আনন্দ র্যালীতে নেতৃত্ব দেন এবং আখেড়ী মোনাজাত পরিচালনা করেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান, আওলাদে রাসুল পীরে কামেল আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী আল আবেদী। ৪৭তম ঐতিহাসিক জশনে জুলুসে সভাপতিত্ব করেন ঈদ এ মিলাদুন্নবী (সাঃ) উদযাপন কমিটির সভাপতি মোবারক হোসেন কমল খান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পীরজাদা সৈয়দ মাহমুদ শাহ মোজাদ্দেদী আল আবেদী। এরআগে রোববার সকাল থেকে হাজার আশেকে রাসুল ধর্মপ্রান মানুষ মদনগঞ্জ বটতলায় ব্যানার, ফেস্টুন, মাইক নিয়ে জড়ো হয়ে জশনে জুলুস আনন্দ র্যালীতে যোগদান করেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, জশনে জুলুস উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাজী আসাবুদ্দিন আশু, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফয়সাল মোহাম্মদ সাগর, ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুর রহমান কমল, শরীফ হাসান চিশতি প্রচার সম্পাদক সোহেল প্রমুখ।
আলোচনা সভায় প্রধাণ অতিথির বক্তব্যে আল্লামা বাহাদুর শাহ বলেন, ঈদ এ মিলাদুন্নবী (সাঃ) এ বছর থেকে সারাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে। গত মার্চে এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধাণমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাই। এতেকরে সুন্নী মাসলমানদের বিজয় হয়েছে। আমরা দাবী জানাই রাষ্ট্রীয়ভাবে যেন জশনে জূলুস আনন্দ র্যালী আয়োজন করা হয়।
যারা মিলাদুন্নবীকে নিয়ে কটাক্ষ করে তারা শয়তানের চেলা ও দোষর। কেননা যে নবী সমগ্র সৃষ্টির জন্য রহমত সেই নবীর আগমনে আনন্দ করার নির্দেশ সয়ং আল্লাহপাক দিয়েছেন। আমরা নবীর আশেকরা তা পালন করি। আর আশেকে রাসুল (সাঃ) তথা সুন্নী মুসলমানরা কখনো সন্ত্রাস পছন্দ করেনা। অন্যধর্মের উপর হামলা করেনা।
যারা ইসলামের নামে লেবাসধরে থাকে সেই উগ্রপন্থীরাই এসব করে। প্রকৃত মুসলমান কখনো বোমা মারতে পারেনা, মানুষ হত্যা করতে পারেনা। ঈদ এ মিলাদুন্নবী উদযাপনকে নস্যাৎ করতেই কুমিল্লায় পবিত্র কোরআনের অবমাননার মতো নক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হতে পরে। এর সাথে যারাই জড়িত তাদের খুঁজে বের করে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।
বর্নাঢ্য জশনে জুলুস র্যালী পদক্ষিনকালে বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার নর নারী ফুলের পাপড়ী ছিটিয়ে রাসুল (সাঃ) এর আগমনের আনন্দে উদযাপিত জুলুসকে অভ্যর্থনা জানায়। এরপর নবীগঞ্জ বাগ এ জান্নান কবরস্থানে এসে কবরবাসীদের জন্য বিশেষ দোয়া করেন আল্লামা বাহাদুর শাহ।
প্রধাণ প্রধাণ সড়ক প্রদক্ষিন শেষে কদমরসূর রসুল দরগাহ প্রাঙ্গনে জশনে জুলুস আনন্দ র্যালী শেষ হয়ে দরগাহ মসজিদ প্রাঙ্গনে ঈদ এ মিলাদুন্নবীর (সাঃ) এর উপর আলোচনা ও আখেড়ী মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন কদমরসূল দরগাহ মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা শরীফউল্লাহ শাহিন, মোতাওয়াল্লী কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম, রবিউল আউয়াল, আল্লামা বাহাদুর শাহ মাদরাসা কমিটির সভাপতি মাহবুব গেলমান, হিযবুর রাসুল (সাঃ) কমিটির সভাপতি ডাঃ নায়েব আলী, ইস্পাহানী বাজার কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, শামীম হোসেনসহ বিপুল সংখ্যক আশেকে রাসুলবৃন্দ।
উল্লেখ্য যে, ১৯৭৪ সালে রাসুল (সাঃ) এর ৪০তম বংশধর জশনে জুলুসে ঈদ এ মিলাদুন্নবী (সাঃ) এর প্রতিষ্ঠাতা আবু নসর সৈয়দ মো. আবেদ শাহ আল মাদানী (রঃ) এর নেতৃত্বে সর্বপ্রথম বন্দরে জশনে জুলস শোভাযাত্রা উদযাপন করা হয়, এ বছর ৪৭তম জশনে জুলুস উদযাপিত হয়।