প্রেম স্বর্গীয়, প্রেম মানে না জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, মানে না হিংসা-বিদ্বেষ, যুদ্ধ-বিগ্রহ। যত প্রতিকূলতাই আসুক না কেন, প্রেম টিকে থাকে স্বমহিমায়, যুগে যুগে-কালে কালে। ভালোবাসার সম্মোহনী শক্তি সব প্রতিকূলতাকেই হার মানায়।
তেমনি নিজের প্রেমিক ওয়ালী উল্লাহকে কাছে পেতে জীবন সঙ্গী করতে সব বাধা অতিক্রম করে প্রেমিককে বিয়ে করার জন্য অসুস্থতার ভান (বুকে ব্যথা) করে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যায় প্রেমিকা খাদিজা। অতঃপর হাসপাতালেই তাদের প্রেমের সফলতা আসে বিয়ের মধ্য দিয়ে।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে চিটাগাংরোডের মা হাসপাতালে এ ঘটনাটি ঘটে। বর কনে দু’জনেই গার্মেন্ট কর্মী। কর্মক্ষেত্রে একে অপরের সাথে পরিচয়। পরিচয়ের সূত্র ধরেই গড়ে উঠে প্রেম।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বুকে ব্যথা নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের হাউজিং এলাকার মো: ইউসুফের মেয়ে খাদিজা (১৮) মা হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে আসেন। সঙ্গে ছিলেন তার মা-বাবা।
তখন হাসপাতালটির ডিউটিরত ডাক্তার মাহফুজ খাদিজাকে দেখে সন্দেহ করে। সে বুঝতে পারলো খাদিজা অভিনয় করছে। তখন সে রোগীর বাবা মাকে চেম্বার থেকে বাহিরে যেতে বলে। পরে জিজ্ঞেস করলে মেয়েটি জানায় তিনি ওয়ালীউল্লাহ নামে একজনকে ভালোবাসেন। তবে তার বিয়ে অন্য জায়গায় ঠিক করায় তাকে এই অভিনয় করতে হয়েছে।
তার আদৌ কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তিনি তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান হার্টের কয়েকটি টেস্ট করানোর জন্য। সবকিছু স্বাভাবিক এলে তিনি নিশ্চিত হন, তার কোনো অসুস্থতা ছিল না।
তখন বৃহস্পতিবার ডাঃ মাহফুজ খাদিজার প্রেমিককে কল করে তার প্রেমিকার অবস্থা অনেক খারাপ জানিয়ে তাকে আসতে বলে। ছেলে আসতে রাজি হলে তিনি মেয়ের বাবাকে বিষয়টি জানায়।
এ ঘটনায় মেয়ের বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে তার মেয়েকে বাড়িতে উঠতে দেবেন না বলে জানিয়ে দেন। কিন্তু খাদিজা বিয়ের দাবিতে অনড় সিদ্ধান্তের কথা ব্যক্ত করেন। একপর্যায়ে তাদের বিয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
অনেক বুঝানোর পর তারপর বিয়ের কার্যক্রম শুরু করে মেয়ের বাবা। তখন ছেলের পক্ষ থেকে ছেলের দুলাভাই আর খালা উপস্থিত হন। পরবর্তীতে হাসপাতালের সকল ডাক্তার, নার্স এবং স্টাফদের সহযোগিতায় সুন্দরভাবেই তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে মা হাসপাতালের রিসিপশনের দায়িত্বে থাকা মো. সোহাগ বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তাদের বিয়ে হয়েছে।