ভোরের আলো তখন ফুটছে মাত্র। ঘন কুয়াশায় কাছের জিনিসও বোঝা দায়। সিএনজি অটোরিক্সায় করে পূণ্যভূমি সিলেট শহরের প্রাণ কেন্দ্র জিন্দাবাজার অব্দি আসতেই দেখা মেলে ভিন্ন চিত্র। দূর থেকে দেখা যায় ফেস্টুন ঝুলছে সড়ক বাতির পিলারে। কাছে আসতেই জ্বল জ্বল করছে, বাহারি রঙে লেখা ‘জমবে এবার বিপিএল।’
চায়ের নগরীতে বেলা গড়ানোর সঙ্গে স্টেডিয়াম প্রাঙ্গনের দিকে হাড় কাঁপানো শীতের মাঝেও পাওয়া যায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) উত্তাপ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রধান ফটকে দর্শকের মিছিলে টিকিট না পাওয়ার হাহাকার।
বরাবরের মতো ঢাকা পর্ব শেষে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) গন্তব্য চট্টগ্রাম হয়নি। বিপিএলের ১০ম আসরের দ্বিতীয় দফা শুরু হবে চায়ের নগরী সিলেটে। বিপিএলের আগে যে ব্র্যান্ডিং নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছিল, সেই ব্র্যান্ডিংয়ের সর্বোচ্চটা দেখা গেল এখানে।
স্টেডিয়াম চত্বরের পাশাপাশি শহরের মূল পয়েন্টে বসেছে ব্যানার-ফেস্টুন। এসব দেখে শহরে পা রাখলেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে বিপিএলের সম্মোহনী আমন্ত্রণ বার্তা। এমন ব্র্যান্ডিংয়ের একটি খারাপ দিকও দেখা গেছে সিলেটে। সারাদিন টিকিটের খোঁজে হন্যে হয়ে ছিল সিলেটবাসী। বেশিরভাগকেই ফিরতে হয়েছে খালি হাতে।
এমন আনন্দ-বেদনার মিশ্রণে শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে বিপিএলের সিলেট পর্ব। যা সাঙ্গ হবে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি। এই লম্বা সময়ে ছয়দিন মাঠে গড়াবে খেলা। তার মধ্যে পাঁচ দিন মাঠে নামবে স্বাগতিক দল সিলেট স্ট্রাইকার্স। এ কারণে সিলেটবাসীর মধ্যে বিপিএল নিয়ে উদ্দীপনা খানিকটা বেশি। সবাই মাঠে বসে উপভোগ করতে চান বিপিএলে নিজেদের দল সিলেট স্ট্রাইকার্সের খেলা।
ঢাকায় বিপিএলের প্রথম দুই দিন গ্যালারিতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। শেষ দুই দিন অবশ্য গ্যালারির কিছু অংশ খালি ছিল। দর্শকের চাহিদা দেখে আগে থেকেই বলে দেওয়া যাচ্ছে সিলেটে গ্যালারির প্রতিটা অংশ থাকবে কানায় কানায় পূর্ণ। এমন উদ্দীপনার দিনে দর্শকদের আগ্রহ আরও বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্সের খেলা থাকায়। সিলেট পর্বের প্রথম দিনে মাঠে নামবে সিলেট স্ট্রাইকার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এর আগে অবশ্য দিনের প্রথম ম্যাচে লড়বে খুলনা টাইগার্স ও রংপুর রাইডার্স।
বন্ধের দিন হওয়ায় শুক্রবার দর্শকের চাপ থাকবে অনেক বেশি। সেজন্য দর্শকদের টিকিট চাহিদাও বেশি। এমনটাই জানিয়েছেন টিকিট কিনতে আসা বেশ কয়েকজন সমর্থক। এমন দাবির পর তারা অবশ্য অভিযোগ জানাতেও ভুল করেননি। নির্ধারিত সময়ে কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হলেও মুহূর্তের মধ্যে উধাও হয়ে যায়। কাউন্টারে টিকিট না থাকলেও বাইরে কালোবাজারিদের কাছে পাওয়া চড়া দামে পাওয়া গেছে বিপিএলের টিকিট। এই নিয়ে বেশ হতাশা দেখা গেছে স্থানীয় সমর্থকদের মধ্যে।