আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী বলেছেন, ‘এখনই কিন্তু ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে। সব ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে আমরা সফল হবো। আপনাদের সহযোগিতা চাই। নারায়ণগঞ্জের মানুষের পাশে সবসময় থাকবো। আমরা প্রচার-প্রচারণা শুরু করবো দ্রুত। আমরা নেত্রীকে বিজয় উপহার দেবো।’
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা ও মহানগর দলীয় কার্যালয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের এক সভায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি এ কথা বলেন। সভায় নৌকার প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় নামার ঘোষণা দেন মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
তিনি বলেন, ‘যত কিছুই হোক না কেন নেত্রী নারায়ণগঞ্জ সম্পর্কে অবগত। বড় দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকবেই। মনোনয়ন চাওয়া দোষের কিছু না। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেয় তার পক্ষেই থাকা উচিত। আমি মনোনয়ন পাওয়ার আগে সবসময় বলেছি, প্রধানমন্ত্রী যাকে নৌকা দেন তার পক্ষে কাজ করবো। আমাকে না দিলেও আমি বিপক্ষে অবস্থান নিতাম না।’
কখনও কোনও নেতার বিরুদ্ধে দলীয় ফোরামে অভিযোগ করেননি জানিয়ে আইভী বলেন, ‘মোটা মোটা অভিযোগের চিঠি বিভিন্ন জায়গায় দেওয়া হয়েছে। আমি কোনও কথা বলিনি। আমি সবসময় চুপ ছিলাম। কখনও কোনও নেতার বিরুদ্ধে দলীয় ফোরামেও অভিযোগ করিনি। এইটা আমার নীতিতে নেই। আমি মনে করি, আমার মাটি যদি ঠিক থাকে, আমার এলাকার লোকজন যদি ঠিক থাকে তাহলে আমার কোনও কিছু করতে হবে না। এই কারণে আমি ধৈর্য্য ধরেছি। ধৈর্য্যরে ফলাফল নেত্রী আমাকে দিয়েছেন।’
মেয়র আইভী বলেন, ‘এই নারায়ণগঞ্জ শহরে যদি বড় বড় প্রকল্পগুলো না করতাম তাহলে আপনারাই বলতেন, মেয়র কোনও কাজ করতে পারেনি। এত বিরোধিতার পরও, গত এক-দেড় বছর ধরে আমার বিরুদ্ধে প্রচুর প্রোপাগান্ডা চালানো হয়েছে। আমি ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেছি বলে প্রধানমন্ত্রীর মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে।’
বিরুদ্ধে অবস্থান করা সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আসেন একসঙ্গে মিলেমিশে শেখ হাসিনার নৌকাকে নির্বাচিত করি। যারা মনোনয়ন পাননি তাদেরও একই আহ্বান জানাবো। যারা মনোনয়ন চেয়েছিলেন, সে তিন জনের সঙ্গে ২০০৩ থেকে আমার সুসম্পর্ক ছিল। ২০০৯ সালে গিয়ে তারা আমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। কিন্তু যতটুকু নেওয়ার ততটুকু আপনারা তিন জনই আমার কাছ থেকে নিয়েছেন। আপনারা সেই সময়ের কথাগুলো ভুলে যাইয়েন না। ভয়ে এই আওয়ামী লীগ অফিসেও আসতে চাইতেন না। আইভী এলে আপনারা আসতেন। কৃষকলীগের নির্বাচনের কথাও ভুইলেন না, কোনোকিছুই ভুইলেন না। যা করেছেন তা কারও নির্দেশে করেছেন। সেই কারও নির্দেশ না মেনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মানুন। আসুন দলকে শক্তিশালী করে মানুষের কল্যাণে কাজ করি।’
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এই সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য অ্যাড. আনিসুর রহমান দিপু, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ হায়দার আলী পুতুল, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাড. মো. আসাদুজ্জামান, আরজু রহমান ভূঁইয়া, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আহসান হাবীব, জিএম আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আইয়ুব আলী, প্রচার সম্পাদক হাবীব আল মুজাহিদ পলু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. আতিকুজ্জামান সোহেল, কোষাধ্যক্ষ কামাল দেওয়ান, উপ দফতর সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান প্রমুখ।