টানা কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এ বছরের রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বিকাল ৬টায় ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে এ পরিমাপ করা হয়। এতে তিস্তা পাড়ের নিম্নাঞ্চল ও চরের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা জানান, উজানের ঢলে তিস্তার পানি আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সকাল ৯ টায়ও ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। তবে দুপুর ১২ টায় ৬ সেন্টিমিটার কমে ১৩ সেন্টিমিটার উপরে ছিল। বিকাল ৩টায় ৪ সেন্টিমিটার বেড়ে ১৭ সেন্টিমিটার উপরে, আর বিকাল ৬টায় আরও ১৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
পানি বৃদ্ধির কারণে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবড়ি, খালিশাচাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী; জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, কৈইমারী ও শৌলমারী ইউনিয়নের চর গ্রামগুলোর কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে সেখানকার জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
খালিশা চাপানি ইউনিয়নের মমিনুল ইসলাম (৫৫) বলেন, ‘গত তিন সপ্তাহ থেকে পানি উঠা-নামা করছে। আজ সকাল হতে আমাদের বাড়িতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। বিকালে ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে পড়েছে।’
একই এলাকার বানু বেওয়া (৫৮) বলেন, ‘ঘর-বাড়িতে পানি ঢুকেছে। চুলায়ও পানি। রান্না করার উপায় নেই। বাচ্চা-কাচ্চাদের খাওয়ানোরও ব্যবস্থা নেই। জরুরি শুকনো খাবার ও ত্রাণ দরকার।’
ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যায় চারদিকে ডুবে গেছে। ঘাস পাওয়া যাচ্ছে না। ফিডের দাম অনেক বেশি। গরু-ছাগলের খাবার দিতে পারছি না।’
নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ জানান, পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ আছে। জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় প্লাবিত মানুষদের মাঝে শুকনো খাবার ও ত্রাণ বিতরণ শুরু করা হবে।