ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিনের প্রথম দুই সেশন ম্যড়ম্যাড়ে রূপ নেয়। ব্যাট হাতে বাংলাদেশি বোলারদের শাসন করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস আর দীনেশ চান্দিমাল। তাতে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ৩৬৫ রান টপকে লিড পায় শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় সেশনের বিরতিতে অনেকেই মিলিয়ে ফেলেন সিরিজের প্রথম টেস্ট অর্থাৎ চট্টগ্রামের সঙ্গে। সে ম্যাচ নিষ্প্রাণ ড্রয়ে শেষ হয়। ঢাকা টেস্টেও সে পথেই আগাতে থাকে।
তবে রোমাঞ্চের পুরোটা যেন তোলা ছিল বৃহস্পতিবার টেস্টের চতুর্থ দিনের তৃতীয় ও শেষ সেশনে। সেঞ্চুরিয়ান দুই ব্যাটসম্যান উইকেটে থাকার পরেও বাকি ৫ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা। তাদের ইনিংস থামে ৫০৬ রানে। সফরকারীরা লিড পায় ১৪১ রানের। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে নেমে প্রথম ইনিংসের মতোই হতশ্রী শুরু মুমিনুল হকের দলের। সেবার ২৪ রানে ৫ উইকেট খোয়ানো টাইগাররা চতুর্থ দিন শেষ করেছে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৪ রানে।
বাংলাদেশ দল দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করলেও শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসের থেকে এখনো পিছিয়ে ১০৭ রানে। হাতে আছে ৬ উইকেট। চতুর্থ দিনের তৃতীয় সেশনে মিরপুরের উইকেটের রঙ যেভাবে বদলে গেছে, তাতে প্রথম ইনিংসের মতো খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো দুষ্কর অনেকে। আবার ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখতে না পারলে পরাজয়ই পরিণতি হবে বাংলাদেশ দলের। বলা যায়, ইনিংস হারের শঙ্কা নিয়েই চতুর্থ দিন শেষ করল স্বাগতিকরা।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে এসেছিল ২৭২ রান। ব্যক্তিগত শতক তুলে নেন দুই ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম আর লিটন দাস। দ্বিতীয় ইনিংসেও তাদের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। মুশফিক ১৪ এবং লিটন ১ রান নিয়ে আগামীকাল (শুক্রবার) ঢাকা টেস্টের পঞ্চম ও শেষদিন ব্যাটিংয়ে নামবেন।
শ্রীলঙ্কাকে গুঁটিয়ে দিয়ে ব্যাটিং নামা বাংলাদেশ দল ইনিংসের শুরুর ওভারে বিপদে পড়তে পারত। তবে কাসুন রাজিথার বল ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ের ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে জমা হলেও লঙ্কানরা বুঝতে না পারায় এ যাত্রায় শূন্য রানে জীবন পান জয়। তবে দেখেশুনে খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল অসিথা ফার্নান্দোর বলে স্লিপে কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দেন ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে।
এরপর শুরু হয় আসা-যাওয়ার মিছিল। রান আউটে কাটা পড়ে ২ রানে ফেরেন তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত। শান্তর মতো আরেক দফা ব্যর্থ মুমিনুলের ব্যাট। ধারাবাহিকভাবে রান খরায় ভোগা এই বাঁহাতি আজ ফিরেছেন কোনো রান না করেই। ব্যর্থতার মিছিলে নাম তুলেছেন জয়। তাকে ১৫ রানে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানিয়েছেন ফার্নান্দো। এতে ২৩ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ দল।
সেখান থেকে দলের হাল ধরায় চেষ্টায় মুশফিক-লিটন জুটি। অবিচ্ছেদ্য ১১ রানের পার্টনারশিপে দিনের খেলা শেষ করেছেন তারা।