শোবিজ অঙ্গনের বাইরে এতো নাটক বোধহয় শুধু বাংলাদেশ ক্রিকেটেই সম্ভব। সাকিব আল হাসান রাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে আসবেন, সকালে বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছিল অনুমিত ভবিষ্যৎ। কিন্তু ‘আনপ্রেডিকটেবল’ বাংলাদেশ ক্রিকেটে কোনো কিছুই যে পরিকল্পনা মাফিক হয় না।
সাকিবের সঙ্গে বোর্ড কর্তাদের এই বৈঠকের ইস্যু দুইটি। এক- বোর্ডকে না জানিয়ে বেটউইনার নিউজ পোর্টাল নামক একটি কোম্পানির শুভেচ্ছা দূত হওয়া, যে কোম্পানিটি আবার জুয়াভিত্তিক অনলাইন প্রতিষ্ঠান বেটউইনারের একটি অংশ। দুই- টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব ইস্যু। সঙ্গে সাকিবের এই বৈঠকের পর আসন্ন এশিয়া কাপের দল ঘোষণা করবে বোর্ড।
কথা ছিল এমনি। তবে সেই বৈঠক নিয়ে শুরু হলো নাটকীয়তা। এক পরিচালককে বৈঠক আর দল ঘোষণার সম্ভাব্য স্থান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তার স্পষ্ট জবাব, দলে দেওয়া হবে মিরপুরে। তবে বৈঠকের খবর তার কাছে নেই। তবে কিছুটা আঁচ পেয়ে সংবাদমাধ্যম কর্মীরা ছুটলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের গুলশানের বাসায়। সেখানে সকাল সাড়ে ১১টায় সাকিবের আসায় খবর ছড়িয়েছে।
সেই থেকে অপেক্ষা। সেই অপেক্ষা পালা চললো বিকেল ৩টা অবধি, খোঁজ নেই কারো। দুপুর ৩.১০টায় সাকিব এলেন, অনেকটা বেশভূষা বদলে, পুরোনা রঙচটা এক গাড়িতে চেপে। প্রায় সংবাদমাধ্যম কর্মীদের চোখ গলিয়েই তিনি উঠে গেলেন লিফটে। বাইরে তখন ক্যামেরা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা ফটোসাংবাদিকদের ছবি আর ফুটেস মিসের আক্ষেপ। যদিও সেই আক্ষেপ পরে সুদে-আসলে পুষিয়ে দিয়েছেন সাকিব।
সাকিবের পর একে একে পাপনের বাসায় প্রবেশ বোর্ড পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন, জালাল ইউনুস। নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু আর হাবিবুল বাশার সুমনের। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে প্রায় ২ ঘণ্টা ব্যাপী চললো এই বৈঠক। এরপর ঠিক সাড়ে ৫টায় প্রস্থান সাকিবের। অনেকটা বিজয়ের বেশেই ‘আইভি লিগাসি’ ত্যাগ করলেন সাকিব।
যাওয়ার আগে সাকিবের চোখেমুখে যেন উৎসবের ছাপ। গত কয়েকদিন ধরে যে চাপ আর টানাপোড়ন ছিল, সেটা নামিয়েই যেন হালকা হয়েছেন এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার। সঙ্গে বাড়তি পাওয়া টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব। যা তাকে দেওয়া হয়েছে আসন্ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ পর্যন্ত।