নারায়ণগঞ্জ মহানগর আ’লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটিগুলো ২০২২সালের নভেম্বর মাসের মধ্যেই দ্রæত ঘোষনা করবে বলে কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন। তাই আসন্ন কমিটিতে বন্দরে ৯টি ওয়ার্ড পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান পেতে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দিপনার কমতি নেই। যার যার অবস্থান থেকে লবিং তদবির করতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। শীর্ষ নেতাদের কাছে যার যার অবস্থান জানান দিতে গোপনে কাজ করে যাচ্ছে। তবে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারা বলছেন দূর্নীতি ও অপকর্মের সাথে জড়িত যারা তাদের কোন গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হবেনা।
এরমধ্যে মহানগর আ’লীগের ১৯,২০ ও ২১নং ওয়ার্ডে একই পদে প্রতিদ্বন্দীতায় নেমেছে ৯জন প্রার্থী। এরা হচ্ছে মহানগর আ’লীগের ১৯নং ওয়ার্ড সভাপতি প্রার্থী জসিম উদ্দিন জসু,একই পদের জন্য প্রতিদ্বন্দী হয়েছেন আলমগীর হোসেন ও ফয়সাল মোহাম্মদ সাগর। ২০নং ওয়ার্ডে আ’লীগের সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন সোহেল করিম রিপন,একই পদের জন্য জহিরুল ইসলাম জহির মুন্সি ও আসাদুজ্জামান খোকন। ২১নং ওয়ার্ডে আ’লীগের সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন নাজমুল হাসান আরিফ,একই পদে মোঃ ছালাউদ্দিন ও মনিরুজ্জামান খোকন।
তথ্যসুত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আ’লীগের ১৯নং ওয়ার্ডে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে ফয়সাল মোহাম্মদ সাগরের নাম গুঞ্জন রয়েছে। ওনি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৯নং ওয়ার্ডে দুই বারের কাউন্সিলর ছিলেন। বন্দর থানা আ’লীগের সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তার পিতা ১৯৮৪ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা থাকাকলীন কমিশনার ছিলেন।
তিনি জানিয়েছেন আমি ছোটকাল থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে আ’লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। দীর্ঘদিন থানা আ’লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলাম। পদ পদবী বড় ব্যাপার না। দেশকে ভালবাসি। আ’লীগকে ভালবাসি। আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হয়ে আজীবন দেশ সেবার ব্রত নিয়েই কাজ করে যাব।
একই পদে আরেক প্রার্থী জসিম উদ্দিন জসু মদনগঞ্জ এলাকার কৃতি সন্তান। সেও দীর্ঘদিন ধরে আ’লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। নারায়ণগঞ্জ মহানগর আ’লীগের সভাপতি সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের আস্তাভাজন লোক। বিভিন্ন কর্মসূচীতেও তার উপস্থিতি সরব থাকে।
আরেক সভাপতি প্রার্থী মোঃ আলমগীর হোসেন ১৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনিও দীর্ঘদিন ধরে আ’লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। বিগত দিনেও আ’লীগের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে তিনি নেতৃত্ব দিয়ে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারন করে তিনি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকল উন্নয়ণ কর্মকান্ড জনগনের দৌড়গোড়ায় পৌছে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আ’লীগের ২০নং ওয়ার্ডে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন সোহেল করিম রিপন। তিনি আ’লীগ পরিবারের সন্তান। তার পিতা মরহুম সাদেক আলী নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা কালীন কমিশনার ছিলেন। তার চাচা মফিজুল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশ আ’লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আ’লীগের প্রয়াত সাধারন সম্পাদক। ঘনিষ্ট সুত্রমতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে মফিজ চাচা বলে ডাকতেন। কেননা তিনি বঙ্গবন্ধু পাশে থেকে রাজনীতি করেছেন।
এছাড়াও সোহেল করিম রিপন মাহমুদ নগর ঈদগা ও কবরস্থান কমিটির সভাপতি। মাহমুদ নগর জামিয়া হাজী শাহজাদী বাইতুল কুরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসার সেক্রেটারী ছিলেন। এছাড়াও ২০নং বেপারীপাড়া সপ্রাবি’র সাবেক সভাপতি ও মাহমুদ নগর পঞ্চায়েত ও মসজিদ কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন আমি আ’লীগের ঘরের সন্তান। বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারন করে আ’লীগের রাজনীতি করি। ভালবাসি দেশকে। ভালবাসি আ’লীগকে। পদ পদবী পাই বা না পাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আজীবন কাজ করে যাব।
একই পদে আরেক সভাপতি প্রার্থী জহির মুন্সী তিনি বয়সে নুজ্য হলেও সাচ্চা আ’লীগার বলে জানিয়েছেন তার ঘনিষ্টজন। তবে তিনি সুস্থ্য থাকাকালীন আ’লীগের কোন প্রোগ্রাম মিস করেন না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়েই তিনি এ বয়সেও রাজনীতি করে যাচ্ছেন। এবার এই ওয়ার্ডে সভাপতি হয়ে দায়িতœ পালন করে দেশ সেবা করতে চান তিনি।
অপর সভাপতি প্রার্থী আসাদুজ্জামান খোকন মহানগর আ’লীগ সাধারন সম্পাদক এ্যাড.খোকন সাহার আস্তাভাজন লোক। বিভিন্ন সময়ে দলীয় কর্মসূচিতে তার মিছিলটিতে প্রচুর কর্মীসমর্থকদের সমাগম ঘটে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই এবার তিনি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে চান।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আ’লীগের ২১নং ওয়ার্ডে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে ইচ্ছাপোষন করেছেন বন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান আরিফ। দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না হওয়ায় তিনি এখনও ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবেই রাজনৈতিকভাবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। মুলত তিনি বন্দর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এমএ রশিদের আস্তাভাজন কর্মী। এছাড়াও তিনি বন্দর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ৩বারের সভাপতি ও ৯নং কলোনী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দলের দূর্দিনে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিএনপি-জামাত শাষনামলে তিনি হামলা মামলার শিকার হয়েছেন। দলীয় যে কোন কর্মসূচিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর ভিষন বাস্তবায়নে কাজ করছেন। এবার তিনি ২১নং ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেই প্রার্থী হয়েছেন।
অপরদিকে একই ওয়ার্ডের সভাপতি হিসেবে প্রার্থী হয়েছেন মো. ছাালাউদ্দিন। তিনি জানিয়েছেন তার পিতা মরহুম আব্দুল কাদির মেম্বার আ’লীগের প্রবীন নেতা ছিলেন। বন্দর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন। ওয়ান ইলিভেন কালীন যৌথবাহিনী এই ছাত্রলীগ নেতা ছালাউদ্দিনকে অমানুষিক নির্যাতন করেছিল। তারপরও তিনি দল ছেড়ে যাননি। বিএনপি জামাত শাষনামলে তিনি নির্যাতিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি ২১নং ওয়ার্ডে আ’লীগের রাজনীতিতে সকল কর্মকান্ডে সরব ভূমিকা পালন করে কাজ করছেন।
আরেক সভাপতি প্রার্থী মনিরুজ্জামান খোকন মহানগর আ’লীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড. খোকন সাহার আস্তাভাজন কর্মী। সে দীর্ঘদিন ধরে খোকন সাহার সাথে রাজনীতিতে সক্রীয় রয়েছে। এবার সে ২১নং ওয়ার্ডে আ’লীগের সভাপতি হিসেবে প্রার্থী হয়েছে বলে শুনা যাচ্ছে।