মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়ায় প্রাণ দিতে হলো বশির শেখ (৩২) নামে মুন্সীগঞ্জের এক মাছ ব্যবসায়ীকে। হত্যার পর ধলেশ্বরী নদীতে ফেলে দেয়া হয় লাশ। নিখোঁজের দুইদন পর নারায়ণগঞ্জে তার লাশ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন স্বজনরা।
নিহত বশির শেখ মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গিবাড়ী থানার বেতকা ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের মৃত আমির হোসেনের ছেলে। তিনি নিজ এলাকায় পুকুর খনন করার ড্রেজার চালাতের ও এর পাশাপাশি মাছ ব্যবসা করতেন।
নিহত বশির শেখের বেয়াই মো: জসীম বলেন, বশির শেখ গত ২৬ জুলাই রাতে মোবাইলে ফোন কল পেয়ে বাসা থেকে থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরে তিনি ফিরে না আসায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর ২৭ জুলাই টঙ্গিবাড়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী নুপুর আক্তার। বৃহস্পতিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা সদরের চর আলীরটেক এলাকায় ধলেশ্বরী নদীতে লাশ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা পুলিশকে জানায়। রাত এগারোটায় মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপর নৌ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে স্বজনরা গিয়ে শাল শনাক্ত করলে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়।
মুক্তারপুর নৌ পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ মো: লুৎফর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ধলেশ্বরী নদীতে লাশ ভাসছে এমন খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং এগারোটায় লাশ উদ্ধার করি। এসময় লাশের হাত পা বাঁধা, মুখে স্কচ টেপ ও গলায় রশি পেঁচানো ছিল। পেট কাটা ও নাড়িভঁড়ি বের হয়ে ছিল। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন আসলে তাদের উপস্থিতিতেই লাশের সুরতহাল করি। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি মর্গে প্রেরণ করি।
নিহত বশিরের ছোট ভাই আলামীন জানান, তার ভাই বশির এলাকায় মাদক ব্যবসা বন্ধ করতে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। নিখোঁজের দিন ২৬ জুলাই বিকেলে পুলিশ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এলাকায় মতবিনিময় সভাও করেছিলেন। এর জের ধরেই মাদক ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দিয়েছে বলে তার অভিযোগ। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন তিনি ও অন্যান্য স্বজনরা।
নিহত বশির বেপারী পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে বাবা-মায়ের দ্বিতীয় সন্তান। বিবাহিত জীবনে স্ত্রী ও পাঁচ বছর বয়সের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে তার। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় টঙ্গিবাড়ি থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিহতের পরিবার।