শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৮ অপরাহ্ন

সোনারগাঁয়ে ১৬ বছর বসয়ী এক কিশোরী ধর্ষণ হয়ে অন্তঃসত্বা

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০.৫৯ পিএম
  • ১ বার পড়া হয়েছে

সৌদি প্রবাসীর ধর্ষণে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ১৬ বছর বসয়ী এক কিশোরী অন্তঃসত্বা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে আব্দুর রব নামের এক ধর্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে শালিসি বৈঠকে বিএনপির “দুই” নেতার মাধ্যমে ১৩ লাখ টাকা রফাদফা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষজন।
অভিযুক্ত ধর্ষক আব্দুর রব উপজেলার বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক গ্রামের মৃত সুলতান মিয়ার ছেলে। ধর্ষিতা আনিকা একই এলাকার আহম্মদ মিয়ার মেয়ে। সোনারগাঁ উপজেলায় নদীবেষ্টিত একমাত্র চরাঞ্চল বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বারদী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের “দুই” বিএনপি নেতা এ রফাদফা করে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ১৩ লাখের মধ্যে তারা দু’জন তিন লাখ টাকা আত্মসাত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানী তথ্য ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক মধ্য পাড়া গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে সৌদি প্রবাসী আব্দুর রব পাশ্ববর্তী বাড়ির আহম্মদ মিয়ার ১৬ বছর বয়সী মেয়ে নুনেরটেক মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে তার বাসায় একা পেয়ে ধর্ষণ করে। তার ধর্ষণে ওই কিশোরী ৭ মাসের অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই গ্রামে গত সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় স্থানীয়দের সহায়তায় শালিসী বৈঠক বসে। বৈঠকে বারদী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মিয়া ও বারদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ও স্বপনসহ তাদের লোকজন ঘটনা ধামাচাপা দিতে ধর্ষণে অভিযুক্ত প্রবাসী আব্দুর রবকে ১৩ লাখ টাকা দেওয়ার মাধ্যমে রফাদফা করে। বৈঠকে আব্দুর রব মিয়া নগদ ৩ লাখ টাকা বিএনপি নেতা শাহজাহানের কাছে দেয়। ওই টাকা গতকাল বুধবার পর্যন্ত ভূক্তভোগী কিশোরীর পরিবারের কাছে পৌঁছায়নি বলে দাবি করেছেন। তবে ওই টাকা তার কাছে গচ্ছিত রয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। বাকি ১০ লাখ টাকা আগামী ২০ জানুয়ারী তারিখে দেওয়ার কথা রয়েছে।বিচার শালিসে থাকা বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, ১৩ লাখ টাকা রফাদফার পরেও বিএনপির দুই নেতাকে আরো ৩ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে এ শালিস বৈঠক হয়। এ তিন লাখ টাকা তারা ভাগবাটোয়ারা করার জন্য বিচার সালিসে রায় প্রদান করে। ভূক্তভোগী কিশোরীর ভাবি ফাহিমা আক্তার বলেন, আত্মীয়তার সম্পর্কে অভিযুক্ত আব্দুর রবের মেয়ের সঙ্গে ভূক্তভোগী কিশোরী প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর সুবাধে নানা ধরণের প্রলোভন দেখিয়ে সে তাকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে তাদের পরিবারকে জানানো হয়। পরে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। ঘড়িমসি করার কারনে কিশোরী ৭ মাসের অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়ে। সমাধান না করার কারনে সালিশ বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে ১৩ লাখ টাকা রফাদফা হয় ৩ লাখ টাকা নগদ দেওয়ার পরও কিশোরীর পরিবার একটাকাও পায়নি।
অভিযুক্ত আব্দুর রবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী জোহরা বেগমের দাবি, তার স্বামী এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত না। কেন ৩ লাখ টাকা দিয়েছেন এমন প্রশ্ন করা হলে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
বারদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, শালিসী বৈঠক হয়েছে। অর্থ লেনদেনের কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি অন্য সবার মতো বিচারে উপস্থিত ছিলাম৷ অর্থ লেনদেনের সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা৷ তবে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তরা সমোঝোতায় চলে গেছে। এতে আমাদের কিছু করার নেই৷
বারদী ইউনিয়নের সাবেক সদস্য ও ওয়ার্ড বিএনপি সাবেক সাধারন সম্পাদক আব্দুল কাদির ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি আমাদের কাছে জানালে আমি ও শাহজাহান মিলে অভিযুক্ত রবকে ১৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার রায় দেই। পরে আমাদের কাছে ৩ লক্ষ টাকা দেয়। বাকীটা দুই এক দিনের মধ্যে না দিলে আমরা সেই টাকা মেয়ের চাচা আলী হোসেনের কাছে দিয়ে দেই। পরে জানতে পারি দুই পক্ষই সমোঝোতায় চলে গেছে। আমাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি সঠিক নয়। সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ থানায় আসেনি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort