সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১০ টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সিদ্ধিরগঞ্জ। সম্প্রতি সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এখন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রহর গুনছেন সম্মেলনের। ১৯ বছর সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়নি। এদিকে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা না হলেও নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে চাঙ্গাভাব বিরাজ করছে। সিদ্ধিরগঞ্জের তৃনমুল ত্যাগী কর্মীদের দাবি এবার ক্লিন ইমেজের নতুন নেতৃত্ব আসুক যারা আগামী সংসদ নির্বাচনে দলকে সুসংগঠিত করে বিজয়ের পথ সুগম করতে পারে। বির্তকিত নব্য আওয়ামীলীগ যাতে কোনভাবেই কমিটিতে আসতে না পারে সে দাবিও জানায় তৃনমুলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মজিবর রহমান দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে একই পদে বহাল রয়েছেন। অন্যদিকে দেড় যুগের বেশি সময় পার করছেন সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া। দলটি টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকলেও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমে কোনো গতি নেই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ত্যাগী নেতাকর্মীরা। তাদের কারনে দলের কর্মকান্ড ঝিমিয়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিদ্ধিরগঞ্জের একাধিক ত্যাগী নেতা জানান, দলে নেতৃত্ব দিতে পারেন তৃণমূলে এমন ক্লিন ইমেজের যোগ্য নেতা থাকা সত্ত্বেও দলীয় পদ আঁকড়ে ধরে থাকতেই সম্মেলন করছেন না বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্তরা। এ নিয়ে কমিটির মধ্যে কয়েক বছর ধরেই চাপা ক্ষোভ চলে আসছে। সম্মেলনকে ঘিরে উৎসব উৎকণ্ঠার কমতি নেই। অনেকেই পদ প্রত্যাশীরা পদ পেতে নিজেদের অবস্থান থেকে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। তবে সিনিয়র নেতারা আশ্বাস দিয়েছেন দুঃসময়ের ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে। তবে দীর্ঘ দিন যাবৎ আওয়ামীলীগের কমিটি না হওয়ায় নেতৃত্বে অনেকটাই ভাটা পড়েছে ।
অনেক নেতাকর্মী মনে করেন এই পুরাতন কমিটি পূনরায় আসলে দল তো শক্তিশালী হবে তো দূরের কথা বরং দলের ক্ষতি হবে। তবে দলের একটি পক্ষ মনে করছেন সিদ্ধিরগঞ্জে পুরাতন কমিটি আরারো সম্মেলনে নতুন কমিটিতে স্থান পাক। আবার অনেকেই মনে করেন দলের ভিতর যদি তরুন নেতৃত্ব আসে তাহলে দল অনেকটাই চাঙ্গা হবে। এ নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামী লীগ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই ।
সিদ্ধিরগঞ্জের আওয়ামী লীগ কয়েক খন্ডে বিভক্ত হয়েছে। আর এর জন্য অনেক নেতারা সিনিয়র কিছু নেতাদেরই দায়ী করছেন কারণ তারা সিদ্ধিরগঞ্জ নিয়ে খবরদারি করছে। তবে তারা মনে করেন সম্মেলনে ভালো নেতৃত্ব আসবে এবং অগোছালো সিদ্ধিরগঞ্জে সুসংগঠিত হবে দল শক্তিশালী হবে।
সম্মেলনের তারিখ ঘোষনা না হলেও নেতাকর্মীরা চেয়ে আছে সিনিয়র নেতাদের সিদ্ধান্তের ওপর। এক সময় এই সিদ্ধিরগঞ্জকে নারায়ণগঞ্জের মধ্যে আওয়ামী লীগের ঘাটিঁ পরিচিত থাকলেও এখন অনেকটাই হারাতে শুরু করেছে। কারণ হিসেবে অনেক নেতারাই মনে করেন নিজেদের কিছু স্বার্থবাদী নেতা রয়েছে যারা নিজেদের আখের গোছানোর জন্য হাইব্রিড কাউয়াদের দলে ভোগাচ্ছে। আর আজ তাদের কারণেই সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামী লীগ কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে প্রায় সময়ই বিতর্কের সৃষ্টি করছে।
বিএনপি রাজনীতি থেকে আওয়ামীলীগে যোগদান করা সাবেক পৌর প্রশাসক মতিন প্রধান বলেন, আমি একজন ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ। এমপি শামীম ওসমানের কথার বাইরে আমি যাবোনা। আওয়ামী লীগ দিয়ে রাজনীতি শুরু করেছি। পরে অভিমান করে চলে গিয়েছিলাম। এখন আবার নিজের ঘরে ফিরে এসেছি। আমি সম্মেলনের মাধ্যমে দলের ত্যাগী নেতাদের মুল্যায়ন করা হোক কমিটিতে যাতে কোন বির্তকিতরা স্থান না পায়।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রীয়া বিষয়ক সম্পাদক প্রবীন রাজনীতিবিদ বিএম আমির হোসেন বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থানা সম্মেলনে আমি সভাপতি পদে নির্বাচন করবো তবে আমি কোন লবিং করছি না । তিনি বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জে এমন নেতৃত্ব আসুক যারা দুর্দিনে আওয়ামী লীগের পাশে থেকে দলকে এগিয়ে নিয়ে গেছে আমি মনে করি সেই নেতা কর্মীদের মূল্যায়ন করা হোক।
সিদ্ধিরগঞ্জের আওয়ামীলীগ নেতা হাজী মনিরুল ইসলাম বলেন, পুরাতন তো দীর্ঘসময় ছিল ক্লিন ইমেজের নতুনদের সুযোগ দেওয়া হোক । তিনি আরও বলেন, দল যদি মনে করে আমি যোগ্য তাহলে অবশ্যই মূল্যায়ন করবে।
এ বিষয়ে থানা আওয়ামীলীগের কার্যনিবার্হী সদস্য মোঃ রমজান আরী বলেন, এ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসুক এটাই আসা করি এবং ত্যাগী নেতা কর্মীদের মূল্যায়ন করা হোক তাহলেই সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামী লীগ সুসংগঠিত হবে এটাই মনে করি।