সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক রফিউর রাব্বি বলেছেন, সরকার বিচার ব্যবস্থাকেই কেবল ধ্বংস করেনি সংবিধানে উল্লেখিত নাগরিকের মৌলিক অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে, সাংবিধানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে।
ক্ষমতায় থাকার প্রয়োজনে আমলা, পুলিশসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনী ও প্রতিষ্ঠানকে অবাধে দুর্নীতি করার সুযোগ দিয়েছে, তাদেরকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার করার সুযোগ করে দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানে দলীয় লোকদের বসাতে গিয়ে শিক্ষাসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৩৬ মাস উপলক্ষে সোমবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত নারায়ণগঞ্জ নগরের শেখ রাসেল পার্কে আলোক প্রজ¦ালন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, খাদ্য-মূল্য লাগামহীনভাবে বেড়ে চললেও মানুষের প্রতি কোন দায় বোধ সরকারের নেই। মানুষের দুঃখ-কান্নায় তাদের কর্ণপাত নেই।
রফিউর রাব্বি আরও বলেন, সরকারের অনিচ্ছার কারণে ১১ বছরেও ত্বকী হত্যার তদন্ত শেষে র্যাবের তৈরি করে রাখা অভিযোগপত্রটি আদালতে পেশ করা হয় নাই। সরকার ত্বকীর ঘাতকদের নিরাপত্তা দানের মধ্যদিয়ে দেশে সামাজিক ও রাজনৈতিক দুর্বিত্তায়ন প্রতিষ্ঠা করেছে, নারায়ণগঞ্জ সহ সারা দেশে মাফিয়াতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে।
সংগঠনের সভাপতি এড. জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আর বক্তব্য রাখেন, খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রথীন চক্রবর্তী, মন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব কবি সাংবাদিক হালিম আজাদ, সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর রায়, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দীপু, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, বাসদের জেলা সদস্য সচিব আবু নাইম খান বিপ্লব, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহানারা বেগম, সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা প্রমুখ।
বক্তারা আরও বলেন, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুদিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।
৫ মার্চ ২০১৪ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চারসেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সে অভিযোগপত্র আজো আদালতে পেশ করা হয় নাই। ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।