রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

ফতুল্লা বিএনপিতে নিস্ক্রিয়দের আধিপাত্য

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০২৩, ৫.২১ এএম
  • ১৭০ বার পড়া হয়েছে

নব গঠিত ফতুল্লা থানা বিএনপি কমিটি নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। সক্রিয় থেকে নিস্ক্রিয়দের আধিপত্যই বেশী নব গঠিত এই কমিটিতে। কমিটি গঠনে জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসের বিরুদ্ধেই কমিটি গঠনে স্বেচ্ছাচারীয়তা অভিযোগ তুলেছেন নেতা-কর্মীরা।

 

নেতা-কর্মীদের অভিযোগ সময় অনেক গড়ালেও গিয়াসের মন মানসীকতার এতোটুকু পরিবর্তন হয়নি। ফতুল্লা বিএনপির ১০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে শুক্রবার (১৬ জুন)।

 

জেলা বিএনপির আআহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন ও সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন এই কমিটির অনুমোদন দেন। কমিটি ঘোষণার পরপরই শুরু হয়েছে বিতর্ক। গত দেড় দশক যে সব নেতারা ছিলেন পর্দার আড়ালে, তাদের অনেকেই জায়গা করে নিয়েছেন কমিটিতে। শুধুমাত্র লবিংয়ের কল্যাণে নিস্ক্রিয়রা কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সূত্রমতে, ১০১ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট বারী ভূইয়া কে নিয়েই আছে অসন্তোষ। ওয়ান ইলেভেন সরকারের আমল থেকেই তিনি রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান। নিজের পেশাতেই ব্যস্ত ছিলেন তিনি। বিএনপির সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের অনুসারী হওয়ায় তিনি থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মনোনীত হন।

 

বয়সের ভারে নতজানু হয়ে পরা এই নেতা ‘ওয়ান ম্যান আর্মি’ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন বহু আগেই। এরপর সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

কমিটিতে থানা এক নম্বর সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ মোল্লাকে ঘিরেও আছে বিতর্ক। ২০০৬ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তার আর কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। রাজনীতির মাঠ থেকে হারিয়ে যাওয়া কুতুবপুরের এই নেতাকে দেড় দশকের বেশী সময় পর খুঁজে পাওয়া গেছে গিয়াস উদ্দিনের বদান্যতায়।

 

একই অবস্থা কমিটিতে স্থান পাওয়া খন্দকার আক্তারের। তিনি চার দলীয় জোট সরকারের শাসনামলে গিয়াস উদ্দিনের এপিএস পরিচয়ে ফতুল্লা শিল্পাঞ্চল জুড়ে ত্রাসের রাজত্ব সৃস্টি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যায় ভবঘুরে থেকে। জোট সরকারের পতন হলে রাজনীতিতে তাকে আর দেখা যায়নি।

 

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির দায়িত্ব গ্রহণ করার পর প্রথমেই সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লার নিজ অনুসারিদের খুঁজে বের করেন গিয়াস উদ্দিন। এ তালিকায় উপরের দিকেই নাম সুলতান মাহমুদ মোল্লার। তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, সুলতান মাহমুদ মোল্লা রাজনীতি থেকে এক প্রকার অবসর নিয়েছিলেন।

তাকে কোন মিটিং-মিছিলে দেখা যায়নি। পরিবার নিয়ে শান্তিতে বসবাস করেছেন। অথচ এই নেতা হুট করেই চলে আসেন থানার দায়িত্বে। লবিং করে যদি তার মতো পদ পাওয়া যায় তাহলে রাজনীতি করে লাভ কি?

ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি অধ্যাপক মনির বর্তমান থানা কমিটিতে এক নম্বর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। বিএনপি ক্ষমতা হারানোর পর হারিয়ে গিয়েছিলেন এনায়েতনগরের এই নেতাও। সরকার বিরোধী কোন কর্মসূচিতেই তাকে দেখা যায়নি। কিন্তু রাজনীতি অনুকূলে আসার সাথে সাথেই গর্ত থেকে বেড়িয়ে আসেন ‘ওয়ান ম্যান শো’ খ্যাত এই নেতা।

নিজের কর্মী না থাকলেও শুধু মাত্র জেলা বিএনপির সভাপতির আনুকুল্যে পদ পেয়েছেন বলে অভিযোগ নেতাকর্মীদের। এছাড়া থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক স ম নূরুল ইসলামও দেড় দশক রাজনীতিতে নিস্ক্রিয় থাকার পর বর্তমান কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন।

বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বর্তমান সরকার ২০০৮ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর অনেক নেতাকে মাঠের রাজনীতিতে দেখা যায়নি। তারা এখন কমিটিতে দাপট দেখাচ্ছেন। রাজনীতি না করেও এখন থানার দায়িত্ব পেয়েছেন। যারা বিগত সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিল তাদের মধ্যে অনেককেই পদ দেয়া হয়নি।

 

সক্রিয় সেসব নেতাকে শাহ আলম অনুসারি হিসেবে বাদ দেয়া হয়েছে। বর্তমান কমিটিকে শুধু নিস্ক্রিয়দেরই নয়, জায়গা করে দেয়া হয়েছে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত নেতাদেরও। যা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। এ কমিটি দিয়ে আর যাই হোক, রাজনীতির মাঠে আন্দোলন করা সম্ভব নয়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort