রাশিয়ার সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ। শুক্রবার মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনে এ বিষয়ক একটি প্রস্তাবনা (রেজোল্যুশন) পাস হয়েছে।
এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার অধিবেশন শুরুর পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যভুক্ত ২৬টি দেশের পক্ষে এই রেজোল্যুশন উত্থাপন করেন ইইউ জোটের অন্যতম সদস্য লুক্সেমবার্গের জাতিসংঘ দূত মার্ক বিচলের। প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, রাশিয়া কঠোর সব আইন চালু রয়েছে এবং দশকের পর দশক ধরে সেসব আইন প্রয়োগ ও অপপ্রয়োগ করা হচ্ছে দেশটির রাজনৈতিক ভিন্ন মতাবলম্বীদের দমন করতে। সম্প্রতি এসব আইনের আওতায় নিপীড়ণ বেড়েছে বলেও অভিযোগ করেন মার্ক বিচলের।
প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, রাশিয়ার মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে জাতিসংঘের তৎপরতা প্রয়োজন। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের আওতায় রাশিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত নিয়োগ করা যেতে পারে। সেই দূতের প্রধান দায়িত্ব থাকবে দেশটির অভ্যন্তরীণ ও বাইরের বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে রাশিয়ার মানবাধিকার পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করে প্রতি বছর একবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সেসব উপস্থাপন করা।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের সদস্যরাষ্ট্রের সংখ্যা মোট ৪৭। শুক্রবার মার্ক বিচলের এই প্রস্তাবনা উত্থাপন করার পর ১৭টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে রাশিয়া, চীন, ভেনেজুয়েলা ও কিউবাসহ ৬টি দেশ এটির বিপক্ষে ভোট দেয়। এই ছয়টি রাষ্ট্রের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম সদস্যরাষ্ট্র হাঙ্গেরিও ছিল।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে নিযুক্ত রুশ প্রতিনিধি গেন্নাদি গাতিলভ পরিষদের এই প্রস্তাবে নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘এই প্রস্তাবনা হলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা রাষ্ট্রসমূহের রাজনৈতিক লক্ষ্য হাসিলের এক নতুন ফন্দি। নিজেদের স্বার্থের জন্য তারা এখন জাতিসংঘকেও ব্যবহার করছে।’
শুক্রবার চলতি বছর শান্তিতে নোবেলজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এবার শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন বেলারুশের মানবাধিকারকর্মী অ্যালেস বিয়ালিয়াৎস্কি, রাশিয়ার মানবাধিকার সংস্থা মেমোরিয়াল ও ইউক্রেনের মানবাধিকার সংস্থা সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিজ।
শান্তিতে নোবেলবিজয়ীদের নাম ঘোষণার দুই ঘণ্টা পরই জাতিসংঘে এই প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে এএফপির প্রতিবেদনে।