বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের দাসেরগাঁয়ে ভূমিদস্যুরা নীরিহ কৃষকের ফসলি জমির মাটি পুকুর পরিমান খনন করে বিক্রি করছে মাটি। ভুক্তভোগীদের জমি কেটে পুকুর পরিমান খনন করায় ধ্বসের ঝুঁকিতে রয়েছে আশেপাশের অনেক বাড়ি ঘর।
এদিকে ভূমিদস্যুদের পেশিশক্তি ভয়ে কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেনা। অন্যদিকে জমির এক মালিক থানায় অভিযোগ করেও এর কোনো সমাধান পাচ্ছেনা।
অপর একজন মালিক বিদেশ থাকায় তিনিও ভুমিদসুদের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা তার কথায় কোনো মূল্যায়নই করছেনা। ভুক্তভোগীরাও পাচ্ছেনা প্রশাসনের সহযোগীতা। এ ঘটনায় ওই এলাকায় বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা।
ভুক্তভোগী রাকিবুল বলে আমি থানায় অভিযোগ করেছি বাবুল, পলাশ ও সুমনের নামে। তারা আমার জমি জোরপূর্বক মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে, তারা বিএনপির নেতাকর্মী হওয়া সত্ত্বেও তাদের কি এত ক্ষমতা।
বাবলু, পলাশ ও সুমন ক্ষমতার প্রভাবে বন্দর মূসাপুর ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ডের দাসের গাঁও এলাকার ফসলী জমি ও ভিটা মাটির মাটি অবৈধভাবে খনন করে পেশী শক্তির প্রভাব ও ভয় ভীতি দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কখনো দিনে কখনো রাতে এই অবৈধ উপায়ে মাটি বেঁচা কিনার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
নাম না প্রকাশের শর্তে অনিচ্ছুক একাধিক ভোক্তভোগী জানান, আমরা অনেকেই পৈতিৃক সূত্রে এই জায়গার মালিক। আবার অনেকেই তিলে তিলে করা এই ভিটা মাটি সম্পদ ভেঙ্গে চুরমার করে দিচ্ছে চোখের সামনে অত্যাচার ও ক্ষমতার প্রভাবে।
ভয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছেনা কেউ। দেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থা কি ওদের কাছে জিম্মি? কারা ওদের পিছনে মদদ দিচ্ছে। আমরা এই অত্যাচারী বাবলু ও পলাশের হাত থেকে মুক্তি চাই।
ভোক্তভোগী অপর একজন বলেন, আমাদের বন্দর কে অশান্ত করতে একটি স্বার্থলোভী মহল কাজ করছে তারা খুব বেপরোয়া তাদের এখনই রক্বানা গেলে ভবিষ্যতে আরো অনেক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। দীর্ঘদিন যাবত ওরা এই জুলুম অত্যাচার চালাচ্ছে। মেম্বার, চেয়ারম্যান থানা পুলিশ অভিযোগ সবই করছি এই ভূমিদস্যুদের কে কেউ রুখতে পারেনি।
ওরা গোটা গ্রামটা চতুর্থাংশে বাধ বেধে দখলে নিচ্ছে কিছু জিজ্ঞাসা করলে বলে বর্ষায় মাছ চাষ করবো। কার জমিতে কে মাছ চাষ করবে, কোনো তোয়াক্কা নাই। ওরা গ্রামে বিঘা বিঘা জমি ভয় দেখিয়ে দখল করে নিচ্ছে। আবার অনেককে বাড়ী ছাড়ার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে রীতিমতো।
অভিযোগে ৩ জন কে অভিযুক্ত করা হয়। এদের মধ্য একজন হলেন পলাশ যার নামে একাধিক মামলা রয়েছে এবং সে ওয়ারেন্টের আসামি। তাকে আমরা ধরার চেস্টা করছি এবং একবার ধাওয়াও দিয়েছিলাম। সে এক পর্যায় পুকুরে লাফ দিয়ে সাঁতরিয়ে পালিয়ে যায়। আমার জানা মতে উভয়ের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে পরবর্তীতে আমরা এই বিষয়টি নিয়ে বসবো ।
ভুক্তভোগী এক জমির মূল মালিক গেদা বলেন, আমার সাথে একটি লিখিত চুক্তি হয়েছে । আমার মোট জায়গা ৫৪ শতাংশ এর মধ্যে ২৫ শতাংশ ২০ ফিট গভীর করে মাটি কেটে নিয়ে যাবে। এই পরিমাণ মাটি কেটে নেয়া হলে ফুট হিসাব করে আমি ১২ লক্ষ টাকা ওদের কাছে পাই।
কিন্তু তারা প্রথম পর্যায় ৫ লক্ষ টাকা এবং কিছুদিন পূর্বে ৪ লক্ষ টাকা নগদ ক্যাশ আমাকে দিয়েছে। সর্বমোট ওরা আমাকে ৯ লক্ষ দিয়েছে। বর্তমানে ওদের কাউকে খোঁজে পাচ্ছিনা । ওরা চিটার, আমার সাথে চিটিং করেছে। আমার জমি ৫৪ শতাংশ সহ আশেপাশের অনেকের জমির মাটি কেটে নিয়েছে।
যার কারনেই অনেকের বাড়ী ভেঙ্গে পড়েছে। আমি থানা গিয়েছি এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে। আশপাশের বাড়ীর ও জমির মালিকদের সাথে বসলে আমিও বসবো।
এ বিষয়ে জানতে মূসাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ বলেন, আমি ভুক্তভোগীদের বলেছি আইনগত ব্যবস্থা নিতে, তারা আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে। আমার জানামতে একটি মাটি কাটার ভেকু পুলিশ প্রশাসন জব্দ করেছে, এখন প্রশাসন দেখবে বিষয়টি এ ব্যাপারে আমার কিছু করার নেই।
এ বিষয়ে বন্দর থানার পুলিশ পরিদর্শক (এস আই) বারেক বলেন, এই জমির মাটি কাটা নিয়ে থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে আমরা ঘটনা স্থলে গিয়ে মাটি কাটার একটি ভ্যাকু জব্দ করি। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।