নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেছেন, শেখ হাসিনার রাজনীতি, শেখ পরিবারের রাজনীতি চিরদিনের জন্য ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাদের নারায়ণগঞ্জের সন্ত্রাসীদের গডফাদার এবং তার দোসর যারা আছে তাদের রাজনীতি চিরদিনের জন্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এখন ষড়যন্ত্র করলে কারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা বলি না যে, আওয়ামীলীগে ভাল মানুষ নাই, ভাল মানুষ আছে কিন্তু ওই ভাল মানুষরা প্রমান করতে পারেন নাই আপনারা ভাল মানুষ। আপনাদের দল যখন অন্যায়-অত্যাচার করে, আপনারা হয়তো অত্যাচারের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না কিন্তু সেদিন আপনারা কোন প্রতিবাদ করতে পারেন নাই। অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে দুজনেই সমান অপরাধী। তাই অপনারাও দায়ী হয়ে গেছেন। স্বৈরাচারী শাসক সংঘ-বঙ্গ নিয়ে পালিয়ে গেছেন, আপনারা যারা ভাল মানুষ রয়েছেন, আপনারা কেন দল থেকে সন্ত্রাসীদেরকে বহিস্কার করছেন না। তাদেরকে বহিস্কার করে আপনারা প্রমান করুন আপনারা ভাল রাজনীতি করতে চান। শেখ হাসিনা এখন বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করছে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বিকালে নাসিক ২ নম্বর ওয়ার্ডের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির উদ্যোগে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, চাঁদাবাজী, অবৈধ দখলদারিত্ব ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় গিয়াস উদ্দিন বলেন, দেশকে এখন পূনর্গঠন করা প্রয়োজন। এজন্য আমাদের দল থেকে আমাদের প্রিয়নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সরকারের কাছে দাবি পেশ করেছে। জাতীয় ঐক্য এখন বড় প্রয়োজন। কারণ ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য। দেশপ্রেমী জনগণের, দেশপ্রেমী রাজনৈতিক দলের জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। এ ঐক্যের জন্য আমরাও সবাইকে আহ্বান করি নারায়ণগঞ্জ জেলায়। যে, যে দল করেন, আসেন এই যে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন, এই প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে আমাদের মধ্যে ঐক্যের বন্ধন গড়ে তুলি এবং নারায়ণগঞ্জের মধ্যে কেউ যেন ষড়যন্ত্র করে কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে। আসুন সেটা ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা মোকাবেলা করি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে পুনরায় বিনির্মাণ করতে আমাদের প্রিয়নেতা তারেক রহমান বহু আগেই ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। কি করে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা যাবে, কি করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যাবে, কি করে প্রশাসনকে দলীয় প্রভাব মুক্ত করা যাবে, কি করে একজন স্বৈরাচার যাতে না হয় পর পর দুই বারের বেশী কেউ প্রধানমন্ত্রী না হতে পারে এমনি ভাবে ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছে। সেদিন তারেক রহমান জানতেন না ৫ আগষ্ট আবার নতুন করে দেশ স্বাধীন হবে। স্বৈরাচার বিদায় হয়ে যাবে। আজকে দেশ বাসী সংস্কারের দাবী তুলেছে। সেসব দাবীগুলো বাস্তবায়ন করে দেশে গনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
এসময় তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবী জানিয়ে বলেন, আপনারা নির্বাচিত সরকার নন। আপনারা কিন্তু জনগণের ম্যান্ডেটের সরকার কিন্তু ভাববেন না। দীর্ঘদিন থেকে আপনাদেরকে কাজ করার সুযোগ এই দেশের মানুষ দিয়ে বসবে। আপনাদেরকে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচনের রোড ম্যাপ অভিলম্বে ঘোষণা করতে হবে। যেন মানুষ আস্থাশীল হয় এই সরকারের প্রতি। এই সরকারের ক্ষমতার লোভ নাই, এই সরকার জনগণের অধিকার, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবে এই আস্থা-বিশ্বাস যাতে জনগণের মধ্যে আসে দ্রুত সেই ব্যবস্থা করবেন, সে দাবী জানাই।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মো: মাজেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর মো: ইকবাল হোসেনের সঞ্চালনায় উক্ত বিশাল জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল ইসলাম, ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক এড. আব্দুল বারী ভুঁইয়া, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ হালিম জুয়েল, এসএম আসলাম, জিএম সাদরিল, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব মুহাম্মদ কায়সার রিফাত, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মো: মোস্তফা কামাল, ডিএইচ বাবুল, মো: রওশন আলী, একেএম সামছুল হক, এড. মাসুদুজ্জামান মন্টু, যুগ্ন সম্পাদক আবুল হোসেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাধীন, কামরুল হাসান শরীফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন, ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আনিছ সিকদার, ১নং সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন, ২নং ওয়ার্ড সভাপতি মো: আলী, সাধারণ সম্পাদক মোক্তার হোসেন, ৩নং ওয়ার্ড সভাপতি মো: তৈয়ব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ডা. মাসুদ করিম ও ৪নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী মুন্সিসহ প্রমূখ।