সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৮ অপরাহ্ন

বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে

  • আপডেট সময় বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০২২, ৩.৩৯ এএম
  • ২৫১ বার পড়া হয়েছে

নিখোঁজের ৭২ ঘন্টার পর নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর ওরফে পরশকে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শেখ ফরহাদ এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘ফারদিনের পুরো মাথার বিভিন্ন অংশে আঘাত পাওয়া গেছে। বুকের ভেতরে আঘাতের চিহ্ন আছে। প্রাথমিকভাবে আমরা বুঝতে পেরেছি, এটি অবশ্যই হত্যাকাণ্ড। ময়নাতদন্ত শেষে দ্রুত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

 

প্রসঙ্গত গত সোমাবর বিকালে (৭ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জের লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলের পেছনে নদী থেকে ফারদিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর একজন ছেলে বন্ধু ও এক বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন গত শনিবার ( ৫ নভেম্বর) থেকে নিখোঁজ ছিলেন।

ওই দিনই রাজধানীর রামপুরা থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তাঁর বাবা কাজী নূর উদ্দিন। এতে বলা হয়, গত শুক্রবার (৪ নভেম্বর) বেলা তিনটার দিকে ফারদিন নূর পরশ রাজধানীর ডেমরা থানার কোনাপাড়ার বাসা থেকে বুয়েটে তাঁর আবাসিক হলের উদ্দেশে বের হন। পরের দিন শনিবার সকালে তাঁর পরীক্ষা ছিল। তবে তিনি পরীক্ষায় অংশ নেননি। তাঁর মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

 

ময়না তদন্ত রিপোর্ট জেনে শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, তিনি বিজনেস পত্রিকা ‘দ্য রিভারাইন’-এর সম্পাদক ও প্রকাশক। ফারদিনের মা তার স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন একজন গৃহিণী। তাঁদের গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলায়। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন ফারদিন।

তাঁর মেজ ভাই আবদুল্লাহ নূর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। ছোট ভাই তামিম নূর এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। পড়াশোনায় মেধাবী ফারদিন এসএসসি ও এইচএসসিতে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছিলেন। গবেষণায় আগ্রহ ছিল ফারদিনের। সে নিজের ইচ্ছায় বুয়েটে ভর্তি হয়েছিলেন ।

 

এক পর্যায়ে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘আমরা ওরে (ফারদিন) স্বাধীনভাবে পড়াশোনা করতে দিয়েছি। যেহেতু আমি সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলাম, তাই খুব একটা সচ্ছল ছিলাম না। ফারদিন নিজে টিউশনি করত। নিজের পড়াশোনা, পড়ানো, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আসা-যাওয়া ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিল।

তিনি ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে বলেন, আমি আমার সন্তানকে ফিরে পাব না। বিচার হোক, এটি আমরা চাই। মেধাবীদের ধরে ধরে হত্যা করা হচ্ছে, এটা বন্ধ হোক।’

ফারদিনের চাচা আবু ইউসুফ জানান, লাশ বুয়েট ক্যাম্পাসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে ক্যাম্পাসের মসজিদে বাদ জোহর ফারদিনের জানাজা শেষে ডেমরা হয়ে নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা নিজ বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানান, বুয়েট ছাত্র ফারদিনের লাশটি সিদ্ধিরগঞ্জ থানার নদী এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। এখনো থানায় কেউ মামলা এজাহার দেয়নি। শুনেছি লাশের জানাযা দাফন নিয়ে ব্যস্ত আছে পরিবার। এজাহার পেলেই আমরা দ্রুত আইনী ব্যবস্থা নিয়ে মাঠে নামব।

তবে দুজন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক হয়েছেন ঢাকায় । ময়না তদন্ত রিপোর্ট হত্যার আলামত পাওয়া গেছে। এ হত্যার বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়ে গেছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort