সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগ ঠেকাতে জঙ্গলে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন এক রাশিয়ান নাগরিক।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে রুশ সেনাবাহিনীতে আরো সেনা সমাবেশের এক কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু এ্যাডাম কালিনিনের (আসল নাম নয়) কোন ইচ্ছেই ছিল না রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে যোগ দেবার।
তার মনে হলো, সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগ ঠেকানোর সেরা উপায় হতে পারে একটাই – জঙ্গলে গিয়ে থাকা।
কালিনিন ছিলেন একজন আইটি স্পেশালিস্ট বা তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। শুরু থেকেই তিনি ছিলেন যুদ্ধবিরোধী। তিনি যে এ্যাপার্টমেন্ট ভবনে থাকতেন তার দেয়ালে তিনি সেঁটে দিয়েছিলেন ‘যুদ্ধকে না বলুন’ লেখা এক পোস্টার। আর এ জন্য তাকে দু-সপ্তাহের জন্য জেল খাটতে হয়েছিল, দিতে হয়েছিল জরিমানাও।
রাশিয়া যখন ইউক্রেন যুদ্ধে আবার জয়ের ধারায় ফিরে আসার চেষ্টায় ৩ লাখ সেনা নিয়োগের উদ্যোগ নিলো– তখন কালিনিন আদৌ ইচ্ছুক ছিলেন না ইউক্রেনীয়দের হত্যার জন্য যুদ্ধে যোগ দেবার ঝুঁকি নিতে।
সেনাবাহিনীতে নিয়োগ এড়াতে সে সময় লাখ লাখ রুশ দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন।কিন্তু এ্যাডাম কালিনিন এমন কিছু করতে চান নি।
তিনি তার স্ত্রীকে বিদায় জানিয়ে চলে গেলেন এক জঙ্গলে। সেখানে এক তাঁবু খাটিয়ে তিনি থাকছেন প্রায় চার মাস ধরে।
সেই জঙ্গলে ইন্টারনেট পাবার জন্য তিনি গাছের সঙ্গে একটা এ্যান্টেনা বেঁধেছেন। বিদ্যুতের জন্য বসালেন সোলার প্যানেল।কিছুদিন পর পর তার স্ত্রী জঙ্গলে নিয়ে তার জন্য কিছু খাবার দিয়ে আসতেন।
সেই বনে তাকে সহ্য করতে হয়েছে প্রচণ্ড ঠান্ডা আবহাওযা। এক এক সময় তাপমাত্রা শূন্যের ১১ ডিগ্রি নিচে নেমে যেতো।
কিন্তু তার পরও তার মনে হয়েছিল–সেনাবাহিনীকে নিয়োগ ঠেকানোর জন্য এটাই ছিল সবচেয়ে ভালো উপায়।
বিবিসিকে কালিনিন বলেন, কারণ আপনি যদি সব যোগাযোগের বাইরে থাকেন, কর্তৃপক্ষ যদি আপনার হাতে সেনাবাহিনীতে যোগদানের ডাক পৌঁছে দিতে না পারে –তাহলে আপনাকে কেউ যুদ্ধে যেতে বাধ্য করতে পারবে না।