রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস বাদ দিয়ে কেউ যদি নিজ জেলা অথবা রাজধানীর উত্তরা ও যাত্রাবাড়ী অফিসে আবেদন করে তাহলে আগে পাসপোর্ট হাতে পাবেন বলে জানিয়েছেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ুব চৌধুরী। তিনি বলেন, আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিন যে সক্ষমতা রয়েছে, তার চেয়ে ১০ গুন বেশি ব্যক্তি আবেদন করছেন। যার কারণে এখানে পাসপোর্ট পেতে দেরি হচ্ছে। আবার নানারকম ভুল ভ্রান্তির কারণেও পাসপোর্ট আটকে থাকছে।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে ডিআইপি-পাসপোর্ট রিপোর্টার্স ফোরামের মতবিনিময় সভায় মহাপরিচালক এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে এই মুহূর্তে প্রতিদিন পাসপোর্ট দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে প্রায় দুই হাজার। কিন্তু প্রতিদিন আবেদন পড়ছে কয়েকগুণ। আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়াও কম্পিউটারে অটো করা রয়েছে। যার কারণে কেউ যখন আবেদন করে ওই দিনের স্লট শেষ হয়ে থাকলে পরের দিনের স্লট নিয়ে নেয় অটোমেটিক্যালি। পরের দিনেরটাও শেষ হলে তারপরের দিন পূরণ হবে।
২৮ সেপ্টেম্বর যারা আবেদন করেছেন তারা স্লট পেয়েছেন আগামী ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত। এই পদ্ধতিতে কারও হাত নেই বলে জানান ডিজি। আগারগাঁওয়ে না এসে যাত্রাবাড়ী বা উত্তরায় যান তাহলে এখানকার চেয়ে আগে পাসপোর্ট হাতে পাবেন। আবার কেউ যদি নিজ জেলায় আবেদন করেন তাহলে সেখান থেকে আরও আগে পাসপোর্ট হাতে পাবেন। পাসপোর্ট অফিসে অধিক ভিড়ের কারণ হিসেবে ডিজি বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে কয়েকগুণ ব্যক্তি পাসপোর্ট করতে চলে এসেছেন। যারা আসছেন তাদের মধ্যে এক শ্রেণীর হলেন, ই-পাসপোর্টধারী, এক শ্রেণী এমআরপিধারী ও আরেক শ্রেণী সমস্যা সমাধান ও তথ্য জানতে আসেন। আবার অনেকে আসেন ভুল আবেদন এবং এনআইডির পরিবর্তে জন্ম নিবন্ধন নিয়ে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, যতদিন পর্যন্ত শতভাগ ই-পাসপোর্ট দেওয়ার ক্যাপাসিটি অর্জন সম্ভব হবে না ততদিন এমআরপি চালু থাকবে। তবে বাংলাদেশে আমরা এমআরপি নিরুৎসাহিত করছি। এখন যেসব এমআরপি দেওয়া হচ্ছে তার ৯৯ ভাগ প্রবাসী। প্রবাসীদের এইজন্য দেওয়া হচ্ছে যে, ৭৫ টি মিশনে এখনও ই পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু করা যায়নি। করোনা অনেকখানি পিছিয়ে দিয়েছে। এখনো অনেক দেশ অনুমতি দেয়নি আমাদের টিম পাঠানোর জন্য। বর্তমানে মাত্র পাঁচটি মিশনে ই-পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সাড়ে ১১ লাখ ই-পাসপোর্ট জনগণের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ অবস্থা তৈরি নাহলে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতো। একই সাথে প্রায় সমপরিমাণ এমআরপি পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছে বলে জানান ডিজি।
এজেন্ট নিয়োগের বিষয়ে ডিজি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম যারা পাসপোর্টের ফরম পূরণ করতে পারেন না তাদের সহযোগিতার জন্য প্রত্যেক অফিসে একজন করে বাইরে থেকে এজেন্ট নিয়োগ করা যায় কিনা ! কারণ বাইরে যারা এই কাজ করছেন তারা একেক গ্রাহকের কাছে একেকরকম টাকা আদায় করছে। তাদের জবাবদিহিতার আওতায়ও আনা সম্ভব হয় না। তাই একটি ফি নির্ধারণ করে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হলে কেউ প্রতারণার শিকার হতো না। কিন্তু মিডিয়া নেতিবাচক রিপোর্ট করায় আমরা এই বিষয়টি নিয়ে এই মুহূর্তে আর ভাবছি না।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিআইপির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) সেলিনা বানু, পরিচালক (প্রশাসন) শিহাব উদ্দিন খান, উপ-পরিচালক, ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক কর্নেল নুরুস সালাম, উপ-পরিচালক (প্রশাসন) ইসমাইল হোসেন, উপ-পরিচালক (অর্থ) আল আমিন মৃধা, পাসপোর্ট রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আছাদুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, সহসভাপতি জামিউল আহসান সিপু, সাংগঠনিক সম্পাদক নেহাল হাসনাইন, অর্থ সম্পাদক উজ্জল হোসেন জিসান ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জামিল খান।