বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০৩:০২ অপরাহ্ন

ফতুল্লার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী চুন্নু গ্রেপ্তার

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫, ১০.২৯ এএম
  • ০ বার পড়া হয়েছে

ফতুল্লায় চাঞ্চল্যকর গৃহবধু লামিয়া আক্তার ফিজা (২১) হত্যা মামলায় দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মোফাজ্জল হোসেন চুন্নু (৫০) কে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। বুধবার (২১ মে) দুুপরে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নয়া মাটি (কুতুবপুর) এলাকা হতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত চুন্নু ওই এলাকার মৃত তালেব হোসেনের ছেলে।

র‌্যাব জানায়, গত ২ জানুয়ারি জেলার ফতুল্লা থানাধীন পশ্চিম দেওভোগ নুর মসজিদ রোড এলাকায় লামিয়া আক্তার ফিজা (২১) হত্যার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে নিহত লামিয়া আক্তার ফিজার পিতা মোহাম্মদ আলী (৪৬) বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-৯, তারিখ ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ইং ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।

এ ঘটনার সাথে জড়িত আসামিদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‌্যাব-১১ গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার নয়া মাটি (কুতুবপুর) এলাকায় তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় বিস্ফোরক আইন, হত্যা চেষ্টা, মাদক, চুরিসহ ১৪ টি মামলা রয়েছে।

ঘটনার বিবরণে র‌্যাব জানায়, ২০২০ সালের ১৪ আগষ্ট নিহত লামিয়া আক্তার ফিজা (২১) এর সাথে আসামী আসাদুজ্জামান ওরফে মুন্না এর নিকট ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই ভিকটিমের স্বামী পরকীয়ায় লিপ্ত হয়। ভিকটিম ১নং আসামী তার স্বামীকে বাধা নিষেধ করায় তাকে বিভিন্ন সময় মারধর করত। তারপরও ভিকটিম সংসার করে আসছিল।

সংসার করাবস্থায় দাম্পত্য জীবনে ভিকটিমের গর্ভে একটি পূত্র সন্তান জন্য লাভ করে। নাম মোরসালিন বয়স ২ বৎসর। সন্তান হওয়ার পর ১নং আসামী পরকীয়া চালিয়ে আসছিল। ভিকটিম অন্যান্য আসামীদের নিকট পরকীয়ার বিষয়টি জানিয়ে বিচার চাইলে তারা বিচার না করে বরং ভিকটিমকে গালিগালাজ করত।

বিষয়টি ভিকটিম তার পরিবারকে জানানোর পর পারিবারিক ভাবে বেশ কয়েকবার শালিস মিমাংশা হয়। তারপরও ১নং আসামী সংশোধন না হয়ে বরং ভিকটিমকে সময় না দিয়ে অধিক রাত্রে বাসায় ফিরত। এই নিয়ে তাদের মধ্যে মন মালিন্য চলে আসছিল।

ভিকটিম তার সন্তানের ভবিষ্যত এর দিক বিবেচনা করে মারধরের বিষয়টি গোপন রাখত। অনুমান ০১ সপ্তাহ পূর্বে ভিকটিম তার স্বামীকে পরকীয়ায় বাধা দেওয়ার কারনে অন্যান্য আসামিদের ইন্ধনে ১নং আসামী ভিকটিমকে মারধর করে। আসামিরা ভিকটিমকে হুমকি দিত যে, মারধরের ঘটনা ভিকটিমের পরিবারকে জানালে জীবনের তরে শেষ করে ফেলবে। যে কারনে ভিকটিম ভয়ে সমস্ত ঘটনা গোপন রাখত।

চলতি বছরের ২ জানুয়ারি ভিকটিম ফিজা তার পিতার বাসায় আসার কথা ছিল কিন্তু না আসায় তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। পওে বিকাল অনুমান ৪.৫০ ঘটিকার সময় আসামিদের বাড়ির পাশে এক ব্যক্তি ভিকটিমের চাচার মোবাইলে ফোন দিয়ে জানায় যে উক্ত আসামিরা ভিকটিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে তাদের ঘরের মধ্যে আটক করে রেখেছে।

এ সংবাদ পেয়ে ভিকটিমের পরিবারের লোকজন সাড়ে ৫টার দিকে ফতুল্লা থানাধীন পূর্ব লামাপাড়া নয়ামাটি মার্কাস মসজিদ সংলগ্ন ১নং আসামির বাড়িতে গিয়ে দেখতে পায় ১নং আসামীর রুমে জানালার গ্রিলের সাথে ভিকটিম গলায় ওড়না ও গামছা দ্বারা বাধা পা মাটিতে ডান হাতের আঙ্গুলে এবং বাম হাতের বাহু সহ গলায় লালচে দাগসহ মৃত অবস্থায় ঘাড় বেকে ঝুলছে।

পুলিশ সংবাদ পেয়ে আসামিদের বাড়িতে আসে এবং ভিকটিমের লাশের সূরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত শেষে মৃত দেহের ময়না তদন্ত করার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort