নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির র্যালীতে যুবদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় হাতাহাতি ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে। র্যালীর পূর্বে নেতার সামনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে যুবদলের দুইপক্ষে সমর্থকদের মাঝে বাকবিতন্ডতার একপর্যায়ে সেটি হাতাহাতিতে গড়ায়।
পরবর্তীতে দ্বিতীয় দফায় সেটি গিয়ে মারামারিতে রূপ নেয়। এসময় মাসুম নামের যুবদলের একজন কর্মী রক্তাক্ত জখম হয়েছে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের মিশনপাড়া এলাকায় মহানগর বিএনপির র্যালী চলাকালিন সময়ে এই ঘটনা ঘটে। এদিন বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি উদ্যোগে এই র্যালীর আয়োজন করা হয়।
নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শহরের মিশনপাড়ায় বাংলাদেশ হোসিয়ারী সমিতি ভবনের সামনে র্যালির পূর্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ চলছিলো। এসময় বন্দর থেকে থানা বিএনপির সভাপতি শাহেন শাহর নেতৃত্বে একটি মিছিল এসে সমাবেশস্থলে যোগ দেন। এসময় তারা পূর্বের অবস্থান নিয়ে থাকা নেতাদের সরিয়ে নিজেরা সামনের দিকে জায়গা দখল করে নেয়।
পরবর্তীতে মহানগর যুবদলের যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল ও সদস্য সচিব শাহেদ আহম্মেদের নেতৃত্বে আরো একটি মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে পৌঁছে শাহেন শাহর লোকদের সরিয়ে সজল এবং শাহেদকে সামনে এগিয়ে দেয় তাদের অনুসারীরা।
এসময় র্যালির শুরুর জন্য নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখছিলেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন। সাখাওয়াত হোসেনের বক্তব্য চলাকালীন সময় সজল ও শাহেদের অনুসারীদের সঙ্গে বন্দর থেকে আসা যুবদলের নেতাকর্মীদের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।
পরে সাখাওয়াত হোসেন খান সবাইকে নিবৃত্ত করেন। পরিস্থিতি বিশৃঙ্খলা হচ্ছে দেখে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু দ্রুত র্যালি শুরু করে দিলে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
পরবর্তীতে র্যালিটি বঙ্গবন্ধু সড়কের জাকির সুপার মার্কেটের কাছে পৌঁছালে যুবদলের কিছু সমর্থক যুবদল নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফকে ধাক্কা দেয়। এ সময় জোসেফের অনুসারীরা তাদেরকে বেদম পিটুনি দিলে যুবদলের মাসুম নামের এক কর্মীর নাক ফেটে গিয়ে রক্তাক্ত জখম হয়।
ওই সময় সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। কিন্তু আহত মাসুম নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সামনে এসে অবস্থান নিয়ে পুনরায় জোসেফকে আক্রমন করার চেষ্টা করলে আবারো দুইপক্ষের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
পরে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন ও আবু আল ইউসুফ খান টিপুসহ সিনিয়র নেতারা আহত মাসুমকে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করে র্যালি নিয়ে এগিয়ে যান।
এ বিষয়ে মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব শাহেদ আহমেদ বলেন, আমরা মিছিলে সামনের দিকে ছিলাম। পিছনের দিকে দাঁড়ানো নিয়ে শহরের কিছু যুবদল নেতাকর্মীর সঙ্গে বন্দরের কিছু যুবদল নেতাকর্মীর মধ্যে বাকবিতন্ডার জের ধরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। পরে বিষয়টি আমরা সমাধান করে দিয়েছি।
মহানগর যুবদল নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফ বলেন, নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিতে কেন্দ্র করে হাতাহাতি মল্লযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, এটা তেমন বড় কোনো ঘটনা না। একটা বড় মিছিল হলে অনেক কিছুই হয়ে থাকে।
একটা সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিলো পরে আমরা সমাধান করে দিয়েছি। যেখানে হাজার হাজার লোক উপস্থিত হয় সেখানে সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।