নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ২১ জন প্রিজাইডিং ও ২ জন সহকারি প্রিজাইডিং কর্মকর্তা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুর রাজনীতিতে যুক্ত উল্লেখ করে তাদের পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আলমগীর সিকদার লোটন।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) লিখিত আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলমগীর সিকদার লোটন। তিনি জানান, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তাদের পরিবর্তন প্রয়োজন মনে করে আমি রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর আবেদন জমা দিয়েছি মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর)।
আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, অভিযোগ উল্লেখিত ব্যাক্তিরা গত স্থানীয় সরকার ও জাতীয় নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বিতর্কিত হয়েছিলেন। কারণ তারা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে রাজীনীতি করে থাকে এবং সরাসরি কর্মী। তাছাড়ও ২৫ ডিসেম্বর এদের মধ্যে ৯ জন খাগকান্দা এলাকায় নির্বাচনী সমাবেশে অংশ নিয়েছেন এবং নৌকার পক্ষে ভোট চান।
তারা হলেন, প্রিজাইডিং অফিসার গিয়াস উদ্দিন সরকার, জাহেদুল হক, কফিলউদ্দিন,শাখাওয়াত হোসেন, হায়াতুজ্জামান,আহাম্মদ আলী, জাহাঙ্গীর আলম ভুইয়া, জানে আলম, মো. ফজলুল হক, দুলাল মিয়া, মইনুল হোসেন, মোজাম্মেল হক, ফারুক হোসেন, মোতাহার হোসেন, মৃদৃলকান্তিপাল, মাহাবুব আলম, সোলায়মান মিয়া, লোকনাথ পোদ্ধার, দেলোয়ার হোসেন, নুরুল হক ও আনোয়ারুজ্জামান খানঁ, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও লোকমান হোসেন।
তিনি চিঠিতে আরো উল্লেখ করেন, এ সকল ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে একাধিকবার এমপি বাবুর সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গেছে। এমপি বাবু এবার নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার পর এ সকল শিক্ষক ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কেউবা দু’ আঙুল উচিয়ে ভি চিহ্ন দেখিয়েছেন। যার প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। ফেসবুকসহ সোস্যাল মিডিয়ায় এ সকল দলকানা শিক্ষকদের বিভিন্ন ছবি প্রকাশিত হয়েছে। অনেক সরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বাদ দিয়ে তার প্রতিষ্ঠিত একটি কিন্ডারগার্টেন ইউনাইটেড স্কুল এন্ড কলেজ থেকে অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১৪ জন লোক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, মোজাম্মেল নামের একজন প্রিজাইডিং অফিসার মাহমুদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ও মইনুল হোসেন মানিক ফতেহপুর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছে। অথচ তাদের প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যা আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ফেইসবুক পেইছ থেকে পেয়েছি। আওয়ামীলীগ প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুর স্ত্রী সায়মা আফরোজ ইভা আড়াইহাজার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত। শোকজের পর তার দলবল নিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চাচ্ছে। তার অধীনের সকল কর্মকর্তা নির্বাচনের ভোট গ্রহন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছে। সেই সাথে তারা বাবুর পক্ষে ভোটও চাইছে।
সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তদন্ত সাপেক্ষ এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবী জানান তিনি। অতএব ‘দলকানা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা’র পরিবর্তে নতুন করে নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়ার দাবি জানান তিনি।
আবেদনের সাথে তিনি সোসাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবি, ভিডিও ফুটেজ ও পেপার কাটিং সংযুক্ত করেছেন।