রুদ্রবার্তা২৪.নেট: সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক, নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী দু’দিন আগে বললেন, বিচারের বাণী যেন আর নিরবে নিভৃতে না কাঁদে-অথচ সাড়ে আট বছর ধরে ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ করে রাখা হয়েছে। একবার তিনি বললেন, শিশু হত্যাকারীরা ঘৃণ্যজীব-আবার তিনি ত্বকীর ঘাতকদের পুরষ্কৃত করলেন। এ সব কি রাজনীতির কথা, নাকি কেবলি কথার কথা। আমরা একজন প্রধানমন্ত্রীর কাছে কেবল কথার কথা শুনতে চাই না।
তানভীর মুহাম্মতদ ত্বকী হত্যার ১০৩ মাস উপলে শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, দেশে বিচারব্যবস্থা স্বাধীন হলে একটি হত্যার বিচারের অভিযোগ তৈরী হয়েও তা সাড়ে আট বছর আটকে থাকে না। ত্বকীর ঘাতকরা যেহেতু সরকার দলীয় সেহেতু ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আমরা এ বৈষম্যমূলক, গণবিরোধী বিচার-ব্যবস্থার পরিবর্তন চাই। আমরা সংবিধানে উল্লেখিত জনগণের অধিকারগুলোর বাস্তবায়ন চাই। স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার, বিচার পাওয়ার অধিকার, ভোট দেয়ার অধিকার, মানবিক মর্যাদানিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার চাই। স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ফিরে পেতে চাই।
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সশাহীন মাহমুদের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, উদীচী জেলা সভাপতি জাহিদুল হক দীপু, সামাজিক সংগঠন সমমনার সভাপতি দুলাল সাহা, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনি সুপান্থ, সামাজিক সংগঠন বাতায়নের সংগঠক মাইনুদ্দিন মানিক, সিপিবি শহর সম্পাদক সুজয রায় চৌধুরী বিকু, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জেলা সম্পাদক প্রদীপ সরকার প্রমূখ।
ভবানী শংকর রায বলেন, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে হত্যা করে ঘাতকরা লাশ শীতল্যা নদীতে ফেলে দিলে এর দুইদিন পর ৮ মার্চ শীতল্যা নদী থেকে আমরা ত্বকীর লাশ উদ্ধার করি। এ হত্যাকাÐের পর থেকে বিচারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখে আমরা নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আলোকপ্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছি। সরকারের বৈষম্যমূলক বিচার ব্যবস্থার কারণে এ দীর্ঘ সময়েও এ হত্যার বিচার হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দু’দিন পর ৮ মার্চ শীতল্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।