নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, আমি মুসলিম হলেও সব ধর্মের প্রতি সম্মান রেখে কাজ করি। আমি মনে করি, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম মানবধর্ম। মানবধর্মের উপরে কোনো ধর্ম নেই।’
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে শহরের জিমখানায় অবস্থিত আলাউদ্দিন খান স্টেডিয়ামে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দানোৎবের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিজে মানবতায় বিশ্বাসী, তাই আমি মনে করি বাংলাদেশ সকলের। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের দল আওয়ামী লীগ ধর্ম নিরপেক্ষতায়র কথা বলে। আমি মনে—প্রাণে বিশ্বাস করি, আমার রক্ত ততটাই লাল যতটা বাকি সকল ধর্মের মানুষের। সুতরাং ভেদাভেদ নেই। ঈশ্বর, আল্লাহ, ভগবান তো ভেদাভেদ করেননি। তাহলে আমরা ভেদাভেদ করার কে? সকল ধর্মের মূলমন্ত্র হলো মানুষকে ভালোবাসা। মানুষের মাঝে ঈশ্বর, আল্লাহ, ভগবান। মানুষের মাঝেই সবকিছু। যে মানুষকে সেবা করবে সে সবকিছু পাবে। আমি সেই করার চেষ্টা করি।’
সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করে মেয়র বলেন, “আমি যেন আপনাদের পাশে থেকে আপনাদের জন্য কাজ করতে পারি, আপনাদের ভালোবাসতে পারি। মানুষকে বাসার মাধ্যমে আমি আমার আল্লাহকে পেতে চাই।
রাউজান বিমলানন্দ কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উপ—সংঘরাজ স্মৃতিধর ড. শীলানন্দ মহাথেরোর সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনতসি, চট্টগ্রামের পশ্চিম গহিরা অংকুরঘোনা জেতবনারাম বিহারের অধ্যক্ষ সুদেশক ভদন্ত সত্যপাল মহাথেরো, ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের উপাধ্যক্ষ ভদন্ত ধর্মানন্দ মহাথেরো, নাসিক ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অশিত বরণ বিশ্বাস, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর আফসানা আফরোজ বিভা প্রমুখ।
আয়োজকদের মধ্যে সুকুমার বড়ুয়া জানান, কঠিন চীবর দানোৎসব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। তিন মাসের বর্ষাবাস (উপোস) শেষে ধর্মীয় এ উৎসব উদযাপন করা হয়। যেখানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি এবং সেই সুতায় চীবর তৈরি করে চীবর ভান্তেদের উদ্দেশ্যে দায়ক—দায়িকারা উৎসর্গ করেন। ভগবান বৌদ্ধের সন্তুষ্টি অর্জন করাই এই কঠিন চীবর দানের মূল উদ্দেশ্য বলে জানান তিনি।