অস্ত্র ও জাল টাকাসহ নারায়ণগঞ্জের কুখ্যাত চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী খন্দকার কামাল ওরফে সাগর ওরফে এম কে সাগরকে ২ সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১ । অপর দুই সহযোগী হলো- মো. মোশাররফ হোসেন (৩৪) ও মো. আমিনুল ইসলাম (২৫)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে দুই রাউন্ডগুলিসহ একটি বিদেশী রিভলবার ও ৯৪ হাজার ৫শ’ টাকা উদ্ধার করে র্যাব। সাগর নিজেকে ভুঁইফোড় সংগঠন তৃণমূল আওয়ামী লীগের সভাপতি পরিচয় দিয়ে বেড়ায়। কথিত ওই ভুঁইফোড় সংগঠনটির সেমিনারের ভিডিও, বেশ কিছু ভুয়া নথি, চুক্তিপত্র, ব্যানার ও ভিজিটিং কার্ডও উদ্ধার করে র্যাব।
সাগর মূলত ৫নং মঙ্গলকোট, কেশবপুর, যশোর এর অধিবাসী। তবে দীর্ঘদিন যাবৎ সে রাজধানী ঢাকার সাভারের আশুলিয়া থানার গাজিরচট এলাকায় অবস্থান করেন এবং এ স্থান হতেই তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে উল্লেখিত অপকর্মগুলো সম্পাদন করে আসছিলো।
বুধবার (৩ নভেম্বর) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন মৌচাক এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই অস্ত্র ও জাল টাকাসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীনগরে র্যাবের সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক (সিও) তানভীর মাহমুদ পাশা।
তানভীর মাহমুদ পাশা সংবাদ সম্মেলনে জানান, মানুষের সরলতা ও আবেগকে পুঁজি করে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের জন্য সে তৃণমূল আওয়ামী লীগ নামক এক ভুঁইফোড় রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে।
ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন সময় মুঠোফোনে অস্ত্রের ভয়ভীতি প্রদর্শন ছাড়াও চাঁদার অর্থ না পেলে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে তাদের ব্যক্তিগত ও পরিবারের নারী সদস্যদের ছবি এডিট পূর্বক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করার হুমকি প্রদান করত।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে তার সখ্যতার প্রমাণ হিসেবে ভুয়া মেসেজ আদান প্রদানের স্ক্রিনশট প্রদান, এডিট করে নিজের ছবি সংযুক্ত করে নিজেকে প্রভাবশালী প্রমাণের চেষ্টা করত এবং পরবর্তীতে চাঁদাবাজির উদ্দেশ্যে অস্ত্রের ভয় ভীতি প্রদর্শন করত।
এসএসসি পাশ দাবিকৃত এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ গ্রহণ ছাড়াও প্রতিশ্রুতি প্রদানের মাধ্যমে প্রতারণা, জাল টাকার কারবার ও নারী পাচার এর অভিযোগও রয়েছে।
তিনি আরো জানান, অনলাইন তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রতারণার প্রাথমিক ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল এম কে সাগর। ভুক্তভোগীদের আকৃষ্ট করতে নানা সময়ে সে রাজধানীর বিভিন্ন অডিটোরিয়াম ভাড়া নিয়ে ছোটো খাটো দলীয় সভা সমাবেশের আয়োজন করত।
এ সকল অনুষ্ঠানে ছবি ও ভিডিও সে ব্যবহার করত তার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় র্যাব।