‘আমাদের হয় আন্দোলন করতে হবে, নইলে মরতে হবে। এর বাইরে কোনো বিকল্প নেই। আপনারা দেখেছেন, এরা কীভাবে পাখির মত গুলি করে আমাদের হত্যা করে। নারায়ণগঞ্জের একটি ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির, তাকে দীর্ঘদিন জেলে রাখা হয়েছে। তার ছেলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তিনি নিজের ছেলের জানাজা পড়তে পারবেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের ভোটের অধিকারের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানের জন্য নারায়ণগঞ্জ ও রূপগঞ্জের দুই নেতা নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়েছেন। আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’
রবিবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপির ঘোষিত যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফা দাবি ও রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ শীর্ষক আলোচনা সভায়, প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কাল ওবায়দুল কাদের ও হাছান মাহমুদ বিএনপিকে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য ডাক দিয়েছেন। তাদের কথা শুনলে হাসি পায়। আমরা তো গত চৌদ্দ বছর ধরেই নির্বাচনে যেতে চাই। তাদের বলতে চাই, নির্বাচনে যাওয়ার জন্য বিএনপি মুখিয়ে আছে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে আসুন।
আজম খান বলেন, ১০ দফা বাস্তবায়ন করতে পারলেই আমরা ২৭ দফা বাস্তবায়ন করতে পারব। ক্ষমতায় গেলেই আমরা ২৭ দফা অর্থাৎ রাষ্ট্র মেরামত করতে পারব। তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমাদের বিজয় হবে সুনিশ্চিত। মেজর জিয়া বার বার বাংলাদেশের প্রয়োজনে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ঘোষণা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাননি। থিয়েটার রোডে আরামে ঘুমাননি। রণাঙ্গনে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ডা. জোবায়দা রহমানের পরিবারের কোনো সম্পত্তিই বাংলাদেশ আমলে কেনা নয়, এই বৈধ টাকাকে অবৈধ বলে ক্রোক করার চেয়ে নির্মম-নিষ্ঠুরতা আর কিছু নেই।
বিএনপির নেতা আজম খান বলেন, সরকারের অনুগত হয়ে কীভাবে সরকারকে জেতানো যায়, নির্বাচন কমিশন এখন সেই প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তারা বলেছে, এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে যে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব তা গাইবান্ধায় প্রমাণ হয়েছে। আমরা কি ২০১৪ সালে দেখিনি এই সরকার যে বিনা ভোটে ক্ষমতায় এসেছে। তারা বলেছিল, সেটা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন হবে। কিন্তু তারা পুরো জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সংবিধান কি তাদের বলেছে যে, দিনের ভোট রাতে লুট করে ক্ষমতায় যাও। এই সংবিধানের দোহাই বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু, আজহারুল ইসলাম মান্নান, কাজী মনিরুজ্জামান, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গিয়াসউদ্দিন, সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম প্রমুখ।