অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে মিথ্যা মামলায় স্বতন্ত্র প্র্রার্থীর আত্মীয়স্বজন ও নেতাকর্মীদের হয়রানি না করার দাবিতে এবং নিরীহ মানুষদের নির্যাতন না করার দাবি তুলে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং পুলিশের মহা-পরিদর্শক (আইজিপি) সহ ৮টি রাষ্ট্রীয় দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহমেদ।
২৫ অক্টোবর সোমবার ও ২৬ অক্টোবর মঙ্গলবার চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহমেদ এসব দপ্তরে লিখিত আবেদন করেন। লিখিত আবেদনে তিনি অভিযোগ তুলেছেন- ইউপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার লক্ষ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহমেদ ও তার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা কল্পকাহিনী সাঁজিয়ে গত ২২ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হয়রানিমুলক মামলা দায়ের করে হয়রানি করা হচ্ছে এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রভাবিত করে এলাকার নিরীহ জনগণ সহ তার লোকজনকে এলাকা ছাড়ার হুমকি ধমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
জানাগেছে- ২৫ অক্টোবর সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশন, পুুলিশ হেডকোয়াটার্স আইজিপির কমপ্লেইন মনিটরিং সেল, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এবং ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত আবেদন করেন তিনি। এছাড়াও ২৬ অক্টোবর মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন কমিশনার ও নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর একই আবেদন তিনি দাখিল করেছেন।
লিখিত আবেদনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহমেদ উল্লেখ করেন- আমি আগামী ১১ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে একজন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্র্রার্থী। গত ২১ অক্টোবর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশন আমার মনোনয়নপত্রটি যাচাই বাছাই করে বৈধ ঘোষণা করেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এলাকার জনগণ আমাকে সমর্থন করে এবং এলাকার উন্নয়ন করার লক্ষ্যে সর্বস্তরের জনগণ আমাকে চেয়ারম্যান হিসেবে ভোট দিতে চায়। এর ধারাবাহিকতায় আমার বিপরীত প্রার্থীরা ইর্ষান্বিত হয়ে আমাকে বিপদে ফেলার জন্য আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার লক্ষ্যে আমাকে ও আমার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা কল্পকাহিনী সাজিয়ে গত ২২ অক্টোবর শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার মামলা নং ১৭(১০)২১ হয়রানিমুলক মামলা দায়ের করে হয়রানি করে আসছে এবং আরো মিথ্যা হয়রানিমুলক মামলা দায়ের করার পায়তারা করে আসছে। এমনকি তারা নিজেরা নিজেরা নাটকীয় মিথ্যা ঘটনা সৃষ্টি করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রভাবিত করে এলাকার নিরীহ জনগণ সহ আমার লোকজনকে এলাকা ছাড়ার হুমকি ধমকি দিচ্ছে।
উক্ত বিষয়টি যাচাইঅন্তে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনটি যেনো সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ স্বাভাবিক গ্রহণযোগ্য হয় সেইদিক বিবেচনা করে এবং আমাকে ও আমার এলাকার সাধারণ জনগণকে যেনো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা না হয় সেই বিষয়টি অনুরোধ করছি।
অতএব, উক্ত বিষয়টি নিরপেক্ষ বিবেচনান্তে আমাকে ও আমার এলাকার সাধারণ জনগণকে যেনো মিথ্যা বানোয়াট উদ্দেশ্যপ্র্রণোদিত মামলা দিয়ে হয়রানি ও এলাকা ছাড়া হতে না হয় তার সু-ব্যবস্থা করার আকুল আবেদন করছি।
অন্যদিকে ঘটনা সুত্রে জানাগেছে, গত ২২ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে আলীরটেক এলাকায় চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থী জাকির হোসেনের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় আলীরটেক ইউনিয়নের গুঞ্জুকুমারীয়া এলাকা থেকে জাকির হোসেনের লোকজন যাওয়ার পথে কুড়েরপাড় ব্রীজে যানজট থাকায় অটোরিক্সা চালক ও অটোরিক্সার যাত্রীদের মারধর শুরু করেন।
ওই সময় অটোযাত্রী কুড়েরপাড় এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে আলামিন অটোরিক্সা চাপাতে বলা মাত্রই জাকির হোসেনের লোকজন আবদুর রহমান সহ ৭/৮ জন আলামিনকেও মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা সেভেন আপের বোতল ভেঙ্গে আলামিনের পেটে আঘাত করতে গেলে আলাামিন হাত দিয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন।
ওই সময় ভাঙ্গা সেভেন আপের বোতলের আঘাতে আলামিনের হাত রক্তাক্ত জখম হয়। একই সময় সন্ত্রাসীরা উপর্যুপুুরি আলামিনকে মারধর করতে থাকলে আলামিন মাটিয়ে লুটিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আশপাশের লোকজন এসে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে আলামিনকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে আলামিনের হাতে ৬টি সেলাই দেয়া হয়। পরবর্তীতে আলামিন সদর মডেল থানায় গুঞ্জকুমারীয়া এলাকার আব্দুল গণির ছেলে আব্দুর রহমানের নাম উল্লেখ করে আরো ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু আহত আলামিনের অভিযোগে মামলা গ্রহণ করেনি পুলিশ। হামলাকারীদের পক্ষে মামলা গ্রহণ করে আহত রক্তাক্ত জখম আলামিনকেও আসামি করা হয়।
এই ঘটনায় ভিন্ন অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহমেদ, তার আত্মীয়-স্বজন ও তার লোকজনের নামে মামলা দায়ের করা হয়। সদর থানা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পরিচয়দারী এসএম সালেহ আহামেদ খোকন একটি মামলা দায়ের করেন। তিনি অভিযোগ তুলেন- চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহমেদের নেতৃত্বে জাকির হোসেনের কর্মীসভায় বাধা দিয়ে হামলা চালিয়েছেন। অথচ অটো যাত্রী আলামিনকে মারধর করেছিল জাকির হোসেনের লোকজন।