নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের একটি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে সিল দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের পর ভোট বর্জন করেছেন জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী। পরে ওই বিদ্যালয়ের নারী ও পুরুষ কেন্দ্র দুটির ভোটগ্রহণ বাতিল করা হয়।
রোববার সকাল ১০টার দিকে আড়াইহাজার উপজেলার রামচন্দ্রদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে বলে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক জানান।
তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টির প্রার্থীর সমর্থকরা কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সামনে ব্যালট বাক্স ভাঙচুর করার কারণে ওই বিদ্যালয়ের নারী ও পুরুষ কেন্দ্র দুটির ভোটগ্রহণ বাতিল করা হয়েছে।”
এদিকে বেলা ১১টার দিকে রামচন্দ্রদী বাজারে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন নারায়ণগঞ্জ-২ আড়াইহাজার আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী আলমগীর সিকদার লোটন৷
অভিযোগে লোটন বলেন, সকাল ১০টার দিকে তারা জানতে পারেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর ও ঈগল প্রতীকের শরীফুল প্রার্থীর সমর্থকরা একজোট হয়ে নৌকার পক্ষে ব্যালটে সিল মারছেন। এ সময় জাতীয় পার্টির সমর্থকরা সেখানে গিয়ে বিক্ষোভ করেন। তখন পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়; এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা ও ছররা গুলি করে।
এ ঘটনায় দুই সমর্থক আহত হয়েছেন বলে লোটন দাবি করলেও তাদের নাম-পরিচয় প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।
নৌকার পক্ষে ব্যালটে সিল দিলেও প্রশাসন ‘নির্বিকার’ অভিযোগ করে লোটন আরও বলেন, “আমরা প্রতিবাদ জানালে পুলিশ আমাদের ওপর গুলি ছোড়ে এবং লাঠিপেটা করে৷ এখন ভোটের কোন সুষ্ঠু পরিবেশ নেই; আমি এ ভোট বর্জন করলাম৷”
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, “রামচন্দ্রদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাপার প্রার্থীদের একটি পক্ষ গিয়ে ব্যালট বাক্স ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য লাঠিচার্জ করে ও ধাওয়া দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেটও ছোড়া হয়৷ তবে এতে কেউ আহত হয়নি।”
এ ঘটনায় পুলিশ ১৩ জনকে আটক করেছে; যার মধ্যে জাপার প্রার্থী আলমগীর সিকদার লোটনের ছোট ভাই জাহাঙ্গীর সিকদার ঝোটনও রয়েছেন বলে জানান এসপি৷
অভিযোগের বিষয়ে জানতে লোটনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমরা ভাঙচুর করি নাই।”
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফুল ইসলামও। তিনি বলেন, “আমি ওই কেন্দ্রে ঝামেলা হওয়ার কথা শুনেছি, কিন্তু সেখানে যেতে পারিনি৷ আর আমার লোকজন নৌকার হয়ে সিল মারবে কেন? আমি তো আর তার দল করি না৷ এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন৷”
আর নৌকার প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেন নাই।