প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো: রফিকুল ইসলাম বলেছেন, আমি নিজে নির্বাচন মনিটরিং করব। এই এলাকার ভোটারদের মাঝে যেন ক্ষোভের সৃষ্টি না হয়। আপনাদের সহযোগিতা আমার দরকার। আমার জীবনে আমি বহু লাশ দেখেছি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমি আর লাশ দেখতে চাই না। আপনারা মনে করবেন না আমরা উদাসীন। আপনারা আমাদের সহযোগীতা করবেন।
রোববার (২ জানুয়ারি) দুপুরে নাসিক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনারের আচরণ বিধিমালা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় প্রার্থীদের বক্তব্যের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আপনাদের কাছে কিছু কাগজ দিয়েছিলাম। সেই কাগজে আপনারা আপনাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। আপনাদের সবার অভিযোগ আমরা আমলে নিয়েছি, আমরা ব্যবস্থা নেব। আপনাদের কাছে অনুরোধ, আপনারা ভোটারদের বলবেন ভোটকেন্দ্রে যেতে। এরপরও যদি যেতে না পারে তাহলে আমার পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট ও র্যাব আছে। তাদেরকে জানাবেন, তারা ব্যবস্থা নেবে। দরকার হলে আমি ‘আরও কিছু’ আনবো।
সভায় উপস্থিত জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ইসি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমার প্রশাসন, পুলিশ ও ম্যাজিষ্ট্রেট যারা আছেন তাদের কাছে আমার নির্দেশনা রইলো যে মাইকিং নির্ধারিত সময়ের আগে-পরে করবে তা জব্দ করবেন, তাকে জরিমানা করবেন। যদি তা না হয় তাহলে কিন্তু আপনাদের আমি ছাড় দিবো না। আপনারা (প্রার্থী) মনে করবেন না শুধু আপনাদের উপর চাপ দিচ্ছি। সব থেকে বেশি চাপ আমার নিজের কর্মকর্তাদের উপর।
তিনি বলেন, ‘ইভিএমে একটি মাত্র পথ আছে, সেটি হলো একজনের ভোট আরেকজনের দেওয়ার। সেটা হলো আরেকজন যদি আপনার ব্যালটে টিপ দিয়ে দেয়, এটা হলে সঙ্গে সঙ্গে বাধা দেবেন। এরপরেও বন্ধ না হলে ডকুমেন্টারি অভিযোগ দেবেন। দরকার হলে আমরা ভোট বন্ধ করে দিয়ে পুনরায় ভোটের ব্যবস্থা নেব’।
ইভিএম নিয়ে প্রার্থীদের আশঙ্কার বিষয়ে তিনি বলেন, ইভিএমে একজনের ভোট আরেকজনের কাছে চলে যাওয়া কখনও সম্ভব না। আমার অনুরোধ আপনারা এক্সপার্ট নিয়ে আসেন এবং আমাকে দেখান। প্রমাণ হলে আমি ইভিএমে ভোট করব না। এ আশঙ্কার কোন কারণ নেই’।
তিনি আরও বলেন, আপনারা অভিযোগ করেছেন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই অর্থাৎ কেউ নিয়ম না মেনে মাইক ব্যবহার করছেন আপনি মেনে ব্যবহার করছেন। প্রশাসনের কাছে নির্দেশ নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে মাইক দেখলেই ব্যবস্থা নেবেন। প্রয়োজনে সে মাইক জব্দ করে মাইক ব্যবহারকারীকে জেলহাজতে পাঠাবেন। আপনারা যদি অ্যাকশন না নেন তাহলে আপনাদেরও আমরা ছাড় দেবো না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেছেন, ৯জন ম্যাজিস্ট্রেট এখন কাজ করছে, আরও ৩০ জন ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচন কমিশনের কাছে চাওয়া হয়েছে। ইলেকশনের দিন প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। বিজিবি থাকবে, র্যাব থাকবে। আমরা মনে করি ইলেকশন ভালো ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা যা করার দরকার আমরা করবো।
ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনাকে যদি একটা ভোট দেয় তাহলে ইভিএম একটা ভোট-ই দেখাবে। ১০টা ভোট দেখানোর কোন সুযোগ নাই।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, জেলা পুলিশ সুপার মো: জায়েদুল আলম, নাসিকের নির্বাচন পরিচালনার রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার প্রমুখ।