বন্দর উপজেলা কলাগাছিয়া ইউনিয়নে আ’লীগের কমিটি নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে চলছে জল্পনা-কল্পনা। কে হবে কলাগাছিয়া ইউনিয়ণ আ’লীগের নতুন কমিটির কর্নধার? পুূরনোরা কি আবার মূল্যায়িত হবে নাকি কোন পরিবর্তণ আসবে।
এ নিয়ে নেতাকর্মীদের যেন ঘুম নেই। তবে এ ইউনিয়নে গুরুত্বপূর্ণ পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় কেউ কেউ যার যার অবস্থান থেকে শীর্ষ নেতাদের দরজায় দরজায় লবিং শুরু করেছেন বহু আগে থেকেই।
সবাই যেন নেতা হওয়ার সুপ্ত বাসনা মনে পোষন করে যাচ্ছে। এতে করে একাধিক গ্রুপেও বিভক্ত হয়েছেন তারা। কেউ কারো কাছে থেকে প্রতিযোগিতায় কম যায়না। তাই গোপনে গোপনে তারা তাদের কাঙ্খিত পদ পেতে যার যার বলয়ের নেতাদের দরজায় একাধিকবার কড়া নাড়ছেন।
তবে জেলা পর্যায়ের দলীয় শীর্ষনেতারা বলছে কলাগাছিয়া ইউনিয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন। এখানে ত্যাগী নেতাদেরই মূল্যায়ণ করা হবে কিন্তু এখনও কমিটির খসড়া তালিকা তৈরী করা হয়নি। সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা গেছে কলাগাছিয়া ইউনিয়নে আ’লীগের একাধিক শীর্ষ পদ প্রত্যাশী নেতাদের নাম উঠে এসেছে।
এরা হচ্ছে সভাপতি পদ প্রত্যাশী বর্তমান কলাগাছিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আমিরুজ্জামান,আক্তার হোসেন বিএ,সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ব্যবসায়ী আহমেদ তুষার মাঈনউদ্দিন ও সাধারন সম্পাদক পদ প্রত্যাশী হিসেবে ইচ্ছাপোশন করেছেন বর্তমান সাধারন সম্পাদক ইব্রাহিম কাশেম,সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোয়েব মোহাম্মদ লিটন,জারসিস আহমেদ।
এদিকে কলাগাছিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের পূনরায় সভাপতি পদ প্রত্যাশী আমিরুজ্জামান বলেন,আমি দীর্ঘদিন ধরে কলাগাছিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছি। দলের জন্য নিবেদিত হয়ে কাজ করেছি। দল যদি মনে করে আমি উক্ত পদের জন্য যোগ্য তাহলেই আমাকে মনোনীত করবে।
আরেক সভাপতি প্রার্থী আক্তার হোসেন বিএ বলেন,আমি বর্তমান কমিটির যুগ্ম সম্পাদক পদে ছিলাম। ইতিপূর্বে বন্দর উপজেলা আ’লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আমাকে সহসভাপতি হিসেবে মনোনীত করেছে। তবে এ পদে আমি সন্তুষ্ট নয়। আমি কলাগাছিয়া ইউনিয়নে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে চাই।
দলের জন্য অনেক কাজ করেছি। ভবিষ্যতেও নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাব। একজন ব্যাক্তি সব সময় একটি পদ বহন করতে পারেনা। অন্যকে সুযোগ দিতে হয়। আমি কলাগাছিয়া ইউনিয়নের সভাপতি হলে সুশৃঙ্খল ভাবে দলের কর্মীদের সৃজনশীলভাবে তৈরী করে আরো এগিয়ে নিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।
অপর সভাপতি পদ প্রত্যাশী আহমেদ তুষার মাঈনউদ্দিনের ঘনিষ্ট সুত্র জানায়,বুরুন্দি গ্রামের কৃতি সন্তান আহমেদ তুষার মাঈনউদ্দিন বর্তমানে একজন ব্যবসায়ী। তিনি সূদুর কাতারে ব্যবসা করেন। পাশাপাশি দলের সুবিধাবঞ্চিত কর্মী ও সাধারন মানুষের জন্য কাজ করেন। দানশীল ও ধর্মভিরু মানুষ বটে।
তিনি কলাগাছিয়া ইউনিয়ন সাবেক ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি একজন উদার মনের মানুষ। কলাগাছিয়া ইউনিয়নে তিনি সভাপতি হলে অন্তত এই ইউনিয়নে কোন দরিদ্র থাকবেনা ইনশাআল্লাহ। কেননা ধনীলোক অনেক আছে কিন্তু মানসিকতা সবার নেই।
অন্যদিকে পূণরায় সাধারন সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারন সম্পাদক ইব্রাহিম কাশেম বলেন,দেখলাম অনেকেই কলাগাছিয়া ইউনিয়ন সাধারন সম্পাদক হওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। আমার নেতৃত্ব দেওয়ার ইচ্ছা নাই। আমি যদি দলের জন্য কাজ করে থাকি দলের কর্মীরাই আমাকে নেতা বানাবে। বর্তমানে কর্মী না থাকলেও নেতা হতে সবাই চায়। সৈন্য না থাকলে সেই রাজ্যের রাজার কি মূল্য থাকে।
প্রতিদ্বন্দী সাধারন সম্পাদক প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোয়েব মোহাম্মদ লিটন বলেন,দলের জন্য সব সময় কাজ করেছি। সময় দিয়েছি। কখনো নেতা বদল করি নাই। বহুরুপী মানুষ কখনো দলের জন্য কল্যানকর হতে পারে না। আমি কলাগাছিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক প্রার্থী। দলই ঠিক করবে কে যোগ্য নির্ধারক।
অপর সাধারন সম্পাদক জারসিস বলেন, আমি পরিবর্তনের পক্ষে।
একজন মানুষ দীর্ঘদিন ধরে একটি পদ কুক্ষিগত করে রাখতে পারে না। আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান। আমার পিতা একে গিয়াসউদ্দিন মনহর একজন আ’লীগের নিবেদিত প্রান ছিলেন। আমার দাদা আলমচান বেপারী একজন শিক্ষানুরাগী ছিল। হাজী আলমচান মডেল স্কুল এন্ড কলেজের দাতা ছিলেন আমার দাদা।
প্রায় ২৫বছর যাবৎ আ’লীগের নিবেদিত কর্মী হয়ে কাজ করছি। আমি বর্তমানে কলাগাছিয়া ইউনিয়নে সাধারন সম্পাদক পদ প্রত্যাশী। দলই নির্ধারন করবে আমি কোথায় থাকব।
কলাগাছিয়া ইউনিয়নে কমিটি প্রসঙ্গে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এমএ রশিদ বলেন, কলাগাছিয়া ইউনিয়নে আ’লীগের কমিটি অত্যাসন্ন। আশাকরি আমার নেতাকর্মীরা একটি সুন্দর কমিটি আমাকে উপহার দিবে। তবে এক্ষেত্রে দলের জন্য নিবেদিতরাই স্থান পাবে।