নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নবনির্বাচিত আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যালীতে ২ নম্বর গেইট এলাকায় আমাদের ভাই যুবদল কর্মী শাওনকে নির্মমভাবে রাইফেলের গুলি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সে আমার সামনে মাটিতে লুটে পড়ে।
আমি তাকে কোলে আগলে ধরেছি এবং তার ক্ষতস্থানে হাত দিয়ে ধরে রেখেছিলাম। সে সময় তার শরীর থেকে যেভাবে গরম রক্ত বের হয়েছিল সেই রক্ত আজকে পর্যন্ত আমাকে পীড়া দেয়। কি অন্যায় করেছিল সেই শাওন। অন্যায় করেছিল এটাই যে স্বল্প মূল্যে দ্রব্য কিনতে চেয়েছিল।
জিনিসপত্রের মূল্য কমাতে চেয়েছিল। এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। সরকারের জুলুম অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলেছিল। সেই কথা বলার জন্য আজকে শাওনকে জীবন দিতে হয়েছিল।
রাজধানীর পল্লবীসহ দেশব্যাপী বিএনপির কর্মসূচিতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময়ে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা গুলো বলেন।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল তিনটায় শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন ২০১৪ সালে আমাদের বহু নেতা কর্মীদের হত্যা করা হয়েছিল। ১৪ থেকে ২০২২ সালে এখনো বেঁচে আছি যতদিন বেঁচে থাকবো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেই যাব। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলে রাজপথে থাকবো ইনশাল্লাহ।
আমরা এদেশের মানুষের জন্য কথা বলব। সকাল অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলব। এদেশে মানুষের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কথা বলব। আজকে একটি সরকারিদল দেশের মানুষের উপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে আছে।
আজকে গুম, খুন, নির্যাতন হয়রানি করে এ দেশকে একটি দুর্ভিক্ষের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না। শুধু বিএনপি না বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দল আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এদেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সরকার দলীয়করণ করে এদেশের প্রশাসনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এঅবস্থা আর চলতে দেওয়া যায় না।
নবনির্বাচিত আহ্বায়ক কমিটির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর আমাকে আহ্বায়ক করে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। আগামীতে আমার চেয়ে যদি কেউ বেশি ভূমিকা রাজপথে পালন করেন তাহলে আমি আজকে কথা দিয়ে যাচ্ছি আমি ক্ষমতা ছেড়ে দেবো।
আজকে মহানগর বিএনপির সমাবেশে যারা উপস্থিত হয়েছেন যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক, শ্রমিক দল ও মহিলা দলের সকল নেতৃবৃন্দকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান এবং মহানগর বিএনপি’র পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
আজকে আমরা সবাই ভাই ভাই। যারা পদ পাননি ভবিষ্যতে অবশ্যই মূল্যায়িত করা হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননেতা তারেক রহমান যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেই সিদ্ধান্ত আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। আগামী দিনের সকল আন্দোলন সংগ্রামে আমাকে প্রথম সারিতে পাবেন ইনশাআল্লাহ।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য মাশুকুল ইসলাম রাজিব, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন খান, আনোয়ার হোসেন আনু, এম এইচ মামুন, সদস্য রাশিদা জামাল, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু, সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, ফতুল্লা থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন শিকদার, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহেদ আহমেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি রাফি উদ্দিন রিয়াদ, মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মো. আসলাম।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আহ্বায়ক কমিটির এড. রফিক আহমেদ, ফারুক হোসেন, হুমায়ূন কবির আলমগীর হোসেন, ফারুক হোসেন রিপন, সাখাওয়াত ইসলাম রানা, মাকিদ মোস্তাকিম শিপলু, কামরুল হাসান চুন্নু সাউদ, শাহিন আহমেদ, জেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান স্বপন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিএস শাহ আলম ভুঁইয়া, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রহিমা শরীফ মায়া, সাধারণ সম্পাদক রুমা আক্তার, সহ-সভাপতি জিসান সুরাইয়া, প্রচার সম্পাদক জোহারা খাতুন, সোনারগাঁও থানার সভাপতি সালমা আক্তার সহ নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক, শ্রমিক দলের নেতৃবৃন্দ।