শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

১৩ বছরের অপেক্ষা শেষে ভারতের ঘরে বিশ্বকাপ

  • আপডেট সময় রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪, ৯.২২ এএম
  • ৩৩ বার পড়া হয়েছে

মহেন্দ্র সিং ধোনি মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নুয়ান কুলাসেকেরার বলে ছয় হাঁকাচ্ছেন, এটাই গত ১৩ বছর ধরে ভারতের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হয়ে ছিল। একটা বিশ্বকাপের জন্য এরপর থেকে হন্যে হয়ে ঘুরেছে টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু আসেনি। সাতমাস আগেই নিজেদের মাটিতে হেরেছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল।

সেই আক্ষেপ মিটল নিজ থেকে বহুদূরের মাটিতে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপ বার্বাডোজের কড়া রোদের নিচে আরেকবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত। ১৩ বছর পর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত। হোক ভিন্ন ফরম্যাটে। তবুও ভারতের পাশে এখন বিশ্বসেরার স্বীকৃতি। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের হিসেবে অপেক্ষাটা ১৭ বছর। ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরের শিরোপা ঘরে তুলেছিল ম্যান ইন ব্লুরা। সেটা দিয়েই শিরোপার পথে নেমেছিল ধোনির ভারত। লম্বা অপেক্ষা শেষে আবারও সেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়েই শিরোপাখরা ঘুচালো দলটা।

বার্বাডোজে উৎসবের মঞ্চ আগেই সাজিয়ে রেখেছিল ভারত। ১৭৬ রানের শক্ত সংগ্রহ তারা দাঁড় করায় ফাইনালের মঞ্চে। বল হাতে শুরুটাও ছিল চ্যাম্পিয়নদের মতোই। মাঝে কুইন্টন ডি কক আর হেনরিখ ক্লাসেন দাঁড়ালেন দেয়াল হয়ে। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার জয়টাও ছিল সময়ের ব্যাপার।

কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার নামের পাশে যে লেগে আছে চোকার্স তকমা। ২৪ বলে ২৬ রানের সমীকরণটাই আর মেলানো হয়নি তাদের। আর্শদ্বীপ সিং আর জাসপ্রিত বুমরাহ একের পর এক ডট ডেলিভারিতে চাপ বাড়িয়েছেন। সঙ্গী ছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। স্নায়ুচাপের লড়াইয়ে জয় হলো ভারতেরই।

শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৬ রান। হার্দিক পান্ডিয়ার ওই ওভারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি লাইনে মিলারকে দুর্দান্ত এক ক্যাচে ফেরালেন সুর্যকুমার যাদব। দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ শেষ হয়ে গেল সেখানেই। শেষ ওভারে এলো ৮ রান। ব্যর্থ হলো হেনরিখ ক্লাসেনের ২৭ বলে ৫৪ রানের দুর্দান্ত সেই ইনিংস। ৭ রানের জয়ে বিশ্বকাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন ভারত।

ম্যাচ শেষে আবেগতাড়িত রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি কিংবা হার্দিক পান্ডিয়ার মুখটাই বলে দিচ্ছিল এই বিশ্বকাপের জন্য কতটা মরিয়া ছিল পুরো ভারত। বিরাট কোহলি ফাইনালের দিন চাপের মুখে খেললেন এবারের বিশ্বকাপে নিজের সেরা ইনিংস। ৫৮ বলে তার ৭৬ রানের ওই একটা ইনিংস ভিত গড়ে দিয়েছিল তাদের।

এরপর নতুন বলে জাসপ্রিত বুমরাহ এবং আর্শদ্বীপ সিংয়ের সেই চিরচেনা সুইং। আউটসুইং বলে ফিরলেন রিজা হেন্ডরিকস। স্ট্যাম্পের অনেকটা বাইরের বল খেলতে গিয়ে আউট হলেন মার্করাম। ত্রিস্টান স্টাবস এসেছিলেন ডি কককে সঙ্গ দিতে। ম্যাচটা সেখান থেকেই নিজেদের দিকে ফেরাতে শুরু করেছিল প্রোটিয়ারা। ৩৮ বলে ৫৮ রানের ওই জুটিটাই ভারতকে দেখাচ্ছিল স্বপ্নভঙ্গের ভয়।

অক্ষর প্যাটেল পুরো আসরেই ছিলেন দলের ক্রাইসিস ম্যান। ফাইনালেও ব্যাট হাতে তিন উইকেট পতনের পর ভারতের ইনিংস নিজের হাতে মেরামত করেছিলেন বিরাট কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে। এরপর বল হাতেও দিলেন ব্রেকথ্রু। স্টাবস সরে খেলতে চেয়েছিলেন। বুদ্ধিদীপ্ত বলে তাকে করলেন বোল্ড। কিন্তু এরপরেই শুরু হলো হেনরিখ ক্লাসেনের ঝড়।

২৭ বলে ৫৪ রান। দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথম বিশ্বকাপ জেতানোর কক্ষপথে রেখেছিল বিধ্বংসী ওই ইনিংসটা। মাঝে কুইন্টন ডি কক ফিরলেন ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে। সম্ভবত নিজের শেষ ইনিংসটা খেললেন বার্বাডোজের এই মাঠেই। দক্ষিণ আফ্রিকা তবু স্বপ্ন দেখেছে। মাঠে যে ছিলেন ডেভিড মিলার। সেখান থেকে ম্যাচ হারার কোনো সুযোগই ছিল না দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য।

কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ পর্যন্ত হারল। প্রোটিয়ারা হেরে গেল বুমরাহ-পান্ডিয়া এবং আর্শদ্বীপের দুর্দান্ত ডেথ ওভার বোলিংয়ের কারণে। একের পর এক ডট বল ম্যাচটাকে কেড়ে নিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার কাছ থেকে। শেষ ৫ ওভারে এলো ২২ রান। ভারত আরও একবার ডেথ ওভারের কল্যাণে জয় পেল। তবে এই জয় তাদের এনে দিল বিশ্বসেরার খেতাব।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort