বিয়ের প্রলোভন ধর্ষণ করেন; বিচার চাইতে যাওয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সালিশ বৈঠকের নামে স্থানীয় প্রভাবশালীর অপমান আর সিদ্ধান্ত; সইতে না পেরে ক্ষোভে-অভিমানে হতভাগ্য সেই মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে।
বন্দর উপজেলার বালিয়াগাও এলাকায় সোমবার (৬ জুন) সকাল ১০টায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর সালিশ বৈঠকের এক বিচারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃর ব্যক্তির নাম আব্দুল মমিন। তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।
এছাড়া পলাতক রয়েছেন ধর্ষক নুরুল আমিন, নুরুল আমিনের স্ত্রী শ্যামলী বেগম ও একই এলাকার তাওলাদ হোসেনের ছেলে ধর্ষকের ভাগ্নে ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা জানান, সালিশ বৈঠকে বিচারক আব্দুল মমিন তাদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেছিলো। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গত ২ বছর ধরে বন্দর উপজেলার বালিয়াগাও এলাকার মৃত জামির খানের ছেলে নুরুল আমিনের সাথে দিনমজুরের সেই মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সর্ম্পকের সূত্র ধরে নুরুল আমিন বিভিন্ন সময়ে বিয়ের প্রলোভন ধর্ষণ করেছেন। গত ২২মে সকাল পৌনে ১১টায় ফের ধর্ষণের পর যুবতী নুরুল আমিনকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। কিন্তু নুরুল আমিন বিয়ে করতে অনীহা প্রকাশ করে। ওই ঘটনায় ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে গত ২ জুন নুরুল আমিনকে আসামী করে বন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করে।
মেয়েটির মা জানান, থানার মামলার করার জের ধরে ধর্ষণের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই ভিডিও নুরুল আমিনের স্ত্রী শ্যামলী বেগম, তার ভাগ্নে এবং স্থানীয় মসজিদের ইমাম ভাইরাল করে। এছাড়া সালিশ বৈঠকের নামে বিচারক এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেন। স্থানীয় প্রভাবশালীর অপমান আর সিদ্ধান্ত; সইতে না পেরে ক্ষোভে-অভিমানে ৬ জুন সকাল ১০টায় নিজ ঘরের আঁড়ার সাথে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।
বন্দর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মহসিন জানান, এলাকাবাসীর মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে আমি ও মদনগঞ্জ ফাঁড়ী পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে হাজির হই। পরে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছি। মামলা দায়ের হয়েছে। ধর্ষিতা আত্মহত্যা করার পর থেকে ধর্ষক নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী শ্যামলী ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম পলাতক রয়েছে। পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে।