নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র নবগঠিত আহবায়ক কমিটি আগামী দিনে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং সম্মেলনের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আব্দুস সালাম আজাদ।
এ বিষয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জ টাইমসকে বলেন, কমিটি ভাঙ্গার জন্য দেয়া হয় না, কমিটি দেয়া হয় কাজ করার জন্য। কোন একক ব্যক্তিকে নেতা বানানোর জন্য নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি দেয়া হয় নাই।
আহ্বায়ক কমিটি দেয়া হয়েছে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটির গঠনের জন্য। সম্মেলনে সকল নেতা কর্মীর মতামতের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের আগ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ভাঙার কোনো সম্ভাবনা নেই।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মহাসচিব সাংগঠনিকভাবে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। তবে আমাকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে মহাসচিব দায়িত্ব নিয়েছেন এ বিষয়টি আমি অবগত নই।
জানা যায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর এড. সাখাওয়াত হোসেন খানকে আহবায়ক ও এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সদস্য সচিব করে ঘোষনা করা হয় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্যের আহবায়ক কমিটি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমাানের নির্দেশনায় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী এই কমিটির অনুমোদন দেন।
কমিটি ঘোষনার পর থেকেই বিরোধীতা শুরু করেন যুগ্ম আহবায়ক আতাউর রহমান মুকুল। কমিটির বেশ কয়েয়কজন সদস্যকে ভুল বুঝিয়ে মূলধারার বাইরে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন এবং বিএনপির বহিস্কৃত নেতা এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের বাসভবনে গিয়ে কমিটি থেকে পদত্যাগের ঘোষনা দেন। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে তারা কেন্দ্রে সেই পদত্যাগপত্র জমা দেননি।
কমিটির ঘোষণার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি নিয়ে উল্টাপাল্টা মন্তব্য করে নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করছেন মুকুল। কখনো তিনি বলছেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদের পিঠের চামড়া তুলে নেয়া হবে।
কখনো বলছেন আব্দুস সালামকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এভাবে মিথ্যাচার করে কমিটিকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন আতাউর রহমান মুকুল। সেই সাথে তিনি আরো বলছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র নবগঠিত আহবায়ক কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হবে। যদিও এসব কথার কোন প্রমাণ বা রেফারেন্স তিনি এখনো নেতাকর্মীদের দিতে পারেননি।
এদিকে মুকুলের এসব কার্যকলাপকে ভিন্ন চোখে দেখছে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তারা মনে করছেন আগামী দিনে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি যাতে শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারে এজন্য কমিটিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছেন তিনি। সরকারি দলের নীল নকশা বাস্তবায়ন করতেই মুকুল এই মিশনে নেমেছেন।
তৃণমূলের মতে, গত ৬ অক্টোবর সারাদেশের প্রতিটি মহানগরে শোক র্যালির কর্মসূূচি ঘোষনা করে বিএনপি। কেন্দ্রীয় র্কর্মসূচি পালনে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেয় সবগঠিত মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ। এ লক্ষ্যে দফায় দফায় মতবিনিময় সভা করেন তারা। এসব দেখে পাল্টা কর্মসূচি পালনের ঘোষনা দেন আতাউর রহমান মুকুল এবং ঐদিনই বিশাল লোকবল নিয়ে শহরে শোডাউন করেন।
মুকুলের এই লোকবল দেখে ক্ষোভে ফেটে পরেন মহানগর বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা। বিগত সময়ে যখন পুলিশের হামলা মামলা নির্যাতন উপেক্ষা করে মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা হাতে গোনা কয়েকজনকে নিয়ে কর্মসূচি পালন করেছে তখনকার সময়ে একবারের জন্যেও দেখা মিলেনি এই মুকুলের।
লোকজন নিয়ে আসাতো দুরের কথা তিনি নিজেও কখনো আসেননি বিএনপির মিটিং মিছিলে। পুলিশের হামলা মামলারও শিকার হতে হয়নি তাকে। বরং সরকারী দলের এমপিদের সাথে প্রায়ই সভা সমাবেশ করতে দেখা গেছে তাকে। হঠাৎ করে এতো লোক কই পেলো মুকুল এই প্রশ্ন এখন তৃণমূলের মনে।
অনেকে মনে করেন সরকারী দলের লোকদের টাকা দিয়ে ভাড়া করে এনেছেন মুকুল শোডাউন করার জন্যে। মুকুলের এ কর্মকান্ডকেও ঘড়যন্ত্রের অংশ মনে করছেন তারা। তাদের মতে সরকারী দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মুকুল মিশনে নেমেছেন যাতে করে আগামী দিনে নারায়ণগঞ্জের রাজপথে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব না হয়।