শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:১৪ অপরাহ্ন

ওমান জয়ে স্বস্তি

  • আপডেট সময় বুধবার, ২০ অক্টোবর, ২০২১, ৫.১৬ এএম
  • ৪০১ বার পড়া হয়েছে

ওমানের স্কোর বোর্ডে মাত্র ৩ উইকেটে ৮১ রান। তখনও তাদের হাতে ৯ ওভার। বাংলাদেশের দর্শকরা তখন মাঠ ছাড়তে শুরু করেছে। অনেকেরই চোখের কোণে জল। লজ্জার হার দেখার আগে মুখ লুকিয়ে মাঠ ছাড়ার চেষ্টা। কিন্তু সেখান থেকে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিলেন মেহেদী হাসান। ১২ রান করা ওমান অধিনায়ক জিশান মকসুদকে দেখালেন সাজঘরের পথ। তবে তখনও বাংলাদেশের হুমকি হয়ে ব্যাট হাতে ক্রিজে বহাল ওপেনার জাতিন্দার সিং।
তাকে সাজঘরে ফিরিয়ে দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুললেন সাকিব আল হাসান। শেষ পর্যন্ত ওমানের বিপক্ষে ২৬ রানে জয় পেলো বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বেঁচে রইলো টাইগারদের টিকে থাকার আশা। শেষ ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে হারাতে পারলেও যে শঙ্কা কাটবে, তা নয়। সেই ম্যাচে থাকবে অনেক অংকের হিসাবও।
মাসকাটের আল আমেরাত স্টেডিয়ামে গতকাল টসে জিতে ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ে ১৫৩ রানে অলআউট হয় মাহমুদুল্লাহ দল। জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশকে ভয় ধরিয়ে দিলেও শেষ পর্যন্ত স্বাগতিকরা থামে ১২৭/৯-এ। ৪২ রান ও বল হাতে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা সাকিব।
তাসকিন আহমেদের খরুচে ওভারের পর বাংলাদেশ দলে স্বস্তি এনে দিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। এলবিডব্লিউ করে ফিরিয়ে দিলেন আকিব ইলিয়াসকে। লেগ স্টাম্পে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া বল ব্যাটে খেলতে পারেননি ডানহাতি এই ওপেনার। আম্পায়ার জোরালো আবেদনে সাড়া দিয়ে আউট দিলে রিভিউ নেন ইলিয়াস। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায় বল লাগতো অফ স্টাম্পে। কিন্তু দারুণ এক শুরুর পর সেই ওভারেই বিস্ময়করভাবে ওভারে পাঁচটি ওয়াইড দেন মোস্তাফিজ। লেগ স্টাম্পের বাইরে বল দিয়ে হজম করেন ছক্কা! ৩ ওভারে ওমানের স্কোর ১ উইকেটে ২৬। এরপর মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের করা তৃতীয় ওভারে হাতছাড়া হলো দুটি সুযোগ। রান আউট থেকে বেঁচে গেলেন জাতিন্দার সিং। পরে থার্ড ম্যান অঞ্চলে মোস্তাফিজুর রহমানকে কঠিন ক্যাচ দিয়ে টিকে গেলেন কাশ্যপ প্রজাপতি। ঝাঁপিয়ে দুই হাতে বল ধরলেও মুঠোয় রাখতে পারেননি মোস্তাফিজ। ওই ওভারেই ফিজকে ছক্কা মেরে পরের বলে কিপার নুরুল হাসান সোহানের হাতে ধরা পড়েন কাশ্যপ প্রজাপতি। ৮ রানে জীবন পাওয়া এই ব্যাটার থামেন ২১ রানে। তার ১৮ বলের ইনিংসে দুই ছক্কার পাশে একটি চার। ৬ ওভারে ওমানের স্কোর ২ উইকেটে ৪৭। ক্রিজে জাতিন্দারের সঙ্গী জিশান মাকসুদ।
ষষ্ঠ ওভারে আক্রমণে ফিরে উইকেটের সুযোগ তৈরি করলেন মোস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি পেসারের বল আকাশে তুলে দিলেন জাতিন্দর সিং। অনেক সময় পেয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ, বলের নিচে গিয়ে দুই হাতে ধরেছিলেনও। কিন্তু মুঠোয় আটকে রাখতে পারলেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক। প্রথম ১০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৬৯ রান করে ওমান। বাংলাদেশকে বিদায় করে সুপার টুয়েলভে যেতে শেষ ১০ ওভারে ৮৫ রান চাই তাদের।
আঁটসাঁট বোলিং করা মেহেদী হাসানকে এলোমেলো করে দিতে চাইলেন জিশান মাকসুদ। ওড়াতে চাইলেন ছক্কায়। কিন্তু পারলেন না টাইমিং করতে, কিছুটা দৌড়ে গিয়ে চমৎকার ক্যাচ মুঠোয় জমালেন মোস্তাফিজুর রহমান। সুইপের লেংথে ছিল না তবুও টেনে খেললেন ওমান অধিনায়ক। আকাশে উঠে যাওয়া ক্যাচ ডিপ স্কয়ার লেগে তালুবন্দি করতে কোনো ভুল করেননি মুস্তাফিজ। ভাঙে ৩৪ রানের জুটি।
সেখান থেকে ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন সাকিব আল হাসান। সাকিবের পরপর দুই বলে দুই ক্যাচ মাহমুদুল্লাহর। আয়ান খানের পর লং-অফে ক্যাচ দেন নাসিম খুশি। শেষ ১৮ বলে স্বাগতিকদের প্রয়োজন ছিল ৪৭ রানের। তবে সাকিবরে পর ওভারে জোড়া আঘাত হানেন মোস্তাফিজ। আর ১২৭/৯ সংগ্রহ নিয়ে ইনিংস শেষ করে ওমান। ৪ ওভারের স্পেলে ২৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন সাকিব। ৩৬ রানে চার উইকেট নেন মোস্তাফিজ। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চার ওভারের স্পেলে যথাক্রমে ১৪ ও ১৬ রান দিয়ে একটি করে উইকেট নেন মেহেদী-সাইফুদ্দিন।
এর আগে বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা জাগিয়েও দেরশ’র আশপাশেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ১৫৩ রানে অলআউট হয় মাহমুদুল্লাহর দল।
সর্বোচ্চ ৬৪ রান আসে নাঈম শেখের ব্যাট থেকে। ৫০ বলের ইনিংসে চারটি বাউন্ডারি ও তিনটি ছক্কা হাঁকান তরুণ টাইগার ওপেনার।
একাদশে ফিরেই ফিফটি হাঁকালেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ওমানের বিপক্ষে ম্যাচে ৪৩ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন বাংলাদেশের এ বাঁহাতি ওপেনার। এতে তিনটি করে চার ছয় হাঁকান নাঈম। আগের ম্যাচে নাঈমের বদলে একাদশে জায়গা পেয়েছিলেন সৌম্য সরকার। রান পেয়েছেন সাকিব আল হাসানও। তবে ব্যক্তিগত ৪২ রানে রান আউটে কাটা পড়ে সাকিবের উইকেট। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ করেন ১০ বলে ১৭ রান।
এর আগে ৯ বলের ব্যবধানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। নাঈম-সাকিবের তৃতীয় উইকেট জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামলায় টাইগাররা। ৮০ রানের জুটি গড়েন নাঈম-সাকিব। এতে ১৩.২তম ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১০১/২-এ। কিন্তু পরে খেই হারায় টাইগাররা।
শুরুতেই লিটন দাস ফেরায় তিনে ব্যাট করতে নামেন শেখ মেহেদী। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ দিকে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছিলেন তিনি। আগের ম্যাচের ফর্ম টেনে আনতে পারেননি এই তরুণ অলরাউন্ডডার। সাজঘরে ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই। ওমান পেসার ফায়াজ বাটের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন মেহেদী (৪ বলে ০)। নিজের বলেই ক্যাচ নেন ফায়াজ।
জীবন পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি লিটন দাস।। এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফেরেন বাংলাদেশ ওপেনার (৭ বলে ৬ রান)। আগের ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেও ব্যর্থ ছিলেন লিটন (৭ বলে ৫ রান)। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন তিন তরুণ তারকা নুরুল হাসান সোহান (৩) আফিফ হোসেন (১) ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনও (০)। আর দৃষ্টিকটু শটে উইকেট খোয়ান দলের অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহীম (৪ বলে ৬ রান)।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort