শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪০ পূর্বাহ্ন

তাইজুল কীর্তির পরও অস্বস্তিতে বাংলাদেশ

  • আপডেট সময় বুধবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৩, ৩.৫০ এএম
  • ১৫৬ বার পড়া হয়েছে

আয়ারল্যান্ড টেস্ট ক্রিকেটে নতুন, কিন্তু দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে আরও একটি উইকেটের আশায় পুরোনো কৌশল বেছে নিল বলবার্নির দল। শেষ পর্যন্ত হলোও তাই। দিনের শেষ বলেই সেই ম্যাকব্রাইনের শিকার ওপেনার তামিম ইকবাল! দিন শেষে ১০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ রান করেছে ৩৪। ১৮০ রানে এগিয়ে থেকে মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন শেষ করল আয়ারল্যান্ড। এর আগে আয়ারল্যান্ডকে ২১৪ রানে অলআউট করে দেয় বাংলাদেশ। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ৫ উইকেট নিয়েছেন। আয়ারল্যান্ডের হ্যারি টেক্টর সর্বোচ্চ ৫০ রান করেছেন।

উইকেট ছিল ব্যাট করার জন্য বেশ সহায়ক। তাতে নেমে অভিজ্ঞতার অভাবে বেশিদূর এগুতে পারল না আয়ারল্যান্ড। তাইজুল ইসলামের বাঁহাতি স্পিনের ধাঁধা মেলাতে পারল না তারা। শেষ সেশনে কোনমতে দুইশো পার করেই গুটিয়ে গেছে সফরকারীরা। আইরিশদের আটকে দিতে বাংলাদেশের সেরা বোলার তাইজুল। ৫৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ৪৩ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, ৫৪ রানে ২ শিকার ধরেন ইবাদত হোসেনও। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বল করেছেন ¯্রফে ৩ ওভার।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে সতর্ক শুরু এনেছিলেন জেমস ম্যাককুলাম আর মুরে কমিন্স। শুরুতেই আঘাত হানতে চারটি সিøপ, একটি ওয়াইড সিøপ নিয়ে আক্রমণ করতে থাকে বাংলাদেশ। বেশিক্ষণ প্রতিরোধ গড়তে পারেননি আইরিশ দুই ওপেনার। পঞ্চম ওভারে কমিন্সকে এলবিডব্লিউতে কাবু করেন শরিফুল ইসলাম। অধিনায়ক বলবার্নিকে নিয়ে আরও কিছুক্ষণ চালিয়ে যান ম্যাককুলাম। জুটিটা বেড়ে উঠার আভাস দিতেই অবশ্য নিভে যায়। ইবাদতের বলে দ্বিতীয় সিøপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ম্যাককুলাম। ২৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় তারা।

দ্বিতীয় উইকেটে প্রতিরোধের চেষ্টায় ছিলেন বলবার্নি-টেক্টর। আইরিশ অধিনায়ককে অনেকটা থিতুও মনে হচ্ছিল। প্রথম সেশনটা আর কোন বিপর্যয় ছাড়া পার করে দেওয়ার কাছে ছিলেন তারা। তবে তাইজুলের বলে সুইপ করতে গিয়ে বিপদটা ডেকে আনেন বলবার্নি। ভেতরে ঢোকা বলে পায়ে লাগিয়ে এলবিডব্লিউতে কাবু হয়ে যান তিনি। ভেঙে যায় ২১ রানের ছোট্ট জুটি। ৫০ বলে ১৬ করে ফেরেন বলবার্নি। ৪৮ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড।

লাঞ্চ বিরতির আগে বাকিটা সময় টেক্টরের সঙ্গে দাঁড়িয়ে যান ক্যাম্ফার। লাঞ্চের পরও জমে যায় তাদের জুটি। দুজনেই অভিষিক্ত। টেক্টরের এর আগে ১০টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেললেও ক্যাম্ফারের ছিল ¯্রফে একটি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা। তবে তারা যেভাবে ব্যাট করেছেন তাতে লাল বলে খুব একটা আনকোরা মনে হয়নি। কাভার ড্রাইভ, পুলে বের করেছেন বাউন্ডারি। দ্বিতীয় সেশনও পার করে দেয়ার পথে ছিলেন তারা। এক প্রান্তে পেস, আরেক প্রান্তে স্পিন দিয়ে জুটি ভাঙার চেষ্টা করে হতাশ হচ্ছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত মিরাজ আনেন ব্রেক থ্রু। ৪২তম ওভারে ভেতরে ঢোকা দারুণ এক ডেলিভারিতে ফিফটি করা টেক্টরকে বোল্ড করেন মিরাজ। এতে ভাঙে চতুর্থ উইকেটে ৭৪ রানের জুটি।

জুটি ভাঙতেই দ্রুত আরেক উইকেট হারিয়ে ফেলে আইরিশরা। আয়ারল্যান্ডের এই দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ছিলেন পিটার মুর। জিম্বাবুয়ে ছেড়ে আসার পর এই প্রথম আইরিশদের হয়ে খেলতে নামেন তিনি। নিজের সর্বশেষ টেস্টে ২০১৮ সালে এই মাঠেই ৮৩ রানের ইনিংস ছিল তার। অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ মুর করেন হতাশ। তাইজুলকে তুলে মারতে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে থামেন তিনি। খানিক পর ক্যাম্ফারকেও এলবিডব্লিউতে বিদায় করেন তাইজুল। দুই রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় সফরকারীরা।

প্রথম দুই সেশনে এক ওভারও বল করেননি সাকিব। তিনি বল করতে আসেন ৬৫ ওভারের পর। এসে তিন ওভার বল করে আর করেননি। অ্যান্ডি ম্যাকব্রেইনকে আউট করে ৭ম উইকেট তুলেন ইবাদত হোসেন। বাকি তিন উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েন তাইজুল-মিরাজ। কিপার ব্যাটার লোরকান টাকার লড়াইয়ে রেখেছিলেন আইরিশদের। ৮ম উইকেটে মার্ক অ্যাডায়ারকে নিয়ে ৪০ রান যোগ করেন তিনি। ৭৪ বলে ৩৭ করা টাকারকে তাইজুলের বলে স্টাম্পিং করে থামান লিটন দস। ৫২ বলে ৩২ করা অ্যাডায়ারকেও তুলে নেন তিনি। গ্রাহাম হিউমকে বোল্ড করে ইনিংস মুড়ে দেন মিরাজ।

আয়ারল্যান্ডের মতো বাংলাদেশ দলের ইনিংসের শুরুটাও ভালো হয়নি। সাদা বলের ক্রিকেটে দারুণ ছন্দে থাকা ওপেনার নাজমুল হোসেন লাল বলের খেলায় ফিরে আজ এক বলও টিকলেন না। মার্ক এডেয়ারের ইনিংসের প্রথম ওভারে কোনো রান না করেই আউট হন এই বাঁহাতি। আউটের দৃশ্যটাও নিশ্চয়ই স্মৃতিতে রাখতে চাইবেন না নাজমুল। এডেয়ারের অফ স্টাম্পের বাইরের যে বলটি সহজেই ছেড়ে খেলতে পারতেন, সে বলই লেগের দিকে টেনে খেলার চেষ্টায় বোল্ড হন। বাঁহাতি ওপেনারের ইনিংসের প্রথম বল ছিল সেটি।

সে ধাক্কাটা অবশ্য সামলে নেন তামিম ও তিনে নামা মুমিনুল হক। দিন শেষে অপরাজিত থাকার চেষ্টায় সফলই ছিলেন দুই বাঁহাতি। বাজে বল থেকে বাউন্ডারি আসছিল, সঙ্গে এক-দুই রানে প্রান্ত বদল। কিন্তু তামিমের দুর্ভাগ্য, ম্যাকব্রাইনের ইনিংসের শেষ বলটি উইকেটে গ্রিপ করে, বাউন্সও। তামিম সামনে ঝুঁকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে গালিতে ক্যাচ আউট হন। আউট হওয়ার আগে ৩৬ বলে ২১ রান করেন তামিম। আর ব্যাটিং ব্যর্থতায় শুরু হওয়া আইরিশদের দিনটা শেষ হয় তামিমের উইকেট উদযাপনে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort