পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হয়রানির অভিযোগ তুলে নারায়ণগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া গোল চত্বর এলাকা অবরোধ করেছে ব্যাটারী চালিত ভ্যান মালিক-শ্রমিক সংহতির নেতৃবৃন্দ ও চালকরা। পরে পুলিশ এসে বুঝিয়ে শুনিতে পরিস্থিতি শান্ত করে। এতে ভ্যান চালক ও নেতৃবৃন্দরা অবরোধ তুলে নেয়।
রোববার (১২ জানুয়ারি) সাড়ে ১১ টা থেকে ১২টা পর্যন্ত আধা ঘন্টা চাষাঢ়া অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, নারায়ণগঞ্জে রেকার বিলের নামে পুলিশ প্রতিদিন ভ্যান চলকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করছে। সিটি কর্পোরেশনের লাইসেন্স থাকলেও সরকারি আদেশ অমান্যের কথা বলে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা জরিমানা আদায় করছে। অনেক ক্ষেত্রে এ টাকা আত্মসাতের জন্য ‘জাল’ রেকার বিল ব্যবহার করছে যা সরকারি কোষাগারে জমা হয় না।
শহরের থান কাপড় এলাকার ভ্যানচালক আব্দুর রাজ্জাক (৩৫) জানান, গত মঙ্গলবারে দুপুরে চাষাঢ়া দিয়ে ভ্যান নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটকায় এবং বলে, পুলিশ লাইন্সে কিছু মালামাল রয়েছে সেগুলো গন্তব্যে পৌছে দিতে হবে। তাদের কথা মত রাজ্জাক পুলিশ লাইন্সে গেলে ভ্যানের লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাকে রেকার বিলের নামে এক হাজার টাকা জরিমানা করে।
গণসংহতি আন্দোলনের জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন বলেন, ভুক্তভোগী ভ্যানচালক আমাদের বিষয়টি জানালে আমরা ফোনে পুলিশের কাছে জানতে চাই কেন তাকে জরিমানা করা হলো। পরবর্তীতে ভ্যানচালককে জরিমানার টাকা ফেরত দেয় পুলিশ। পুলিশ যদি ন্যায় সঙ্গত কারণে জরিমানা করতো এবং তা সরকারি কোষাগারে জমা হতো তাহলে সে টাকা ফেরত দেয় কিভাবে?
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পরে নারায়ণগঞ্জে কোন চাঁদাবাজি চলবে না। যেখানে চাঁদাবাজি হয়েছে সেখানে ছত্র-জনতা অভ্যুত্থান করে চাঁদাবাজি বন্ধ করেছে। এই গণঅভ্যুত্থানের পরেও পুলিশ নানাভাবে চাঁদাবাজি করছে। এসব চলতে দেয়া যায় না। যারা চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির আহম্মেদ বলেন, কেউ যদি অবৈধভাবে কিংবা অন্যায় কাজ করে থাকে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাবো। আর রেকার বিল যদি বৈধভাবে নেয়া হয় তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আরও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, গণসংহতি আন্দোলনের মহানগর কমিটির সমন্বয়কারী নিয়ামুর রশীদ বিপ্লব, জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আলমগীর হোসেন আলম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন জেলা সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা, জেলা ব্যাটারি চালিত ভ্যান মালিক-শ্রমিক সংহতি’র জামাল সর্দার, রনি সর্দার, মান্নান সর্দার, ফরিদ মো. আব্দুর রাজ্জাক, মো. শরীফ, মো. আইয়ুব, মো. রনি প্রমুখ।