রনি তালুকদারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ১৭৭ রানের লক্ষ্য দেয় রংপুর রাইডার্স। সেই রান টপকাতে পারেনি তিনবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। নির্ধারিত ওভারের ৫ বল আগেই ১৪২ রানে অলআউট হয় ইমরুল কায়েসের দল। ফলে ৩৪ রানের হার দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করলো বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। আর দারুণ এক জয়ে বিপিএলের প্রত্যাবর্তন ম্যাচটি রাঙালো একবারের চাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্স।
শুক্রবার পুরো দিনে সূর্যের দেখা মেলেনি, শীতও জেঁকে বসেছে। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে তো শীতের প্রভাবে দর্শকরা আগে-ভাগে বাড়ির পথ ধরেছেন। প্রথম ম্যাচে গ্যালারি ভরা থাকলেও দ্বিতীয় ম্যাচে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দর্শক কমতে থাকে। ম্যাচ শেষ হওয়া পর্যন্ত হাজার দুয়েক দর্শক শেষ পর্যন্ত মাঠে ছিলেন।
শীতের আমেজ নিয়ে খেলতে নামা কুমিল্লার শুরুটা ভালো না হলেও রংপুরেরটা হলো দুর্দান্ত। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করা রংপুর ১৭৬ রান করে। ১৭৭ রানের কঠিন লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে যায় কুমিল্লা। ২৫ রানের মধ্যে দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার লিটন দাসকে হারায় তারা। ১২ বলে ১০ রান করে আউট হয়েছেন লিটন। আরেক ওপেনার সৈকত আলীর ১৬ রান তেমন কোনও ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারেনি। তারপরও ডেভিড মালানের ৯ বলে ১৭ রানের ইনিংসে পাওয়ার প্লেতে ৫১ রান তুলতে পারে কুমিল্লা।
দলীয় ৫৭ রানে সৈকত আলীর বিদায়ের পর অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ও মোসাদ্দেক হোসেন বড় জুটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বেনি হাওয়েলের দুর্দান্ত এক ক্যাচে ২৬ বলে ৩৩ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় ইমরুলকে। আউট হওয়ার আগে অবশ্য বিপিএলের চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে দুই হাজার রান পূর্ণ করেন তিনি। ইমরুলের বিদায়ের পরই মূলত ভেঙে পড়ে কুমিল্লার ব্যাটিং অর্ডার। মোসাদ্দেক ২৫ বলে ১৫ রান করে আউট হন। ৭ নম্বরে নেমে জাকির আলী শেষ চেষ্টা করে হন ব্যর্থ। ১৩ বলে ১৯ রান আসে জাকিরের ব্যাট থেকে। লেট অর্ডারের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ১৯.১ ওভারে ১৪২ রানে অলআউট হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
২০ রানে তিন উইকেট নিয়ে রংপুরের সেরা বোলার হাসান মাহমুদ। রবিউল হক ও সিকান্দার রাজা নেন দুটি করে উইকেট। রাকিবুল হাসান, হাসমতউল্লাহ ওমরজাই ও বেনি হাওয়েল নেন একটি করে উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা রংপুর শুরু থেকেই তাণ্ডব চালায় কুমিল্লার বোলারদের ওপর। ওপেনার নাঈম শেখ স্লো ব্যাটিং করলেও রনি তালুকদার তাণ্ডব চালান। বিপিএলে বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে বিপিএলে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন রংপুরের এই ওপেনার। শেষ পর্যন্ত ৩১ বলে ১১ চার ও ১ ছক্কায় ৬৭ রানে থামেন তিনি। রনির ইনিংসের পরই মূলত বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় একবারের চ্যাম্পিয়নরা। এরপর শোয়েব মালিকের ৩৩, নাঈমের ২৯, নুরুল হাসানের ১৯ ও সিকান্দার রাজার ১২ রানের ওপর দাঁড়িয়ে রংপুর ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান সংগ্রহ করে।
টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া কুমিল্লার বোলাররা পিচ থেকে সুবিধা আদায় করে নিতে পারেনি। সবাই ছিলেন ব্যয়বহুল। ফজলে হক ফারুকী, মোস্তাফিজুর রহমান, খুশদিল শাহ ও মোসাদ্দেক হোসেন একটি করে উইকেট নিয়েছেন।